বাবাঃ ! কি ভীষণ গরম। অসহ্য গরম। সহ্য করাই যেন এক কঠিন কাজ। কিন্তু সবাইকে সব কাজই তো করতে হবে। আর যতই ইচ্ছা না করুক ,শরীরের কথা ভেবে খাওয়া দাওয়া তো একটু করতেই হবে। আর খেতে গেলে রান্নাও তো করতেই হবে।আর এই সময়ে হালকা রান্না শরীরের জন্য যেমন ভালো ,খাওয়া যায় অনেক স্বস্তিতে।
আজ যাই রাঁধি না কেন ,হালকা করে রাঁধবো ,কিন্তু অবশ্যই টেস্টি টেস্টি। গরম গরম ভাত ,পাতলা আর হালকা মুসুরির ডাল ,গন্ধরাজ লেবু আর '' কুমড়ো আলুর তরকারি। '' শুনে মনে হচ্ছে খুবই সাধারণ রান্না ,তাই না ? ভাবনাটা একেবারে ঠিক। খুব সহজ রান্না ,একেবারে হালকা রান্না ,কিন্তু ভীষণ টেস্টি টেস্টি। আমার মনে হয় একবার খেলে ---বার বার খেতে ইচ্ছে করবে কিন্তু।
রান্নায় মশলার পরিমান খুবই অল্প ,তেলের পরিমান কম। কিন্তু রান্না স্বাদে ভরপুর। এই তরকারিতে স্বাদ বাড়াতে দেওয়া যেতে পারে কুঁচো চিংড়ি ,ইলিশ মাছের মাথা বা রুই মাছের মাথা ,ভেজানো ছোলা ইত্যাদি ইত্যাদি । আবার কোনো কিছু নাও দিতে পারেন। রান্নাটা গরম ভাত - ডালে জমবেই জমবে। আমি কিন্তু স্বাদ বাড়ানোর চিন্তা করেই কুমড়ো আলুর তরকারিতে দিচ্ছি --বড়ো বড়ো কয়েকটা চিংড়ি মাছ। রান্নায় একটু স্বাদ বাড়ানোর লোভ ছাড়তে পারলাম না। আর চিংড়ি এমন এক ধরণের মাছ ,যে রান্নায় দেওয়া যাবে ---সেই রান্নাই স্বাদে গুনে অসাধারণ হয়ে উঠবে।
উপকরণ :-
কুমড়ো - ৫০০ গ্রাম ( হালকা করে খোসা ছাড়িয়ে একটু ছোট করে ,ডুমো ডুমো করে কাটা )
আলু - ৪টি একটু বড়ো সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে ডুমো ডুমো করে কেটে জলে ভেজানো )
পেঁয়াজ - ৬টি মাঝারি সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে প্রত্যেকটি ৮ টুকরো করে কাটা )
চিংড়ি - ৩০০ গ্রাম ( খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করা )
কাঁচালঙ্কা - ৮-১০টি কয়েকটি মাঝামাঝি দু - টুকরো করে কাটা , কয়েকটি গোটা )
পাঁচফোড়ন - ১-১.৫ চামচ
গোটা শুকনোলঙ্কা - ২টি ,একটু করে ফাটানো
হলুদ ১-২ চামচ
চিনি - প্রয়োজনমতো
নুন - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
চিংড়ি মাছ কটা ভালো করে জলে ধুয়ে অল্প হলুদ আর নুন মাখালাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিলাম ২টি ফাটানো শুকনোলঙ্কা ,পাঁচফোড়ন আর জলে ধোয়া আলুর টুকরোগুলো। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে আলু ভালো করে ভাজতে লাগলাম দিলাম একটু হলুদগুঁড়ো
,নুন আর চিনি। আবারো আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে আলু নাড়তে লাগলাম।
আলুগুলো হালকা ভাজা ভাজা হয়ে গেছে মনে হতেই ,দিলাম পেঁয়াজের টুকরো গুলো। বেশি আঁচে এবার নাড়তে লাগলাম। পেঁয়াজ একটু নরম হতেই দিলাম কুমড়োর কাটা ধোয়া টুকরো গুলো ,দু - টুকরো করে কাটা কাঁচালংকার টুকরো গুলো আর চিংড়ি মাছগুলো। আঁচ বাড়িয়ে সমস্ত উপকরণ ভালো করে ভাজতে লাগলাম। ভাজা ভাজা গন্ধ
বার হতেই ,আঁচ কমিয়ে একটা চাকা দিয়ে রান্না হতে দিলাম। রান্নায় কিন্তু কোনো জল দেওয়া যাবে না।
খুব সহজ রান্না। বলতে গেলে কম পরিশ্রমে চটজলদি রান্না। তেল মশলার পরিমান তো খুবই কম। কিন্তু খেতে অসাধারণ। আমাদের দুপুর জমে গেলো গরম ভাত ,গরম ডাল ,গরম গরম কুমড়ো - আলু - চিঙড়ির তরকারি আর গন্ধরাজ লেবুতে। সবাই খুশি। সবাই তৃপ্তিতে ভরপুর। স্বস্তিতে ভরপুর ,আর অনেক অনেক আনন্দে আনন্দিত।
সব্বাই আনন্দে থাকুন,ভালো থাকুন আর অবশ্যই সুস্থ থাকুন।
Bình luận