মাছ প্রিয় বাঙালির পরিচয় হরেক হরেক রকম মাছের সঙ্গে | তেমনিই এক মাছ,পাকাল মাছ | বিশেষ স্বাদের এই মাছটি তেমন করে রান্না করলে,অনেকেই হাত আর পাত চেটেপুটেই খাবে | গ্রামে গঞ্জে,নদীর ধারের বসবাসকারী মানুষ জনের সঙ্গে এই মাছটির পরিচয় একটু বেশিই | শহরাঞ্চলে সব জায়গায় সব সময়ে কিন্তু এই মাছ পাওয়া যায় না | তবে খুঁজলে মাঝে মাঝে পাওয়াও যায় |
পাকাল মাছ আমার কিন্তু খুবই পছন্দের মাছ | ছোট বেলায় দেখেছি ,বাবা বাজার থেকে এই মাছ আনলেই প্রথমে আমাকেই ডাকতো | আর মায়ের হাতের জিভে জল আনা সেই রান্না ......কি আর বলবো ? মনে হয় বার বার খাই ......বার বার খাই......
সেই প্রিয় পাকাল মাছ আজ আমার রান্নাঘরে, কি ভীষণ আনন্দ হচ্ছে বুঝতেই পারছেন ! আজ মনের আনন্দে রান্না করবো,"পাকালের ঝাল ঝাল রসা রসা" ---- দুপুরের সবার প্রিয় রসালো আর টেস্টি টেস্টি মেনু | যাই আর দেরি না করে রান্নাঘরেই ঢুকে পড়ি , জলখাবারের মেনু শেষ হলেই রান্না হবে পাকালের ঝাল ঝাল রসা--------
উপকরণ:-
পাকাল মাছ - ৫০০ গ্রাম ( কেটে কুটে পরিষ্কার করা )
আলু -৪ টি মাঝারি সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে লম্বা লম্বি ৪ টুকরো করে কাটা )
পেঁয়াজ - ৪ টি ছোট সাইজের (খোসা ছাড়িয়ে কুচানো )
রসুন - ৮-১০ কোয়া ( খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচানো )
ধনেপাতা - কুচানো (১ কাপ )
কাঁচালঙ্কা -৪-৫টি ( অর্ধেক করে চেরা )
পাঁচ ফোড়ন -১ থেকে ১.৫ চামচ
হলুদ - ২ চামচ
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ২ চামচ ( ঝাল নিজের নিজের পছন্দমতো )
জিরেগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
চিনি- সামান্য ( রং আর স্বাদের জন্য )
নুন - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল -প্রয়োজনমতো
পদ্বতি :-
পাঁকালমাছগুলো একটা পাত্রে নিয়ে ২ চামচ মতো নুন মাখিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিলাম | তারপর বার বার জল দিয়ে ধুয়ে নুন হলুদ মাখিয়ে রাখলাম | গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম | তেল ভালো করে গরম হলে মাছগুলো কড়া করে ভেজে নিলাম | এবার বাকি তেলে জলে ধোয়া আলুগুলো দিলাম, দিলাম ১ কি চিমটে হলুদ | সমস্ত আলু ভালো করে ভেজে রাখলাম |
এবার কড়াইতে প্রয়োজনমতো আর একটু তেল দিয়ে, দিলাম পাঁচফোড়ন, কুচানো পেঁয়াজ, কুচানো রসুন | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ হালকা বাদামি করে ভেজে নিয়ে দিলাম ১ চামচ হলুদ ,২ চামচ লাল লঙ্কাগুঁড়ো,৩ চামচ মতো জিরেগুঁড়ো,কুচানো ধনেপাতা , | আঁচ কমিয়ে সমস্ত উপকরণ ভালো করে নাড়াচাড়া করে নিলাম | এইবার ভাজা মাছগুলো কড়াইতে নিয়ে সমস্ত মশলার সঙ্গে নেড়ে নিলাম | রসার পরিমান ঠিক করে নিয়ে আঁচ বাড়িয়ে কড়াইতে জল দিলাম |রসা ফুটে উঠলেই ভাজা আলুগুলো ঝোলে দিয়ে দিলাম | আঁচ কমিয়ে রান্নাটা কিছুক্ষন হতে দিলাম |
রান্নার সুন্দর গন্ধ বেরোতেই ,দেখে নিলাম রান্নাটা স্বাদগুণে ঠিক হয়েছে কিনা | এবার রান্নার রসাটা ঠিক করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম| মনে হচ্ছে সুন্দরই হয়েছে | মন আনন্দে ভরপুর | দুপুরে খাবার টেবিলে সবাইকে যত্নকরে দিলাম ,নিজেও যত্ন করে নিলাম ,আমার খুব খুব প্রিয় পাঁকালমাছের ঝাল ঝাল রসা রসা রান্নাটা | সব্বাই খুশি খুশি মনে খাওয়া শেষ করলাম | আর একটা কথা , বাড়ির সবাই আমার খুশিতেই যেন আরো খুশি | এইরকমই তো আমাদের সব্বার পরিবার |
খুব খুশিতে থাকুন ,খুব আনন্দে থাকুন ,খুব খুব ভালো থাকুন |
Comentários