রান্না
প্রকৃতি আমাদের চার পাশে আমিষ নিরামিষ রান্নার নানাধরণের উপকারী উপকরণ সাজিয়েই রেখেছে| আমরা কিসে ভালো থাকবো আর সুস্থ থাকবো যেন তারই নানা প্রকারের চেষ্টা | প্রকৃতির ঘরে কোনো কিছুরই অভাব নেই | যত্ন সহকারে নাও আর গ্রহণ করো |
আমরা গৃহিণীরা খুব ভালো করেই বুঝতে পারি, বাড়ির সবাই কিন্তু একই মেনু রোজ রোজ পছন্দ করে না | একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রান্না হলেই তারা সবাই খুশি |
রান্নাঘরে ঢুকে দেখি বাজার থেকে আনা হয়েছে শিঙ্গি মাছ আর কাঁচা কলা | বাড়ির সদস্যদের ইচ্ছে দুপুরের মেনুতে খুব টেস্টি টেস্টি করে আমি যেন কাঁচা কলা দিয়ে শিঙ্গি মাছের ঝোল রান্না করি |
শিঙ্গি মাগুর কত উপকারী আর সহজ পাচ্য জিওল মাছ ------- তা বোধয় আমরা বাঙালিরা সবাই জানি| ছোট ছোট বাচ্চা বা বয়স্ক মানুষদের জন্য খুবই উপকারী | অনেকদিন রোগে ভুগে মানুষ যখন খুব দুর্বল হয়ে পরে, তখন আমরা তার একটু শক্তি বাড়াতে খুব হালকা রান্না করে বেশ কয়েকদিন শিঙ্গি মাগুরের ঝোল খাওয়াই | আর ডাক্তাররাও কিন্তু এই পরামর্শই দিয়ে থাকেন |
যা হোক, সবার খুশির জন্য, সবার ইচ্ছে পূরণ করতে, রান্না ঘরে ঢুকেই পড়লাম --------- কাঁচা কলা দিয়ে শিঙ্গি মাছের ঝোল রান্না করতে !!!
উপকরণ :-
শিঙ্গি মাছ - ৫০০ গ্রাম (টুকরো টুকরো করে কাটা)
কাঁচা কলা - ৩টি একটু বড়ো সাইজের (খোসা ছাড়িয়ে অর্ধেক করে চিরে নিয়ে, ডুমো ডুমো করে কাটা)
গোটা কাঁচা লঙ্কা - ৫,৬টি (একটু চেরা)
৫ ফোড়ন - ১/২ চামচ
গোটা শুকনো লঙ্কা - ২টি
হলুদ - ১/২ চামচ
জিরে গুঁড়ো - ৪ থেকে ৫ চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো - ১/২ থেকে ১ চামচ
নূন - প্রয়োজন মতো
চিনি - কয়েকদানা
সর্ষের তেল - প্রয়োজন মতো
পদ্ধতি :-
শিঙ্গি মাছ নূন মাখিয়ে একটু সময় রেখে দেওয়ার পর, জলে বারবার ধুয়ে, জল ঝরিয়ে, নূন, হলুদ আর একটু কাঁচা সর্ষের তেল মাখিয়ে রাখলাম (গরম তেলে শিঙ্গি মাছ খুব ফাটে; একটু সর্ষের তেল মাখানো থাকলে একটু কম ফাটবে; শিঙ্গি মাছ খুব সাবধানেই ভাজতে হয়) |
গ্যাসে কড়াই গরম করে তেল দিলাম | তেল গরম হলে, শিঙ্গি মাছ গুলো আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভেজে তুলে রাখলাম | এবার ওই তেলেই প্রয়োজন মতো আরেকটু তেল দিয়ে দিলাম পাঁচ ফোড়ন, শুকনো লঙ্কা | আর ডুমো ডুমো করে কাটা, জলে ধোয়া কাঁচা কলার টুকরো গুলো |
কাঁচা কলা একটু রাঙা করে ভেজে নিয়ে, দিলাম নূন, চিনি আর প্রয়োজন মতো হলুদ | একটু নেড়েচেড়ে দিলাম জিরে গুঁড়ো আর লঙ্কা গুঁড়ো | বেশি আঁচে দু একবার নেই ঝোলের পরিমাণ ভেবে নিয়ে কড়াইতে জল দিলাম |
ঝোল কিছুক্ষন ফোটার পর আঁচ কমিয়ে, দিলাম ভাজা মাছ গুলো, গোটা কাঁচা লঙ্কা গুলো আর একটা ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিলাম | কাঁচা কলা সেদ্ধ হয়ে গেলে আর ঝোলের স্বাদ এসে গেলে, আঁচ বাড়িয়ে রান্না ফুটিয়ে নিয়ে ঝোলের পরিমাণ পছন্দ মতো করে নিলাম | গ্যাস বন্ধ করে দিলাম |
ঝোলের বড়োই সুন্দর গন্ধ.........
দুপুরে খাবার টেবিলে গরম গরম ভাতের সঙ্গে বাটিতে বাটিতে গরম গরম শিঙ্গি মাছের ঝোল.........সবাই আনন্দে উচ্ছসিত ! মনের সুখে আর ঝোলের সুন্দর স্বাদে খাওয়া দাওয়া শেষ হলো |
রাঁধুন, রাঁধুন ! আর সবাই কে নিয়ে আনন্দ করে খান | ভালো লাগবে | ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আনন্দে থাকবেন |
Comentarios