পার্শে মাছ ! দারুন....... দারুন মিষ্টি স্বাদের মাছ ! যারা ছোট ছোট মাছের নানা রকম মেনু খেতে পছন্দ করেন ,তাদের তো এই মাছের মেনু ভালো লাগবেই লাগবে। পার্শে মাছ ভাজা, পার্শে মাছের ঝাল ,সর্ষে - পার্শে .....নানা ,নানা রকমের খুবই মুখরোচক মেনু।সবই স্বাদেগুনে অসাধারণ !
যে কোনো ছোট মাছই খাদ্যগুণে ভরপুর। চোখ ভালো রাখতে ,হাড় মজবুত করতে ,সহজে হজম হয়ে শরীরে শক্তি জোগাতে এদের কোনো তুলনাই হয় না। তাই মাঝে মাঝে ছোট ছোট মাছের মেনু আমরা অবশ্যই ...রেঁধে - খেয়ে দেয়ে ..নয়তো চেখে দেখবোই দেখবো। যতো ভিটামিন ,যতো মিনারেলস ,যতো শক্তি ....সবই এই সুন্দর সৃষ্টির খাদ্য ভাণ্ডারে উপচে পড়ছে। খোঁজ ...খুঁজে নাও ...আর তা গ্রহণ করো। তাহলেই শরীর মনে অনেক শান্তি ...অনেক স্বস্তি ...।
আমার রান্নাঘরে আজ পার্শে মাছ। আমি রাঁধবো ...পার্শে মাছের রসা। গরম ভাতে খুবই মুখরোচক। আবার গরম গরম ডাল আর গরম গরম ভাতের সঙ্গেও খুবই ভালো।
তাহলে আজ আমার দুপুরের মেনু '' পার্শে মাছের রসা রসা। ''
উপকরণ :-
পার্শে মাছ - ৫০০ গ্রাম ( কেটে কুটে পরিষ্কার করা )
আলু - বড়ো বড়ো ২টি ( খোসা ছাড়িয়ে আলো ভাজার মতো লম্বা লম্বা মোটা মোটা করে কাটা )
পেঁয়াজ - ছোট ছোট ২টি ( খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচানো )
রসুন - ৬-৭ কোয়া ( খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচানো )
টমেটো - ১টি একটু বড়ো মতো ( কুচানো )
কাঁচালঙ্কা - ৬-৭ টি
গোটা শুকনো লঙ্কা - ২টি ( একটু করে ফাটানো )
পাঁচফোড়ন - ১ চামচ মতো
হলুদগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
লাল লঙ্কা গুঁড়ো - ২-২.৫ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - কয়েকদানা ( রান্নায় রং আর সুন্দর স্বাদের জন্য )
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
কাটা আলুর টুকরো গুলো জলে ভিজিয়ে দিলাম। এবার পার্শে মাছগুলো বার বার জলে ধুয়ে নিয়ে ভালো করে জল ঝরিয়ে নিয়ে নুন আর হলুদ মাখালাম।গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে একটু তেল দিলাম। তেল গরম হলে জল থেকে তুলে নিয়ে কাটা আলুর টুকরোগুলো কড়াইতে দিলাম। আঁচ কমিয়ে দিলাম এক
চিমটে নুন আর হলুদ। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে হালকা রাঙা রাঙা করে আলুর টুকরো গুলো ভেজে তুলে রাখলাম।
আঁচ কমিয়ে কড়াইতে রান্নার প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হলে দিলাম ২টো ফাটানো শুকনোলঙ্কা ,পাঁচফোড়ন ,কুচানো পেঁয়াজ আর কুচানো রসুনের টুকরোগুলো। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভালো করে পেঁয়াজ -রসুন মজিয়ে নিলাম। দিলাম ভাজা আলুর টুকরোগুলো ,নুন ,কয়েকদানা চিনি ,হলুদ। এখন আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কয়েকবার ভালো করে নাড়াচাড়া করে দিলাম টমেটোর কাটা টুকরো আর লাল লঙ্কাগুঁড়ো। গ্যাসের তাপ বাড়িয়ে কমিয়ে ভালো করে কষতে লাগলাম। ( ঠিক এই সময়ে যদি মনে করেন তবে রান্নায় ১/২ থেকে ১ চামচ মতো জিরে গুঁড়ো দিলেও দিতে পারেন। ভালো লাগবে। তবে জিরে গুঁড়ো দিতেই ...হবে ,এমন বাধ্যবাধকতা নেই কিন্তু। না দিলেও অসাধারণ লাগবে )।
মশলা কষা হয়ে গেছে মনে হতেই ,রসার পরিমান ভেবে জল দিলাম। বেশি আঁচে রসা ফুটতে শুরু
করলেই ,ভাজা পার্শে গুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম। আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রান্না মজতে দিলাম। বাঃ রে ! সুন্দর গন্ধ বেরিয়েছে তো ! রান্না ভালো হয়েছে মনে হলে ,যিনি রান্না করেন ,তাঁর কিন্তু ভীষণ আত্মসন্তুষ্টি হয়। হয় বেজায় আনন্দ।
যাক ....কিছুক্ষন বাদে ঢাকা খুলে দেখে নিলাম আলু মজেছে কিনা। একদম ঠিকঠাক মনে হতেই রান্নার স্বাদও দেখে নিলাম। খেতে বড়োই ভালো লাগছে । দিলাম কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা । এবার আঁচ বাড়িয়ে রসার পরিমান ঠিক করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করলাম। রান্নায় একটা ঢাকা দিয়ে তো রাখতেই হবে .....দুপুরের খাওয়ার সময়ের অপেক্ষায়।
দুপুরে সবাই ...সব্বাই আনন্দ করে ,খুব মজা করে ,হৈ - হুল্লোড় করে খাওয়া দাওয়া জমিয়ে সারলাম.......রান্না যে ভীষণ টেস্টি টেস্টি আর একেবারে আমাদের মনের মতো। ভালো তো লাগবেই ! আনন্দ তো হবেই !
আপনারাও আনন্দ করে উপভোগ করে খেয়ে দেখুন ....খুব খুব ভালো লাগবে । ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন আর অবশ্যই আনন্দে তো থাকবেনই।
Comments