top of page

ভোলা - মাছের - সর্ষে - ঝাল


মাছ !!! বাঙালির অতীব প্রিয়। কথাতেই তো আছে ...মাছে -ভাতে বাঙালি। এই বাংলার পুকুরে ,নদীতে কত রকমের মাছ। আমরা ,বাঙালিরা প্রায় সব মাছের সঙ্গেই পরিচয় করেই ফেলেছি। বাঙালি হয়ে মাছ চিনবো না,এ আবার কেমন কথা ? আবার রন্ধনশালায় কিভাবে রান্না করলে তাদের খেতে ভালো লাগবে , যুৎসই হবে ,সেটাও বাঙালি আবিষ্কার করে ফেলেছে। এক এক রকমের মাছ এক এক রকমের রান্নায় সুন্দর ,টেস্টি টেস্টি।


প্রত্যেক ধরণের মাছই নানা রকমের পুষ্টি গুনে ভরা। তাও মোটামুটি আমরা জেনেই ফেলেছি। তাই অনেক রান্নাঘরে একেক দিন একেক রকম মাছের মেনু। আর ছোট মাছ তো হাড়ের গঠনে,চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ,শরীরে শক্তি যোগাতে ভীষণ কার্যকরী। তাই ছোটদের তো অবশ্যই আর বড়োদেরও মাঝে মাঝেই ছোট মাছ খাওয়া উচিত।



আজ আমার রান্নাঘরেও ছোট মাছ .....ভোলা মাছ।খুব মিষ্টি মাছ। কাঁটা খুব কম। বলতে গেলে একটাই প্রধান কাঁটা। ছোট বাচ্চাদের খেতে বেশ সুবিধাই হয়। বড়োদের তো বলার কিছুই নেই ,তারা এমনিতেই এই সব বিষয়ে খুবই এক্সপার্ট। তবে ভোলা মাছের ছোট্ট মাথাতে কিন্তু দু টি ছোট্ট ছোট্ট পাথর থাকে। ভোলা মাছের মাথাটা খাওয়ার সময় সেগুলো বাদ দিতে হবে। বাড়ির সবাইকে একবার জানিয়ে দিলাম। ওমা !!! সবাই একসঙ্গে বলে উঠলো আমরা জানি জানি ,আগে তো খেয়েইছি । বললাম বাঃ ! তাহলে তো খুবই ভালো কথা।

দিন কয়েক হলো আবহাওয়াটা বেশ আরামদায়ক। রোদের তাপ কম কম ,মাঝে মাঝে যদিও গুমোট গুমোট লাগছে ,কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি হতেই ,আবার কিছুটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব ।গরম অনেক কম। তাই ভাবলাম সর্ষে দিয়ে কষিয়ে ভোলমাছ রাঁধবো। গরম গরম ভাতের সঙ্গে মেখে খেলে ,মুখ স্বাদে ভরে যাবে। কি ভীষণ টেস্টি টেস্টি ,তা বোধহয় না খেলে বোঝানো যাবে না। যাইহোক আর দেরি না করে রান্নাঘরে ঢুকে গোটা সর্ষে জলে ভিজিয়ে দিলাম।


উপকরণ :-


  • ভোলামাছ - ৬০০ গ্রাম ( ৬ পিস, মাছের খোসা ছাড়িয়ে কেটেকুটে পরিষ্কার করা )

  • গোটা সর্ষে - ২৫-৩০ গ্রাম ( জলে ভেজানো )

  • কাঁচালঙ্কা - ৩-৪টি অর্ধেক করে চেরা ,৪-৫টি গোটা

  • হলুদ - ২-৩ চামচ

  • লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১-২ চামচ ( সব সময়ে বলে রাখি ,ঝাল নিজের পছন্দ মতো )

  • পাঁচফোড়ন - ১-১.৫ চামচ

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - কয়েকদানা ( অবশ্যই রান্নায় রং আর স্বাদের জন্য )

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-



জলে ভেজা সর্ষে মিহি করে বেটে রাখলাম। মাছ বার বার জলে ধুয়ে নিয়ে নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে মাছ ভাজার মতো তেল দিলাম। তেল ভালো মতো গরম হতেই আঁচ কমিয়ে ২-৩টি মাছ কড়াইতে দিলাম। আঁচ বাড়িয়ে, কমিয়ে মাছ কড়া করে ভেজে তুলে নিলাম। এই ভাবে সব মাছ ভাজা হয়ে গেলে ,কড়াইতে ওই তেলের মধ্যেই প্রয়োজনমতো আর একটু তেল দিলাম। আঁচ কমিয়ে দিলাম পাঁচফোড়ন ,অর্ধেক করে কাটা কাঁচালঙ্কা ,মিহি করে বাটা সর্ষে ,কয়েকদানা চিনি ,হলুদ ,নুন ,প্রয়োজনমতো লাল লঙ্কাগুঁড়ো।



কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কষতে লাগলাম। মশলার জল শুকিয়ে তেল বার হতে শুরু হলেই ,প্রয়োজনমতো জল দিয়ে আঁচ বাড়িয়ে দিলাম। সর্ষে র ঝোল টগবগ করে ফুটে উঠতেই ,ভাজা মাছগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম। বেশি আঁচে কিছুক্ষন রান্না হওয়ার পর রসা প্রায় মাখো মাখো হয়ে এলো। দেখে নিলাম রান্নার স্বাদ। একদম তাক তাক ......মনে হতেই কড়াইতে দিলাম কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা। মাছের গায়ে গায়ে রসা হয়ে গেলেই গ্যাস বন্ধ করে দিলাম।


দুপুরে খাবার টেবিলে সবার প্রচুর প্রচুর প্রশংসা। অনেকদিন বাদে এই মাছের রান্নাটা ভীষণ ভালো খেলাম। বড়োই অপূর্ব ! আর ভীষণ স্বাদে ভরা। মন ভরে গেলো গো .. ...সত্যি সত্যিই মন ভরে গেলো ।সবার কথায়, আমার মনটাও আনন্দে ভরে গেলো।


খুব খুব আনন্দে থাকুন। আনন্দে থাকলে ,ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন।

32 views0 comments

Comments


bottom of page