top of page

কাঁচকলা - ঢেঁড়সের - ঝোল (Bhindi - Kanchakola - Curry)



প্রচন্ড গরম !!! সবাই আমরা হাঁসফাঁস হাঁসফাঁস করছি | ঘরে ও টেকা যাচ্ছে না , বাইরেও তাই | তার মধ্যে আমাদের এক প্রধান কাজ হলো , প্রতিদিনের খাওয়া- দাওয়ার কাজটি | খেতেই হবে , না হলে শরীর চলবে না | আর শরীর না চললে প্রতিদিনের কাজ সারবো কি ভাবে ?? তা....ই খেতে হবে | আর এই গরমে খাওয়া - দাওয়া একটু হালকা হলেই বোধহয় জিভ ও আরাম পায় শরীর ও আরাম পায় | তাই মাঝে মধ্যে হালকা - পুলকা খাবার দাবার আমাদের সবার জন্যই খুব খুব ভালো |



এই সব নানা কথার খেয়াল রেখেই আমিও আজ উত্তপ্ত দুপুরের মেনুতে রেখেছি , খুব হালকা অথচ মুখরোচক একটি পদ | টেস্টি টেস্টি কাঁচকলা - ঢেঁড়সের ঝোল !! ভাবনায় পরে গেলেন ? না না ভাবনার কিছ্ছু নেই | দারুন স্বাদের এক ঝোল | যা গরমে খুবই আদর্শ খাবার | কাঁচকলা আর ঢেঁড়স খাদ্যগুন , ঔষধীগুনে ভরপুর দুটি সুন্দর সবজি | মাঝে মাঝে আমাদের পাতে থাকলে , আমাদেরই উপকার | ভীষণ ভীষণ উপকার | তাছাড়া চারিদিকে তো একটাই কথা , ভালো থাকতে ...সুস্থ থাকতে ..পাতে রাখো সবজি ...মানে সবজি পদ |





আজ রান্নার সব উপকরণই রান্নাঘরে উপস্থিত , মানে আজকের বাজার কমপ্লিট | মেনুও ঠিক করেই ফেলেছি | সকালের সব কাজ সারা তো আমার রান্নাও শুরু | তাই হলো ....সব কাজকর্ম সেরে ফেলে শুরু করলাম দুপুরের রান্নাবান্না | প্রথম মেনু ...আমার পছন্দের কাঁচকলা - ঢেঁড়সের ঝোল | ঢেঁড়সগুলো ভালো করে বার বার ধুয়ে নিয়ে গোটা গোটা কেটে রাখলাম |



একটা পাত্রে খানিকটা জল নিলাম | জলের মধ্যে দিয়ে দিলাম ২-৩ চিমটে হলুদ | ৪টে কাঁচকলা ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে প্রত্যেকটা মাঝামাঝি দু টুকরো করে নিলাম | এবার টুকরো গুলো আবার লম্বালম্বি দুটুকরো করে কেটে ফেললাম | কাটা কাঁচকলার টুকরোগুলো হলুদ জলের পাত্রের মধ্যে চুবিয়ে রাখলাম | এতে কাঁচকলার কষা ভাবটা কেটে যায় , আর কাঁচকলা কালো হয়ে যায় না |


এইবার নিলাম ৩টি মাঝারি সাইজের আলু | আলুগুলো ও ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে লম্বালম্বি ৪ টুকরো করে কেটে আর একটা পাত্রে জলে ভিজিয়ে রাখলাম | ঝোলটা তৈরি হবে কাঁচকলা - ঢেঁড়স - আলু দিয়ে (Bhindi - Kanchakola - Curry) | গরম গরম ভাতে যেমন মুখরোচক , তেমনি এই গরম গরম ঝোল গরম গরম রুটি দিয়েও অসাধারণ | স্বাদে মুখ ভরে যায় | যাহোক এদিকের, মানে রান্না শুরুর অনেকটা কাজ এগিয়ে ফেলেছি | এবার শুধু করবো রান্না শুরু ............................................


উপকরণ :-


  • কাঁচকলা - কচি কচি ৪টে

  • ঢেঁড়শ - ৫০০গ্রাম , কচি কচি

  • আলু - ৩টি , মাঝারি সাইজের

  • গোটা কাঁচালঙ্কা - ২-৩টে

  • গোটা শুকনোলঙ্কা - ২-৩টে , একটু করে ফাটানো

  • পাঁচফোড়ন - ১ চামচ

  • হলুদগুঁড়ো - ১ - ১.৫ চামচ

  • জিরেগুঁড়ো - ২ চামচ

  • ধনেগুঁড়ো - ১ চামচ

  • লাল লঙ্কারগুঁড়ো - ১- ১.৫ চামচ , ঝাল নিজের নিজের পছন্দমতো

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


শুরু করেছি রান্না | গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল ভালো মতো গরম হয়ে উঠলে আঁচ কমিয়ে , কড়াইতে ছেড়ে দিলাম জল ঝরানো কাটা ঢেঁড়সগুলো | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে খানিকটা মুচমুচ করে ভেজে নিয়ে , কড়াই থেকে ভাজা ঢেঁড়শ একটা পাত্রে তুলে রাখলাম | এবার কড়াইয়ের মধ্যে থাকা তেলের মধ্যেই আবার প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে ফোরণে দিলাম গোটা শুকনোলঙ্কাগুলো আর ১ চামচের একটু বেশি পাঁচফোড়ন |



দিতে দিতেই সুন্দর গন্ধ !আহা আহা ! এবার কড়াইতে দিয়ে দিলাম জলে ধুয়ে রাখা কাটা আলুর টুকরোগুলো | আঁচ বাড়িয়ে ভালো করে আলু ভাজতে লাগলাম | আলুতে হাল.........কা রং ধরে আসতেই , আঁচ কমিয়ে কড়াইতে ছেড়ে দিলাম হলুদ জলে ভেজানো কাঁচকলার কেটে রাখা টুকরো গুলো | তবে অবশ্যই ভালো করে জল ঝরিয়ে নিয়েছি | আবার আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে আলু আর কাঁচকলা একসঙ্গে ভাজতে লাগলাম |


ভাজা ভাজা হয়ে এসেছে মনে হতেই , কড়াইতে দিয়ে দিলাম ১ চামচ মতো হলুদগুঁড়ো | আবার চললো আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়াচাড়া | দিলাম প্রয়োজনমতো নুন , অবশ্যই চিনি ( নিরামিষ ঝোলে চিনি তো লাগবেই লাগবে , নাহলে টেস্টি টেস্টি হবে কিভাবে ) , জিরেগুঁড়ো , ধনেগুঁড়ো আর লাল লংকার গুঁড়ো | বেশি আঁচে সমস্ত উপকরণ দু একবার নেড়ে নিয়েই ঝোলের পরিমান ভেবে নিয়ে কড়াইতে জল দিয়ে দিলাম |



ঝোল টগবগ টগবগ ফুটতে শুরু করেছে | কাঁচকলা ঝোলের দারুন গন্ধ !! পৌঁছে যাচ্ছে রান্নাঘরের কোনায় কোনায় !! এবার আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রান্না মজতে দিলাম | খানিকক্ষন বাদে ঢাকা খুলে রান্না চেখে নিলাম | সবজি সুসিদ্ধ হয়েছে কিনা তাও দেখে নিলাম | সব একেবারে ঠিক ঠাক মনে হতেই আঁচ বাড়িয়ে ঝোলের মধ্যে ছেড়ে দিলাম , মুচমুচ করে ভাজা ঢেঁড়সগুলো | আর ছেড়ে দিলাম কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা | এই কাঁচালঙ্কা ঝোলকে এক দারুন গন্ধ আর দারুন স্বাদে ভরিয়ে দেবে |


ফুটতে ফুটতে ঝোলের পরিমান ঠিক হয়ে আসতেই , গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | কত হালকা এই ঝোল , কিন্তু কি অসাধারণ তার মন মাতানো গন্ধ | প্রচন্ড গরমের দুপুরে খাবার টেবিলে আজ যখন আমরা সবাই , আমাদের সবার মন কিন্তু সেই অপূর্ব সুগন্ধে ভরা কাঁচকলা - ঢেঁড়সের ঝোলের দিকেই (Bhindi - Kanchakola - Curry) | ভাবটা এমন .....গরম ভাতে ঝোল দিলেই...করবো খাওয়া শুরু | ..... খাওয়া শুরু ও হলো ...শেষ ও হলো | ....আশ্চর্য !! সত্যিই কাঁচকলা - ঢেঁড়সের হালকা ঝোলের স্বাদে মন - শরীর কেমন যেন হালকা - আর ফুরফুরে আর খুশি খুশি !!!


আপনারাও খুব খুব খুশি খুশি থাকুন | ভালো থাকুন | ভালো ভালো খান | সুস্থ থাকুন | আর থাকুন অনেক অনেক আনন্দে |

4 views0 comments

Comentarios


bottom of page