top of page
Writer's pictureKaveri Nandi

গাজরের - হালুয়া | Gajar Ka Halwa | Gajorer Halua



আজ ধনতেরাস !! বিশেষ একটি দিন | ঘরে ঘরে উৎসব | ধনতেরাস !!! সুখ - শান্তি-সুস্থতার - ধন বৃষ্টি !!! সারা বছর সংসার যাতে শান্তি , স্বস্তি ,আনন্দ আর সুস্থথায় ভরে থাকে , সেই প্রাথর্ণাতেই আজকের দিনে নানা পূজা অর্চনা | সংসারের প্রয়োজনে নতুন কোনো কিছু কেনার মধ্যে দিয়ে মহালক্ষ্মীর বরণ | শুরু হয় শক্তি আরাধনার সূচনা | শুরু হয় আলোর পুজো | চারিদিকে শুধুই আলোর রোশনাই আর আলোর রোশনাই | প্রত্যেক মনে মনে ও সব অন্ধকার দূর হয়ে শুধু আলোর ঝলকানি | মন ভালো করা এক দারুন উৎসব | মন চায় , এই আলোর আনন্দ যেন এক বছর থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে পরের বছরগুলোতেও পৌঁছে যায় , কখনো.......ই যেন থেমে না যায় | ( জানি ...... থেমে যাবেও না ) |


ঘুম ভাঙতেই , আমিও আজ খুব খুব খুশি | বাড়ির সবাই আজ আমরা বাড়িতে | সবাই মিলে শক্তির পুজো করবো | আলোর রোশনাইতে ঘর সাজিয়ে তুলবো | জমিয়ে ভালো ভালো খাওয়া দাওয়া করবো | আর আমি কালই ভেবে রেখেছিলাম , অনেকদিন বাদে আজ একটু গাজরের হালুয়া রাঁধবো | জলখাবারে করবো .....গরম গরম লুচি , সাদা আলুর চচ্চড়ি আর গাজরের হালুয়া | গাজরের হালুয়া খেতে আমরা সবাই যে একটু বেশিই ভালোবাসি | তার উপর আজ রাঁধছি , অনেক দিন বাদে | করবো করবো করে , আর করে ওঠাই হয়না |


যাহোক সকাল সকাল উঠে চা এর পাট শেষ করে নিয়েই , ঘরের অনেক কাজ সেরে ফেললাম | এবার শুরু করলাম জলখাবার তৈরির কাজ | গাজরের হালুয়া তৈরির সব উপকরণ গুছিয়ে নিয়েছি | প্রথমে গাজরের হালুয়াই তৈরি করলাম (Gajar Ka Halwa | Gajorer Halua) |




উপকরণ :-


  • গাজর - ১ কেজি

  • দুধ - ১ লিটার

  • মিল্কমেড - ১টা কোটো

  • কিসমিস - ১০০ গ্রাম

  • আধ ভাঙা কাজু - ১০০ গ্রাম

  • ছোট এলাচ - ৬-৭টা

  • চিনি - ১ কাপ মতো , খানিকটা নিজের নিজের পছন্দমতো

  • ঘি - প্রয়োজনমতো




পদ্ধতি :-


গাজর বড়োই উপকারী সুন্দর আকর্ষনীয় রঙে ভরপুর এক দারুন সবজি | ভিটামিন এ সমৃদ্ধ , এন্টি - অক্সিডেন্টের এক অসাধারণ আধার | আমাদের প্রত্যেকেরই , শরীর সুস্থ - সবল - সুন্দর রাখতে , পাতে মাঝে মাঝে এই রঙিন সবজিকে রাখতেই হবে | গাজরের প্রাকৃতিক রংটি আমাদের শরীরের জন্য খুব খুবই প্রয়োজন | আর তাইতো নানা ভালো ভালো কারণে গাজর আমাদের দারুন একটি বন্ধু সবজি | অবশ্যই ছোট - বড়ো সবার জন্য |


গাজরের হালুয়া খুব সহজ একটি রান্না , কিন্তু তৈরি হলেই , খেতে অসাধারণ | একবার খেলে সাধ মেটে না , মন ভরে না | মন বলে , জিভ বলে বার বার খাবো ...বার বার খাবো | যাহোক রান্না ঘরে ঢুকে প্রথমেই ১ লিটার দুধ , একটা পাত্রে ঢেলে নিয়ে গ্যাসে চাপিয়ে দিলাম | ৬-৭টা ছোট এলাচ আর ১ কাপ চিনি থেকে অল্প একটু চিনি মিক্সিতে নিয়ে , মিহি করে গুঁড়ো করে , দুধের পাত্রে ঢেলে দিলাম | বেশি আঁচে দুধ কে ফুটিয়ে নিয়ে আঁচ কমিয়ে দিলাম | দুধকে খানিকটা ঘন ঘন করে ফেলবো |





এবার গাজরগুলো ধুয়ে মুছে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিলাম | কুরনিতে ভালো করে কুড়িয়ে নিলাম | এরপর অপর একটি গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে , খানিকটা ঘি দিলাম | ঘি গরম হয়ে উঠলে , আঁচ কমিয়ে ,একে একে কিসমিস আর কাজু ঘি তে ভেজে তুলে রাখলাম | এরপর ওই ঘি এর মধ্যেই , প্রয়োজনমতো আর একটু ঘি দিয়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে ঘি গরম হয়ে উঠতেই , কুড়ানো গাজরগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম | খুন্তি দিয়ে খুব ভালো করে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম |


গাজরের মধ্যে যে জল থাকে , বেশি আঁচে ঘি এর মধ্যে নেড়ে নেড়ে সেই জল শুকিয়ে নিতে লাগলাম | গাজর মজে ভাজা ভাজা হয়ে এসেছে মনে হতেই আঁচ কমিয়ে দিলাম | দিয়ে দিলাম ভাজা কিশমিশ আর কাজু | আঁচ বাড়িয়ে দু - একবার নেড়েচেড়ে আবার আঁচ কমিয়ে দিলাম | এদিকে অন্য গ্যাসে বসানো দুধ ও বেশ ঘন ঘন হয়ে গেছে | গ্যাস বন্ধ করে , সেই ঘন ঘন দুধ , ভাজা গাজরের কড়াইতে ঢেলে দিলাম |



আঁচ বাড়িয়ে দুধ সমেত গাজর কয়েকবার নেড়ে নিয়ে , আবার আঁচ কমিয়ে দুধের মধ্যে ভাজা গাজর কিছুক্ষন মজতে দিলাম | দিলাম রেখে দেওয়া বাকি চিনিটা | আবার কম আঁচে একটু নাড়াচাড়া | আবার গাজর খানিক্ষন দুধ চিনিতে মজতে লাগলো | অসম্ভব সুন্দর এক গন্ধে মন ভরে ভরে উঠছিলো | ঘি তে গাজর ভাজা শুরু হতেই , সুন্দর গন্ধের ও শুরু | এখন তো ঘ্রানের আবেশে রান্নাঘর .....না না শুধু রান্নাঘর নয় , আমার সারা বাড়িটাই মো মো করছে | খুশি যেন বাড়ির আনাচে কানাচে উপচে পড়ছে |


আমি তো খুব খুশি | গাজর দুধের মধ্যে সব কিছু সমেত সুন্দর ভাবে মজে গিয়েছে মনে হতেই , আঁচ বাড়িয়ে , ১ কোটো মিল্কমেড গাজরের কড়াইয়ের মধ্যে ঢেলে দিলাম | খুব ভালো করে সমস্ত নেড়ে নিতে লাগলাম | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়তে নাড়তে যখনই বুঝতে পারলাম , দুধ আর গাজর খুব ভালো ভাবে একে ওপরের সঙ্গে মিশে গিয়েছে , তখনই গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | একটু চেখে নিলাম | আহা হা হা !! কি অপূর্ব স্বাদের হয়েছে গো !!! মন ভালো করা এক মেনু !!! যাহোক কড়াইয়ের মধ্যেই তৈরি গাজরের হালুয়াকে খানিকক্ষণ ঠান্ডা হতে দিলাম (Gajar Ka Halwa | Gajorer Halua) | তারপর একটা পাত্রে ঢেলে রাখলাম |


গাজরের হালুয়া ঠান্ডা হতে হতেই , আমার অন্য মেনুগুলো ও তৈরি করে ফেললাম | তারপর জলখাবার কেমন জমে উঠেছিলো , তা কি আর বলে বোঝাতে হবে ? .... এতক্ষনে মনে হচ্ছে , সবাই খুব ভালো ভাবেই বুঝে ফেলেছে যে , আজ ধনতেরাসের দিন থেকেই আমার বাড়িতে শুরু হয়ে গেলো ...'' সুখবৃষ্টি '' |


ভালো খান | খুব ভালো থাকুন | অনেক অনেক সুস্থ থাকুন | আর খুব বেশি বেশি আনন্দে থাকুন |

Comments


bottom of page