কাল রাতে ঘুম আসার আগে পর্যন্ত এক দমবন্ধ ভ্যাপসা গরম। ঘুম কিছুতেই আসতেই চায় না। তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি। ভোরে ঘুম ভাঙতেই একেবারে অবাক হয়ে গেলাম। সুন্দর এক
ঠান্ডা ঠান্ডা আরামদায়ক ওয়েদার। একটা রাতের এদিক ওদকেই যেন ম্যাজিক। খুব সুন্দর হাওয়া বইছে। সত্যি প্রকৃতি কি অপূর্ব না! সে চাইলেই ক্ষনে ক্ষনে পরবর্তন। আর ক্ষনে ক্ষনে নানা ম্যাজিক !
একে একে বাড়ির সবার ঘুম ভাঙলো। সবার মুখই স্বস্তিতে আর আনন্দে ভরপুর। বাঃ ! খুব ভালো লাগছে। সবার নিজের নিজের কাজ শুরু হয়ে গেলো। বাজার আসতেই ,প্রথমেই মাছের থলি থেকে বার করলাম খুব টাটকা ১কিলো মতো লোটে মাছ। অন্য মাছ সবজি গুছাতে গুছাতে ভাবলাম, আজ লোটে মাছটা তো খুবই টাটকা। যদি সবার জন্য লোটে মাছের কিছু মুখরোচক তৈরি করি , তবে মনে হয় এই সুন্দর ওয়েদারে সবার মন আর মুখ দুটোই খুশি তে আর আনন্দে ভরে উঠবেই উঠবে।
ব্যাস চিন্তা শেষ তো কাজ শুরু। আজ বিকালে চায়ের টেবিল জমাবো লোটে মাছের টেস্টি টেস্টি পকোড়া দিয়ে। লোটে মাছগুলোকে টুকরো টুকরো করে নিয়ে ভালো করে ধুয়ে একটা পাত্রের মধ্যে রেখে দিলাম ১/২ কাপ মতো ভিনিগার আর একটু নুন। ভালো করে নেড়েচেড়ে নিলাম। এবার এই ম্যারিনেট করা লোটে মাছ রাখা পাত্রটি মুখ বন্ধ করে ফ্রিজে তুলে রাখলাম। বিকালে চা খাওয়ার আগে বার করবো আর ভেজে তুলবো।
আমাদের এই প্রতিদিনের জীবনে মূলত ৪ বেলার খাওয়া দাওয়া। প্রত্যেক বেলার গুরুত্বই অসীম।
তবে ছুটির দিনে দুপুরের হালকা ঘুমের পর বিকালে চায়ের টেবিলে একটু টেস্টি টেস্টি মুখরোচক খাবারের ইচ্ছা তো সব্বারই হয় । তাই আজকে আমার এই চেষ্টা , বিকালে সবার এ ..কটু ইচ্ছা পূরণ করার .......।
উপকরণ :-
লোটেমাছ - ১ কিলো মতো ( টুকরো টুকরো করে কাটা )
ভিনিগার - ১/২ কাপ মতো
ডিম্ - ২টো
কর্ণফ্লাওয়ার - ২-৩ চামচ
পেঁয়াজ - ১টি ( মিহি করে বাটা )
রসুন - ১টি ছোট সাইজের ( মিহি করে বাটা )
আদা - ছোট্ট এক টুকরো ( মিহি করে বাটা )
কাঁচালঙ্কা - ৮-১০ টা ( মিহি করে বাটা )
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
আর সঙ্গে অবশ্যই টমেটো সস ,চিলি সস বা টেস্টি টেস্টি কাসুন্দি ( যার যেমন পছন্দ )
পদ্ধতি :-
দুপুরে জমিয়ে খাওয়া দাওয়ার পর সবাই বিশ্রামে মগ্ন। আমি একটু বিশ্রাম নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকেই পড়লাম ,লোটে মাছের পকোড়া তৈরি করতে। ফ্রিজ থেকে ম্যারিনেট করা লোটে মাছের পাত্র টা বার
করে রাখলাম , নরম্যাল তাপমাত্রায় আনার জন্য। এদিকে একটা ছড়ানো পাত্রের মধ্যে নিলাম ৩-৪ চামচ কর্ণফ্লাওয়ার ,ভেঙে দিলাম ২টো ডিম্। কর্ণফ্লাওয়ার আর ভাঙা ডিম্ ফেটিয়ে ফেটিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিলাম। এবার মিশ্রনে দিলাম পেঁয়াজবাটা ,আদাবাটা ,রসুনবাটা ,কাঁচালঙ্কা বাটা ,নুন ,কয়েকদানা চিনি।
সব খুব ভালো করে মেশাতে লাগলাম। মিশ্রনের স্বাদ চেখে নিলাম। ভিনিগারে ভেজানো কয়েকটা লোটমাছের টুকরো মিশ্রনে ভিজিয়ে দিলাম। গ্যাসে কড়াই চাপলাম। পকোড়া বাজার জন্য তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে মিশ্রনে ভেজানো লোটমাছের টুকরোগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম। আবার কয়েকটা লোটমাছের টুকরো মিশ্রনে ডুবিয়ে দিলাম। এদিকে লোটমাছের পকোড়াগুলো আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভেজা তুলে রাখলাম। কড়াইতে ছেড়ে দিলাম আরো এক লট। এইভাবে সব পকোড়া ভেজে ফেললাম। পকোড়া খেতে তো অসাধারণ হয়েছে ; তবে দেখতে ও কিন্তু দারুন হয়েছে।
এদিকে লোটে - পকোড়ার ম ..ম ..গন্ধে..... সবার দুপুরের আয়েশ ঘুম কাটতে বেশি দেরি হলো না। আমরা বাড়ির সবাই চায়ের টেবিলে। শুধু আনন্দ ...আর ..আনন্দ। টেস্টি টেস্টি লোটে - মাছের পকোড়া আর গরম গরম চায়ে যেন আনন্দের বৃষ্টি।
ভালো খেতে হবে ,আনন্দ করে খেতে হবে। মন সুস্থ তো শরীর ও সুস্থ।এখন সব্বাই সুস্থ থাকুন ,ভালো থাকুন ,আনন্দে থাকুন।
Comments