'' পনিরের - ঝোল ''.......খুব অবাক লাগছে না ? পনিরের ঝোল ...তাও আবার টেস্টি টেস্টি। মটর-পনির ,চিলি - পনির ,পনির - বাটার - মশলা .....আরো কতো - কতো রকমের পনিরের মুখরোচক মেনু। ভাবলেই যেন জিভে জল এসেই যায়। সেখানে পনিরের ঝোল ......!!!...... অবাক হবেন না। আমি বলছি ,হালকা ...পাতলা করে অথচ বাদশাহী মেজাজে রান্না করা পনিরের ঝোলও কিন্তু মাঝে
মাঝে মুখের স্বাদও পাল্টে দিতেই পারে। সব সময় তো আমরা রসা রসা - কষা কষা খাবারই বেশি পছন্দ করি। কখনো সখনো হালকা করে মশলাদার রান্নাও খেতে কিন্তু খারাপ লাগে না ,বরঞ্চ বেশ ভালোই লাগে।
পনির ....... নানা খাদ্যগুণে ভরপুর ,অপূর্ব স্বাদের ...আমাদের রান্নাঘরের এক অসাধার উপকরণ।আজ রান্নাঘরে পনিরের কোনো মেনু ...তো বাড়ির সবাই খুবই খুশি
খুশি। বেশ কয়েকবছর আগেও সব বাড়িতেই পনির রান্নার এতো প্রচলন ছিল না। কিন্তু এখন ঘরে ঘরে মাঝে মাঝেই পনিরের নানা মেনু। বাড়ীতে ছোট - বড়ো সবাই খুশি ...আর বাড়ির গৃহিণীরাও খুশি। সবচাইতে খুশি যারা নিরামিষভোজী আর পনির খেতে পছন্দ করেন । পনিরের যে কোনো টেস্টি টেস্টি মেনু তাদের কাছে স্পেশাল মেনু তো বটেই ।
আজ পনিরের ঝোল রাঁধবো তা কালই ঠিক করে রেখেছিলাম। তাই জোগাড়ও করেই ফেলেছি। এখন শুধু রান্নাবান্না। দুপুরের এক মেনু ...পনিরের ঝোল। গরম গরম ভাতে ....অসাধারণ। আর যারা রুটি পছন্দ করেন ,তাদেরও কিন্তু ভালো লাগবে।তাহলে রান্না শুরু করলাম ............
উপকরণ :-
পনির - ২০০ গ্রাম( একটু বড়ো বড়ো টুকরো করে কাটা )
আলু - ২-৩টি ( একটু বড়ো সাইজের , খোসা ছাড়িয়ে ৮ টুকরো করে কাটা )
টমেটো - ১টি ( মাঝারি সাইজের , ছোট ছোট টুকরো করে কাটা )
পেঁয়াজ - ২টি ( ছোট সাইজের , মিহি করে কুচানো )
আদা - ১/২ চামচ ( থেঁতো করা )
কাঁচা লঙ্কা - ৪-৫ টি ( অর্ধেক করে চেরা )
ছোট এলাচ - ২-৩টি
লবঙ্গ - ২-৩টি
দারচিনি - এক টুকরো ( পাতলা আর ১ ইঞ্চি মতো )
হলুদগুঁড়ো - ১/২ থেকে ১ চামচের মতো
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২ থেকে ১ চামচের মতো ( ঝাল সবসময়ে নিজের নিজের পছন্দ মতো )
জিরেগুঁড়ো - ১-২ চামচ
ধনেগুঁড়ো - ১-২ চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো - ১/২ চামচ
ঘি - ১ চামচ মতো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সাদা তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে অল্প তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পনিরের টুকরো গুলো হালকা করে ভেজে তুলে রাখলাম। এবার এই কড়াইতেই রান্নার প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হতেই আঁচ কমিয়ে দিলাম ছোট এলাচ , লবঙ্গ ,দারচিনি আর পেঁয়াজের কুচানো টুকরো গুলো।
আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ নরম করে ভেজে নিয়ে দিলাম ,জলে ধোয়া আলুর টুকরো গুলো। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সুন্দর রাঙা রাঙা করে আলু ভাজা হতেই আঁচ কমিয়ে দিলাম ,থেঁতো করা আদা।
সমস্ত কড়াইয়ের উপকরণ ভালো করে নেড়েচেড়ে নিয়ে আঁচ কমিয়ে দিলাম ,একটু হলুদ ,অল্প জিরেগুঁড়ো ,অল্প ধনেগুঁড়ো ,প্রয়োজন ভেবে লাল লঙ্কারগুঁড়ো ,নুন ,চিনি। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কয়েকবার কষে নিয়ে দিলাম টমেটোর টুকরোগুলো। নাড়াচাড়া করতে করতে কষা হয়ে গেছে মনে হতেই ঝোলের পরিমান ভেবে জল দিলাম। বেশি আঁচে ঝোল ফুটে উঠলে ,আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে ঝোল হতে দিলাম।
ঢাকা খুলে আলু নরম হয়েছে দেখেই ,ঝোলের মধ্যে দিলাম ভাজা পনিরের টুকরো গুলো। ঝোল বেশি আঁচে ফুটতে দিলাম। দেখে নিলাম ঝোলের স্বাদ। পনির খুব বেশি ঝোলে সেদ্ধ করলাম না। এতে পনিরের সুন্দর গন্ধ ঝোলে থেকে গেলো। ঝোলের পরিমান ঠিক মতো হয়েছে মনে হতেই দিলাম অল্প গরম মশলার গুঁড়ো আর ১ চামচ মতো ঘি। গ্যাস বন্ধ করে দিয়ে রান্না ঢাকা দিয়ে দিলাম।
খাবার টেবিলে বসতে বসতে সবাই বলে উঠলো ,উফঃ ! পনিরের ঝোলের গন্ধে যে সারা ঘর ভরে গেছে গো। ২-১ জন বলে উঠলো তাইতো খুব খিদেও পেয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি খেতে দাও। ওহো হো হো ! কখন যে খাবো!!!...........সবার মজা আনন্দের মধ্যেই সবাইকে দিলাম ,তাদের পছন্দের মেনু ..'' পনিরের ঝোল '' আর গরম গরম ভাত । একজন বলে উঠলো ,উফঃ কি ভীষণ সুন্দর স্বাদে ভরা !!বড়োই সুন্দর হয়েছে ,ভীষণ ভালো। আজ শুধু পনিরের ঝোল দিয়েই লাঞ্চ টা সারব।........তাকিয়ে তাকিয়ে খাবার টেবিলের আনন্দ উপভোগ করছিলাম আর ভাবছিলাম ওদের আনন্দই তো আমারও আনন্দ । প্রথমে একটু ..এই সামান্য মতো চিন্তা তো হচ্ছিলোই .....। কিন্তু আমার মনের চিন্তা এখন অনেক অনেক দূরে। খাবার টেবিলের আনন্দে .......মনে যেন অফুরন্ত খুশি আর শান্তি।
আনন্দে থাকুন ,খুব ভালো থাকুন ,আর পুষ্টিতে ভরা খাবার খেয়ে দেয়ে অবশ্যই সুস্থ থাকুন।
Comments