উফঃ !!! বড়োই গরম ! আর যেনো পারা যায় না | খিদে পেলেও .....খেতে ইচ্ছে নেই | শুধুই তেষ্টা !! জল তেষ্টা!! বার বার জল খেতে ইচ্ছে করছে ......খেতেও ভালো লাগছে ........| কিন্তু তা বললে তো হবে না | প্রতিজনের প্রতিদিনের নানা কাজ করতে গেলে ....শরীরকে তো সুস্থ রাখতেই হবে | আর শরীর সুস্থ রাখতে খাওয়া দাওয়া তো সারতেই হবে | কিন্তু খাওয়া তে বড়োই অরুচি | এই তীব্র গরমে মশলাদার খাবার কিন্তু একেবারেই না পসন্দ | ছোট থেকে বড়ো সবারই একটু হালকা ধরণের খাবারই পছন্দ | আর সেই হালকা খাবার যদি একটু মুখরোচক হয় , তবে তো সোনায় - সোহাগা | উপভোগ করে খাওয়া যেতেই পারে ......................!
আজ মধ্যাহ্ন ভোজের প্রথম পাতের জন্য রেঁধে ফেলেছি , পাতলা করে মুসুরির ডাল | সঙ্গে রেখেছি গন্ধরাজের টুকরো | এই গরমে ভাতের পাতে একটুকরো লেবু বড়োই লোভনীয় আর শান্তির ও | আর ভেবেছি .......ভেজে দেবো মুখরোচক করে ঝুরি - আলু - ভাজা ( jhuri - aloo - bhaja ) | আলু ভাজা খেতে ভালো বসে না , এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া
কিন্তু সত্যি সত্যিই বড়ো মুশকিল | যে কোনো ভাবেই আলু ভাজা হোক না কেনো ......ছোট থেকে বড়ো সবার দৃষ্টি কিন্তু সে দিকেই থাকে | মোটকথা আলুভাজা আমাদের সব্বার প্রিয় |
তাহলে শুরু করেই ফেলি আমার মুখরোচক ঝুরি - আলু - ভাজা | প্রথমে ৪টে মাঝারি সাইজের আলু নিয়ে জলে ভালো করে ধুয়ে রাখলাম | এবার আলুগুলোর খোসা ছাড়িয়ে ফেললাম | একটা পাত্রের উপর আলুগুলো ঝির ঝির করে কুরে রাখলাম | এবার আর একটা জলভরা পাত্রে এক চিমটে নুন দিয়ে দিলাম | এই পাত্রের মধ্যে কুড়ানো আলুগুলো ভিজিয়ে দিলাম | নিলাম ১/২ কাপ মতো খোসাসুদ্ধ বাদাম | ৮-১০ টা ছোট সাইজের পাঁপড় | ২টো কাঁচালঙ্কা | ভাজার জন্য প্রয়োজনমতো তেল | নুন আর স্বাদ বাড়াতে কয়েকদানা চিনি |
উপকরণ :-
আলু - ৪টি মাঝারি সাইজের ( কুরে নিয়ে নুন দেওয়া জলে ভিজিয়ে রাখা )
বাদাম - খোসাসুদ্ধ ,১/২ কাপ মতো
পাঁপড় - ছোট সাইজের , ৮ - ১০ টা মতো
কাঁচালঙ্কা - ২টো , স্বাদে একটু চমক আনতে , প্রত্যেকটা কাঁচালঙ্কা ২-৩ টুকরোতে ভেঙে নেওয়া
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - কয়েকদানা স্বাদ বাড়ানোর জন্য
তেল - ভাজার প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
রান্না শুরু ............মুখরোচক আর সবার প্রিয় '' ঝুরি - আলু - ভাজা '' ( jhuri - aloo - bhaja ) | প্রথমে ভেজানো আলু জল ঝরিয়ে নিলাম |গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো সাদা তেল দিলাম | অন্য তেলেও ভাজতে পারেন | তেল ভালোমতো গরম হয়ে উঠলে আঁচ কমিয়ে অল্প আলু ,এক টুকরো কাঁচালঙ্কা কুচি ,আর ২-১ দানা চিনি স্বাদ বাড়াতেই দিয়ে দিলাম | বাড়ানো আঁচে কুড়কুড়ে করে আলু ভেজে তুলে নিলাম | এই ভাবেই সব আলু ভেজে ফেললাম |
এইবার আঁচ কমিয়ে ওই তেলেই বাদাম গুলো দিয়েই ,একটু নাড়াচাড়া করেই তুলে নিলাম | বাকি রইলো পাঁপড়গুলো | সেগুলো ও কড়াইয়ের বাকি তেলের মধ্যে আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে একটা একটা করে ভেজে তুলে রাখলাম | এবার আলু ভাজার পাত্রের মধ্যে নিয়ে নিলাম বাদাম ভাজা আর পাঁপড় ভাজা গুলো | ভাজা পাঁপড় গুলো হাতদিয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো করে নিয়ে আলুর মধ্যে মিশিয়ে দিলাম |
ভাজা বাদাম ,ভাজা আলু আর ভাজা গুঁড়ো পাঁপড়গুলো ভালো করে মিশিয়ে দিলাম | ভাজা কাঁচালংকার টুকরোগুলো এই মিক্সচারের মধ্যেই মিশে ছিল |
মিক্সচার কিন্তু দেখতে খুব লোভনীয় হয়েছিল | মনে হচ্ছিলো একটু খেয়ে দেখিতো .....খেয়েই দেখি ......| একটু মুখে দিয়ে ও দিলাম | বাঃ ! বাঃ !! দারুন লাগছে তো !!! খুব মুখরোচক হয়েছে , একেবারে অপূর্ব স্বাদের | এখন শুধু খাবার টেবিলের অপেক্ষায় রইলাম |
খাবার টেবিলে ......আমরা সবাই | প্রথম পাতে সবাইকে দিলাম ......গরম গরম ভাত , গরম গরম ডাল , একটুকরো গন্ধরাজ লেবু আর ?......আর আমার ভাজা মুখরোচক ঝুরি - আলু - ভাজা (jhuri - aloo - bhaja) |
ওমা !! কারো মুখে তো কোনো কথাই নেই .....শুধু কপ - কপা - কপ খাওয়ার শব্দ | ...........কিন্তু একী হলো !! সবাই তো বার বার আলুভাজাই চেয়ে চলেছে ................চেয়েই চলেছে .!!! তবে আমি কিন্তু আনন্দে একেবারে ডগমগ .. .......ঝুরি - আলু - ভাজা যে সবারই পছন্দ হয়েছে ..... সবাই খুব খুব খুশি ,খাওয়ার টেবিলে শান্তি আর স্বস্তির হাওয়া বয়ে চলা থেকেই বুঝতে পারছি ........ভালো লাগছে ....
আপনারা ও ভালো ভালো খান ,ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন আর অনেক অনেক আনন্দে থাকুন |
Komentar