শাকে - ভাতে বাঙালি .......কথাটা যদি বলি ,সেটা বোধহয় খুব বেঠিক হবে না। কারণ এমন এক সময় ছিলো ,যখন বাঙালির খাওয়ার প্রথম পাত শুরু হতোই গরম গরম ভাত আর কোনো না কোনো শাকভাজা দিয়ে।এখনো আমাদের রান্নাঘরে মাঝে মাঝেই কোনো না কোনো শাকের মেনু থাকেই। আর গ্রামে - গঞ্জে ? গ্রামের লোকজনের প্রতিদিনের ভাতের পাতে শাক ভাজা থাকেই। আর কারো
কারো তো শুধু একটাই মেনু শাক - ভাত। সেটাই তাদের কাছে অমৃত।
অনেক অনেক রকমের শাক আমরা নানাভাবে রান্না করে খাই। অনেক রকম শাকের সঙ্গে হয়তো এখনো কোনো পরিচিতিই হয়নি। প্রতি রকম শাকই কোনো না কোনো ঔষধি গুনে ,পুষ্টিগুণে ভরপুর। ফাইবার সমৃদ্ধ শাক পেটের জন্য খুবই ভালো। তাছাড়া কোনো শাক শরীরে রক্তের
পরিমান বাড়াতে ,কোনো শাক রক্ত পরিশ্রুত করতে ,জিভের স্বাদ বাড়াতে ,সুগার প্রেসার নিয়ন্ত্রণেও নানা ভাবে আমাদের উপকার করে।
আজ রান্নাঘরে পাটশাক। খুব উপকারী শাক। বর্ষা চলে এসেছে। সারাদিন বৃষ্টি। কখনো ঝিরঝিরে ,কখনো বা ঝম ঝম করে। এই সময় একটু তেলেভাজা ,মানে একটু ভাজাভাজি খেতে মোটামুটি অনেকেই খুব পচ্ছন্দ করে। আমি ভাবলাম আজ বৃষ্টিভেজা দিনে পাটশাকের মুখোরোচক বড়া ভাজব, দুপুরের প্রথম পাত জমবেই জমবে।
উপকরণ :-
পাটপাতা - ৩০-৩৫ টি ( পরিষ্কার করে নিয়ে জলে ভেজানো )
বেসন - ১-১.৫ কাপ
চালের গুঁড়ো - ১/২ কাপ
কাঁচালঙ্কা - ২ চামচ
আদা বাটা - ১/২-১ চামচ মতো
রসুন - ১-১.৫ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সাদা তেল - পকোড়া ভাজার মতো
পদ্ধতি :-
প্রথমেই পাটপাতা গুলো জল থেকে তুলে জল ঝরিয়ে ,২টি করে পাতা জোড়া করে করে রাখলাম। একটা পাত্রে বেসন ,চালেরগুঁড়ো ,আদা বাটা ,রসুন বাটা ,কাঁচালঙ্কা বাটা ,নুন আর চিনি ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ,পরিমাপ মতো জল দিয়ে কিছুক্ষন রেখে দিলাম। তারপর পাত্রের সমস্ত উপকরণ
অনেক্ষন ভালো করে ফেটাতে লাগলাম। পাত্রের সমস্ত উপকরণ ভালো করে মিশে যেতেই ,স্বাদ চেখে নিলাম।
গ্যাসে কড়াই চাপলাম। প্রয়োজনমতো সাদা তেল কড়াইতে দিলাম। বেশি আঁচে তেল গরম হয়ে উঠতেই আঁচ কমিয়ে ,জোড়া পাটপাতা ফেটানো বেসন- চালের মিশ্রনে ডুবিয়ে কড়াইতে ছেড়ে দিলাম। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে বড়া মুচমুচে করে ভেজে তুলে রাখলাম। এই ভাবে সমস্ত পাটপাতার পকোড়া ভাজা হয়ে গেলে ,সবাইকে খাবারটেবিলে ডাক
দিলাম। কারণ গরম গরম পাটপাতার বড়া ভাজাই ছিল আমার রান্নাঘরের আজকের দুপুরের শেষ মেনু।
সবাই খাবার টেবিলে। তাকিয়ে তাকিয়ে আমার কাজকর্ম দেখছে। সবার পাতে সাজিয়ে দিলাম গরম গরম ভাত আর ২-৩টি করে পাটপাতার পকোড়া। যেই না সবার বড়ায় কামড় পড়েছে ,অমনি মচমচ করে শব্দ। দেখি সবার মুখ হাসিতে মজাতে ঝলমল করছে। বলেই ফেললাম, কি ? কেমন লাগছে ?. সবাই একসঙ্গে .........ওঃ ! দারুন ! দারুন ! .....দারুন খেতে হয়েছে ......আর তুমিও দারুন ........
আপনারাও দারুন দারুন থাকুন। সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন।
Comments