top of page
Writer's pictureKaveri Nandi

পটল - সর্ষে


গ্রীষ্মকালে বাজারে প্রতিটি দোকান রোজ আলো করে থাকে ,কচি কচি সবুজ সবুজ পটল। গ্রীষ্মকালের সব্জিদের মধ্যে পটল কিন্তু প্রথম সারির সবজি। আজ যদি আমাদের বাজারের থলিতে পটল নেই তো কাল বাজারের থলিতে আগেই পটল্ জায়গা করে নেবে। ।উপায় নেই ,সব সবজিই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতেই হবে।কারণ আমাদের খাওয়া প্রতিটি সবজিই নানা খাদ্যগুণে ভরপুর।তাছাড়া গরম গরম ভাতে ,গরম গরম ডাল আর ? গরম গরম পটল ভাজা ,সত্যিই অপূর্ব !


আজ আমার বাজারের থলি থেকে টপাটপ টপাটপ বেরোতে লাগলো ,সবুজ সবুজ পটল। আমার বাড়ির সবারই প্রিয় সবুজ সবজি পটল। সবার পছন্দ। অতএব পটোলের নানা মেনু রাঁধতে কোনো অসুবিধাই হয় না। অসুবিধাই যখন নেই ,তখন সর্ষে বাটা দিয়ে পটোলের ঝাল রাঁধবো। অসাধারণ !আর খুব টেস্টি টেস্টি এক মেনু। যারা সর্ষে ঝাল খেতে পছন্দ করেন ,তাদের পটল - সর্ষেও কিন্তু খুবই ভালো লাগবে। বাকিদেরও অনুরোধ করছি ,খুব সহজ রান্না। একবার রেঁধে খেয়ে দেখুন ,খুবই ভালো লাগবে।



কর্মসূত্রে যখন গ্রামে ছিলাম,তখন মাঝে মাঝে নানা কাজে গ্রামের রাস্তায় হাঁটার সময়ে লক্ষ্য করি ,প্রত্যেক বাড়ির সামনেই বাড়ির বৌরা কি সব ঝাড়াঝাড়ি করছে।বললাম ,মনে হচ্ছে খুব ছোট ছোট সর্ষে ,তাই না ? ততক্ষনে যারা কাজ করছে ,তাদের দিকে এগিয়ে গিয়েছি । বৌ গুলো বলে উঠলো,সর্ষে ঝেড়ে তুলছি গো। ,সর্ষে খেতে আমাদের খুবই ভালো লাগে ! তাছাড়া এই ছোট ছোট সর্ষে গুলো স্বাদেও বড়োই ভালো। কোনো রান্না সর্ষে বাটায় রান্না হলে ,আমাদের আর কিছুই চাই না।

একজন বলে উঠলো ,আজ রেঁধেছি সর্ষে বাটায় ছোট ছোট বাটা মাছ । খেতে বড়োই ভালো ......ঘরে.সবারই খুব আনন্দ। ওদের কথা শুনে আমারও যেন জিভে জল এসে যাচ্ছিলো। ভাবলাম আমিও সর্ষে বাটা দিয়ে নানা পদ রান্না করবো ,আর জমিয়ে জমিয়ে খাবো।


এখন তো সর্ষে বাটা দিয়ে অনেক অনেক রকম রান্নাবান্না করি। যেমন আজকের মেনু পটল - সর্ষে।


উপকরণ :-


  • পটল - ৫০০ গ্রাম ( পটল চেঁছে নিয়ে দু-দিক বাদ দিয়ে ,লম্বালম্বি দু -টুকরো করে কাটা )

  • গোটা সর্ষে - ২৫ গ্রাম ( বেছে ,ধুয়ে জলে ভেজানো )

  • কাঁচালঙ্কা - ৭-৮টি ,সবই গোটা

  • হলুদ - ১-১.৫ চামচ

  • লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২ থেকে ১ চামচ

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


কাটা পটল ভালো করে ধুয়ে নিয়ে নুন ,হলুদ আর চিনি মাখিয়ে রাখলাম। মিক্সিতে জল ঝরিয়ে ভেজা সর্ষে আর ২টি কাঁচালঙ্কা নিয়ে মিহি করে বেটে নিলাম ।



গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হলে নুন ,হলুদ মাখানো কাটা পটল গুলো একটু মুচমুচ করে ভেজে নিলাম। সব পটল ভাজা হয়ে যেতেই ,কড়াই পরিষ্কার করে আবার কড়াইতে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হতেই, বাটা সর্ষে কড়াইতে দিয়ে দিলাম। দিলাম ১/২ চামচ হলুদ ,১/২ চামচ লাল লঙ্কাগুঁড়ো , প্রয়োজন দেখে নিয়ে নুন আর চিনি।



কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ নাড়তে লাগলাম। যখন সর্ষে বাটার জল শুকিয়ে ,মিশ্রণ থেকে তেল বার হতে শুরু করলো ,রান্নায় কেমন রসা রাখবো ,সেই ভেবে কড়াইতে জল দিলাম। বেশি আঁচে সর্ষের মিশ্রণ ফুটে উঠতেই ,কড়াইতে দিলাম ভাজা পটোলের পিস গুলো আর কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা। পটল সর্ষেতে মাখো মাখো হলেই ,রান্নার স্বাদ দেখে নিয়ে সব ঠিকঠাক মতো করে নিলাম ....গ্যাস বন্ধ করলাম।

চলো...... সবাই খাবার টেবিলে চলো। ভাতে প্রথম পদ খাওয়ার পর ,...................সবার পাতে দিলাম .--পটল - সর্ষে। এরপর দেবো মাছ। খুব সুন্দর করে পটল - সর্ষে দিয়ে ভাত মেখে খেতে খেতে সবাই বলে উঠলো ,আজ আর মাছ নয়। পটল - সর্ষের এই স্বাদে মন ভরে যাচ্ছে। আজ আমরা পটল - সর্ষে দিয়েই জমিয়ে খাবো। ভীষণ ভালো ! খুব ভালো ! অসম্ভব টেস্টে ভরা !বললাম তবে তাই হোক ..........


সব রান্নাই মজা করে খান ,জমিয়ে খান ,সুস্থ থাকুন ,ভালো থাকুন।


6 views0 comments

Comments


bottom of page