top of page

সজনেপাতা - বাটা | Sojnepata - Bata



ঋতু পরিবর্তন !! বাংলার এক এক সময়ের এক এক রকম রূপ | ভীষণ সুন্দর | পরবর্তন তো খুব অনুভব আর উপভোগ করার মতোই | কিন্তু ঋতু এক রূপ থেকে অন্য রূপে যাওয়ার সময়েই আবহাওয়ায় নানা পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে | মানুষ জন আক্রান্ত হয়ে পরে নানা রোগ জ্বালা ব্যাধিতে | কিন্তু এই সব রোগ থেকে মুক্তির উপায় ও রয়েছে প্রকৃতির কোলে , নানা মহা ঔষধ হয়ে | প্রকৃতির আশীর্বাদ হয়ে | থ্যাংক ইউ ইউনিভার্সে ! থ্যাংক ইউ |


বসন্ত ঋতু দারুন ঋতু ! কিন্তু একসময় বসন্ত ও শেষ হয়ে আসে গ্রীষ্ম ঋতু | গ্রীষ্ম শেষে বর্ষা ঋতু | আবার বর্ষা শেষে ................| কিন্তু এই প্রতিটি ঋতু পরিবর্তনে , নানা রোগের দাপাদাপি বেড়ে যায় | তারমধ্যে বসন্তে পক্স ,গ্রীষ্মে লু - এর দাবদাহে সানস্ট্রোক , আর বর্ষার ঘোলাজলে ডায়রিয়া প্রভৃতি প্রভৃতি নানা কঠিন কঠিন রোগগুলোকে সব্বাই খুব ভয় পায় | সুস্থ থাকতে নানা প্রতিকারের কথা ও ভাবে |


আর এই প্রতিকার কিন্তু আমাদের চারিদিকেই প্রাকৃতিক নানা উপাদানেই মজুত রয়েছে | যেমন পক্সের মহা ঔষধ বসন্ত ঋতুর শেষে আসা কচি কচি সজনে ফুল , কচি কচি সজনে পাতা , কচি কচি সোজনেডাঁটা |


মাঝে মাঝে সজনের নানা মেনু আমাদের রান্নাঘরে ,...........তো চিকেন পক্স সমেত আরো নানা রোগ , .................যাবে দূরে সরে সরে | আজ আমি একটা দারুন মেনু ভেবে ফেলেছি | সজনেপাতা বাটা | গরম ভাতে প্রথম পাতে অপূর্ব .......অপূর্ব লাগে | মুখ তো স্বাদে ভরে যায়ই যায় | মন ও কিন্তু তৃপ্তিতে ভরে ওঠে | রুচি আনতে তুলনাহীন | বাজারের থলিতে খুব কচি কচি সজনেপাতা দেখেই , পাতা বাটার মেনুটা ও আমার মনে উঁকি দিলো | জমিয়ে রাঁধবো আর সবাইকে খুশিতে ভরিয়েও দেবো |


প্রকৃতিরদান....... এক মহা ঔষধের ভান্ডার এই সজনে গাছ | সুগার , প্রেসার , কোলেস্টরেলের মতো কঠিন রোগ ও নিয়ন্ত্রণে সজনেপাতা , সজনেডাঁটার ভূমিকা অপরিসীম | ভিটামিন এ , ভিটামিন সি তে ভরপুর এই সজনেপাতা | আর তাইতো এন্টি অক্সিডেন্টের আধার | পটাসিয়ামে ঠাসা , ................আর তাই শরীরে



শরীরে তুরন্ত এনার্জি লেবেল বাড়াতেও দারুন দক্ষ | তার উপর লিভার সুস্থ রাখতে , জিভের স্বাদ বাড়াতে কচি কচি সজনেপাতা , কচি কচি সজনেডাঁটা বোধ......করি তুলনাহীন | আসলে এইটুকু ..টুকু কথায় সজনেপাতার অসাধারণ অনেক অনেক গুনের কথা কেমন করে বোঝাবো ? বলতে বলতে শেষ করা একটু কঠিনই হবে | শুধু প্রকৃতির এই অমূল্য আশীর্বাদ আমাদের ঘরে ঘরে মাঝে


মাঝে পৌঁছে গেলেই ,আমরা অবশ্য অবশ্যই অনেকটাই সুস্থ থাকতে পারি | থ্যাংক ইউ ইউনিভার্স ! থ্যাংক ইউ ইউনিভার্স !! থ্যাংক ইউ ইউনিভার্স !!!


সকালের কাজ তো করেই চলেছি | কাজ করার মাঝে মাঝে সজনেপাতা গুলো ছাড়িয়ে নিয়ে জলে ভিজিয়ে দিলাম | নিলাম একটা বড়ো সাইজের রসুন | কোয়া গুলো ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে রাখলাম | ২-3টা কাঁচালঙ্কা ও বোঁটা ছাড়িয়ে জলে ধুয়ে রাখলাম | ২-৩টে শুকনোলঙ্কাও বোঁটা ছাড়িয়ে রাখলাম | নিয়ে রাখলাম ২ চামচ কালোজিরে | এদিকে সকালের অনেক কাজ সেরে ফেললাম | জমিয়ে সবাইকে জলখাবার খাওয়ালাম | এরপর খুব খুশি খুশি মনে ঢুকে পড়লাম আমার প্রিয় মন্দির , আমার রান্নাঘরে | শুরু করবো রান্না ( Sojnepata - Bata) ........


উপকরণ :-


  • কচি কচি সজনেপাতা - ২ আঁটি , সুন্দর করে পাতা ছাড়িয়ে নিয়ে জলে ভেজানো

  • রসুন - বড়ো সাইজের ১টা , কোয়া গুলো খোসা ছাড়িয়ে রাখা

  • কালোজিরে - ২ চামচ

  • কাঁচালঙ্কা - ২-৩টা

  • শুকনোলঙ্কা - ২-৩টা

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - স্বাদ বাড়াতে কয়েকদানা

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


রান্নাঘরে এসে , প্রথমেই মিক্সি নিলাম | মিক্সিতে রাখলাম কালোজিরে , কাঁচালঙ্কা , শুকনোলঙ্কা আর রসুনের কোয়াগুলো | নিলাম একচিমটি নুন আর কয়েকদানা চিনি | মিহি করে বেটে নিলাম | সেই বাটা সমেত মিক্সির মধ্যেই খানিকটা জল ঝরানো কচি কচি সজনেপাতা নিয়ে নিলাম | আবার মিহি করে বেটে ফেললাম | বাটা একটা পাত্রে তুলে রাখলাম | এবার মিক্সিতে বাকি জল ঝরানো সজনেপাতা আর প্রয়োজনমতো নুন দিয়ে আরো একবার পাতা বেটে ফেললাম | বাটা পাত্রের মধ্যেই ঢেলে রাখলাম |



গ্যাসে কড়াই চাপলাম | দিলাম প্রয়োজনমতো সর্ষের তেল | রান্নাটা অবশ্যই সর্ষের তেলেই হবে | না হলে চটপটা স্বাদ কিন্তু আসবে না | তেল ভালোমতো গরম হয়ে উঠতেই , আঁচ কমিয়ে কড়াইতে দিয়ে দিলাম পাত্রে বেটে রাখা মিশ্রণটি | মিশ্রনে আছে কচি কচি সজনেপাতা ,


কালোজিরে , কাঁচালঙ্কা , শুকনোলঙ্কা , নুন আর কয়েকদানা চিনি | আঁচ বাড়িয়ে মিশ্রণটা খুব ভালো করে নাড়তে লাগলাম | মাঝে মাঝে আঁচ কমিয়ে ,আবার আঁচ বাড়িয়ে দিতে লাগলাম |


মিশ্রণটা থেকে খুব লোভনীয় এক ভাজা ভাজা গন্ধ বেরোতে শুরু করলেই , রান্নাটা একবার চট করে চেখে নিলাম | বাঃ ! বাঃ !! খুব সুন্দর হয়েছে তো | মনে মনে ভেবেই নিলাম , আজ অন্য কিছু নয় , আমি এই বাটা দিয়েই দুপুরের লাঞ্চ সারব | মনের কথা মনেই থাকলো , কাউকেই জানালাম না |



গ্যাস বন্ধ করে রান্না দুপুরের জন্য তুলে রাখলাম |

খুব খুশিতে আমাদের দুপুরের খাওয়া শুরু হলো | স্বাদে মন প্রাণ মাখামাখি | স্বাদের আনন্দে সবার মুখ যেনো আনন্দে ঝলমল ঝলমল করছে | খুশির আওয়াজ উঠলো .......কি বানিয়েছো গো ......ফাটা,,,,,,,,,,,,,ফা........টি !! আর একটু দাও .....আর এক........টু !! আর এসব দেখে টেখে তো আমি ও আনন্দে মাখামাখি | রান্না খেয়ে সবাই খুশি হলে , মনে যে কি আনন্দ হয় , সেটা যারা রান্নাঘরের দায়িত্বে , তারা সব্বাই জানে |


খুশি খুশি থাকুন | জমিয়ে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করুন | আনন্দ করুন | সুস্থ থাকুন |

3 views0 comments

Comments


bottom of page