সুজি - লুচি ! দারুন ! দারুন লাগে খেতে। এক দারুন কম্বিনেশন। সবাই পছন্দ করেন। কিন্তু এই সুজিকেই যদি একটু মিষ্টির আকারে গড়ি ,যেমন সুজির বরফি ,তাহলেও একই রকম তো লাগবেই উপরন্তু হবে একটু নতুন ধরণের। আবার মিষ্টির আকারে গড়া এই সুজি - বরফি ছোটদের কাছে একটু বেশিই প্রিয়।
সুজি জলখাবারের এক দারুন উপকরণ। মিষ্টি সুজি ,ঝাল সুজি, উপমা ,সুজির পায়েস ,সুজির মালপোয়া ,সুজির হালুয়া ইত্যাদি নানা মুখরোচক খাবার সুজি দিয়ে খুব চটপট তৈরি করে ফেলা যায় আর সকাল বিকালের জলখাবারে জমিয়ে খাওয়াও যায়। সুজি এক সহজপাচ্য দারুন খাদ্য উপকরণ। বাচ্চা - বড়ো সবার জন্য খুবই উপকারী। আবার এই সুজির গুনাগুন বিচার করে রোগীর পথ্যেও সুজি স্থান পায়। তাই নিজেদের হেলদি রাখতে খাদ্য তালিকায় মাঝে মাঝে সুজির তৈরি খাবার রাখলে ভালো হবেই হবে ।
আজ জলখাবারে ভাবলাম মিষ্টি সুজি একটু অন্য ভাবে করবো। আজ বানাবো সুজি - বরফি। জলখাবারের পাতে তো খুবই ভালো লাগবে,আবার কিছুটা ফ্রিজে তুলে রাখলে ,ইচ্ছামতো পরেও খাওয়া যেতে পারে। সুজি বরফি তৈরির জন্য সুজি ,দুধ ,কাজু ,কিশমিশ ,চিনি ,ছোট এলাচ। ঘি সব রান্নাঘরে জোগাড় করেই রেখেছি। চা খেয়েই জলখাবারের জন্য প্রথমেই তৈরি করতে শুরু করলাম সুজি - বরফি ..........
উপকরণ :-
সুজি - ৫০০ গ্রাম
দুধ - ২লিটার
কাজু - ১০০-১৫০ গ্রাম
কিশমিশ - ৫০ গ্রাম
চিনি - ২ কাপ
ছোট এলাচ - ১০-১২টি
ঘি - ৩-৪ চামচ
পদ্ধতি :-
দুধ একটা পাত্রে নিয়ে গ্যাসে চাপলাম। দুধ ফুটতে শুরু করলেই আঁচ কমিয়ে দিয়ে দুধ ঘন হতে দিলাম। এদিকে মিক্সিতে এলাচগুলো নিয়ে ,মিক্সি ২-১বার ঘুরিয়ে এলাচ গুঁড়ো করে নিলাম। এলাচের বাড়তি খোসা মিক্সি থেকে বার করে নিলাম। এবার এই মিক্সিতে এলাচ গুঁড়োর মধ্যেই দিলাম কাজু বাদাম। সমস্ত মিহি করে মিক্সিতে বেটে নিলাম।
এবার মিক্সিতে রাখা এলাচগুঁড়ো আর কাজুবাদাম বাটা ফুটন্ত দুধের মধ্যে দিয়ে দিলাম। দিলাম ২ কাপ মতো চিনি। সুজিতে দেওয়ার মতো দুধের পরিমান ঠিক করে , দুধ একটু ফুটিয়ে নিয়ে ঘন দুধের পাত্র গ্যাস থেকে নামিয়ে রাখলাম। গ্যাসে চাপলাম কড়াই।
কড়াই গরম হতেই দিলাম সুজি। শুকনো খোলায় সুজি ,আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়তে লাগলাম।
ভাজার মাঝখানেই সময় করে একটা কানা উঁচু থালায় ভালো করে ঘি মাখিয়ে রাখলাম। এদিকে সুজি নাড়তে নাড়তে লালচে লালচে হয়ে এলেই ,তারমধ্যে দিলাম ৩-৪ চামচ ঘি। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভালো করে নাড়তে নাড়তে ,সুজির মধ্যে দিলাম ফুটিয়ে রাখা ঘন ,কাজু আর এলাচ মেশানো দুধ। আঁচ কমিয়ে স্বাদ ও দেখে নিলাম।
সুজি দুধ ভালো মতো মিশে যেতেই গ্যাস বন্ধ করে ,সুজির মিশ্রণ ঘি মাখানো থালায় ঢেলে দিলাম। মিশ্রণ ভালো ভাবে থালায় ,চেপে চেপে বসিয়ে দিয়ে ঠান্ডা হতে দিলাম। সুজি জমাট বেঁধে ঠান্ডা হয়ে যেতেই ,ছুরি দিয়ে বরফির আকারে টুকরো টুকরো কেটে নিলাম। প্রত্যেকটির বরফির উপরে বসিয়ে দিলাম এক টুকরো কাজু আর একটা করে কিশমিশ। বাঃ ! বাঃ ! কি সুন্দর তৈরি হয়ে গেলো আমার সুজি - বরফি।
জলখাবার তৈরি করে নিয়ে প্রত্যেক থালায় দিলাম ,১টা -২টো করে সুজি বরফি। আর বাকি বরফিগুলো পাত্র বন্ধ করে ফ্রিজে তুলে রাখলাম ,সময়ে অসময়ে একটু চেখে দেখার জন্য। সুজি বরফি দেখে সবাই যেমন অবাক ,তেমনি ভীষণই খুশি। এক সঙ্গেই বলে উঠলো ,দারুন করেছো কিন্তু ! আর খেতে তো একেবারে অসাধারণ হয়েছে গো ! মাঝে মাঝেই এমন করলে কিন্তু বড়োই ভালো হয় ........আর জলখাবার ও যে কি ভীষণ জমে যায় ........। তবে সবার আনন্দ দেখে এটা মানতেই হচ্ছে , খাবার কিন্তু সব সময়েই খুব আনন্দ করে ,মজা করে আর উপভোগ করেই খেতে হয়।
খুব খুব ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,থাকুন অনেক অনেক আনন্দে।
Comments