top of page

সয়া - এগ - চাউমিন


বিকালে সবার জন্য চা তৈরি করতে করতে .....হঠাৎ ভাবলাম , আজ বিকালে সবাইকে সয়া - এগ - চাউমিন তৈরি করে খাওয়াবো | মুখরোচক তো বটেই ,আর বাচ্চা - বুড়ো সবারই ভীষণ ভীষণ পছন্দের এক খাবার | বিকালে আমাদের সবারই একটু খিদে খিদে ও পায় | দুপুরের লাঞ্চের পর ......অনেক পরে রাতের ডিনার | এতটা সময় কিন্তু

খালি পেটে থাকা একদম ঠিক নয় | শরীর সুস্থ রাখতে ,ভালো রাখতে মাঝে একটু কিছু অবশ্য অবশ্যই খাওয়া উচিত | আর সেই জন্যই তো বিকালে ..চায়ের সঙ্গে টা - য়ের ব্যবস্থা তো প্রতি বাড়িতে বাড়িতে দীর্ঘকাল ধরে চলেই আসছে |


সারাদিনে চারবার তো খাবারের ব্যবস্থা করতেই হয় | সকালের পুষ্টিভরা জলখাবার , জমিয়ে দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজন ,বিকালে চায়ের

সঙ্গে অল্প টুকটাক .....মুখরোচক হলে তো কথাই নেই আর রাতে হালকা পুলকা নৈশভোজ | তাই মনে হচ্ছে আজ আমার তৈরি ...মুখরোচক - চটপটা সয়া - এগ - চাউমিন বিকালটা জমিয়ে দেবেই দেবে .......| চাউমিন তৈরির সব প্রয়োজনীয় উপকরণই আমার রান্নাঘরে মজুত রয়েছে | অতএব আর দেরি করবো না .......সবার জন্য ,সবার প্রিয়( আমার ও খুব প্রিয় ) ,মুখরোচক সয়া - এগ - চাউমিন তৈরি করেই ফেলি ........| সবাইকে চা - বিস্কিট খাইয়ে ,নিজে চা খেয়ে ,রান্নাঘরে ঢুকে পরলাম , চাউমিন তৈরির প্রস্তুতিতে .................|


উপকরণ :-


  • চাউমিন - ২ প্যাকেট ( ৫০০ গ্রাম )

  • আলু - ৩-৪টি ,ছোট সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে ,লম্বালম্বি আঙুলের মতো করে কাটা )

  • পেঁয়াজ - ৫০০ গ্রাম ,ছোট ছোট সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে ,লম্বালম্বি একটু বড়ো বড়ো টুকরো করে কাটা )

  • কাঁচালঙ্কা - ৭-৮টা ( ছোট ছোট করে কুচানো )

  • পাকা লঙ্কা ( লাল কাঁচালঙ্কা ) - ৭-৮ টা ( ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে কুচানো )

  • সয়া চাঙ্ক ( নিউট্রিলা ) - ২০০ - ২৫০ গ্রামের মতো

  • ডিম্ - ৭-৮ টি বা প্রয়োজনমতো

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সাদা তেল - প্রয়োজনমতো

  • ( তবে টমেটো সস ,চিলি সস তো থাকবেই ,প্রয়োজনমতো )


পদ্ধতি :-


গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো জল দিলাম | দিলাম খুব অল্প নুন | জল ফুটে উঠতেই সয়া - চাঙ্ক গুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম | কয়েকমিনিট ফুটে সয়া - চাঙ্ক গুলো ফুলে বড়ো - বড়ো আর নরম হয়ে যেতেই , কড়াই থেকে তুলে নিয়ে জল ঝরিয়ে একটা পাত্রে তুলে রাখলাম | এবার কড়াই আবার গ্যাসে চাপলাম | দিলাম প্রয়োজনমতো সাদা তেল |


তেল গরম হয়ে যেতেই আঁচ কমিয়ে ,কড়াইতে দিয়ে দিলাম ,সেদ্ধ সয়া - চাঙ্ক গুলো | আঁচ বাড়িয়ে ভালো করে ভাজতে লাগলাম | সেদ্ধ সয়া - চাঙ্ক ভাজা ভাজা হয়ে আসতেই ,২টো ডিম্ ভেঙে একটা পাত্রে নিলাম | অল্প একটু নুন দিয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে ,কড়াইতে ভাজা সয়া - চাঙ্ক গুলোর মধ্যে ঢেলে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ ভালো করে কয়েকবার নাড়াচাড়া করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করলাম | ডিম্ মাখানো ভাজা সয়া একটা পাত্রে তুলে রাখলাম |


আবার গ্যাসে কড়াই চাপলাম | দিলাম প্রয়োজনমতো জল | আঁচ বাড়িয়ে দিলাম | কাটা আলুর টুকরোগুলো জলে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ,কড়াইতে দিয়ে দিলাম | কড়াইয়ের জল ফুটতে শুরু করলেই ,আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে ,কাটা আলুগুলো মজতে দিলাম | আলু মজে যেতেই জল ঝরিয়ে সেদ্ধ আলুর টুকরোগুলো একটা পাত্রে তুলে রাখলাম | এবার এই কড়াইয়ের মধ্যেই প্রয়োজনমতো আর একটু জল দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে কড়াইতে দিলাম অল্প নুন আর ২ চামচ মতো সাদা তেল |


চাউমিনের প্যাকেট খুলে ,শুকনো চাউমিন গুলো ভেঙে টুকরো টুকরো করে নিলাম | কড়াইয়ের জল টগবগ করে ফুটে উঠতেই ,টুকরো টুকরো করা চাউমিনগুলো কড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে দিলাম | কড়াইতে ২ চামচ তেল দিলাম ,কারণ চাউমিনগুলো একে অপরের গায়ে গায়ে লেগে যাবে না | খুব অল্প সময়েই ,চাউমিনগুলো সেদ্ধ হয়ে গেছে মনে হতেই কড়াই থেকে তুলে একটা ঝাঁঝরি পাত্রে ঢেলে দিলাম জল ঝরানোর জন্য |



এইবার কড়াই ভালো করে পরিষ্কর করে নিয়ে গ্যাসে চাপলাম | দিলাম প্রয়োজনমতো সাদা তেল | তেল গরম হতেই দিলাম পেঁয়াজকুঁচিগুলো | দিলাম কাঁচালঙ্কা ,পাঁকালঙ্কার কুচানো টুকরোগুলো | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভালো করে ভাজতে লাগলাম | কুচনো পেঁয়াজগুলো মজে এসেছে মনে হতেই আঁচ বাড়িয়ে দিলাম সেদ্ধ আলুর টুকরোগুলো , প্রয়োজনমতো নুন ,আর স্বাদ বাড়াতে কয়েকদানা চিনি | ভালো করে নাড়তে নাড়তে দিলাম ভাজা সয়া -চাঙ্কের টুকরোগুলো | কয়েকবার নেড়ে নিয়ে ,আঁচ কমিয়ে দিলাম সেদ্ধ চাউমিন |


কম আঁচে খুন্তি দিয়ে ধীরে ধীরে ভালো করে নেড়েনেড়ে সমস্ত উপকরণগুলো মিশিয়ে দিতে লাগলাম |সমস্ত ভালোভাবে মিশে গেছে মনে হতেই আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কিছুক্ষন কড়াইয়ের চাউমিন নাড়াচাড়া করে ভাজা ভাজা করে নিতে লাগলাম | সুন্দর এক গন্ধে রান্নাঘর ভরে উঠলো | রান্নার স্বাদ চেখে দেখলাম | দারুন ! সত্যিই দারুন !...... দারুন ! আঁচ কমিয়ে দিলাম |


এখন অপর একটি গ্যাসে আর একটি কড়াই চাপলাম | কড়াইতে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | একটা পাত্রে ৫-৬টি ডিম্ ভেঙে নিয়ে অল্প নুন দিয়ে নেড়ে নিলাম | কড়াই গরম হতেই আঁচ বাড়িয়ে ডিমের মিশ্রণ কড়াইতে ঢেলে দিলাম | নেড়ে নেড়ে ডিমের ভুজিয়া তৈরি করে নিলাম | গ্যাস বন্ধ করে দিলাম |এবার তৈরি ডিমের ভুজিয়া চাউমিনের কড়াইতে দিয়ে দিলাম | সমস্ত ভুজিয়া সয়া - চাউমিনের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিলাম | সব তাক তাক হয়েছে মনে হতেই গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | তাহলে ?.......অবশেষে তৈরি করেই ফেললাম সুন্দর টেষ্টের সয়া - এগ - চাউমিন |


খেতে তো দারুন মুখরোচক হয়েইছে ......দেখতেও কিন্তু অসাধারন হয়েছে | বিকালের টেবিল তো আনন্দ আর উত্তেজনায় ভরে আছে | নাঃ...........আর দেরি করাই যাবে না | সবার কাছে পৌঁছে দিলাম প্লেটে প্লেটে খানিকটা করে সয়া - এগ - চাউমিন ....সঙ্গে সস আর কাঁটাচামচ | .........আনন্দের চিৎকার .....হলো খাওয়া শুরু | সবার একটাই কথা .....আহা- হা - হা .....কি দারুন !........কি দারুন !........ সত্যি বড্ডো খুশিতেই যেনো আমাদের আজকের বিকালটা ভরে উঠলো ........| যেনো শুধুই আনন্দ ....আর আনন্দ |


সবাই আনন্দে থাকুন ,ভালো থাকুন .অনেক অনেক সুস্থ থাকুন |

6 views0 comments

Comentários


bottom of page