top of page

মাছের - ডিমের - বড়ার - সর্ষে - ঝাল

Updated: May 8, 2021


সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গেলো। কেমন যেন শীত শীত ভাব। মনে হয় ভোরবেলায় বৃষ্টি হয়েছে। বিছানা থেকে উঠে দেখি বাড়ির সামনের রাস্তাটা ভালো মতন ভেজা। গাছের পাতাগুলোও জলে ভেজা। ওঃ! কি স্বস্তি। কাল সারাটা দিন অসহ্য গুমোট গুমোট ছিল। তাই আজ বৃষ্টি। মনে হয় ভোর রাতেই মোটামুটি ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। বড়ো আরাম ! গুমোট কেটে গিয়ে একেবারে অন্য রকম ওয়েদার। আজ রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়া একটু শান্তিতেই হবে।


বাড়ির সামনের রাস্তার উল্টো দিকে একটা ছেলে ভ্যান রিক্সায় নানা রকমের মাছ নিয়ে বিক্রি করে। সদা হাস্যময় মুখ। কোনো বিরক্তি নেই। নিপুন হাতে নিজের কাজেই ব্যস্ত। খুব সকাল সকাল মাছ বিক্রি করতে শুরু করে। প্রচুর কাস্টমার। কিন্তু সবাই যেন খুশি। কোনো চিৎকার চেঁচামেচি নেই। এই মাছের বাজারে খুব শান্তি। খুব তাড়াতাড়ি সব মাছ বিক্রি হয়েও যায়।মনে মনে ভাবি ওর ব্যবসার আসল মূলধন ,ওর হাসি ,ওর নিষ্ঠা আর ওর কর্মদক্ষতা। সব সময়ে মনে হয় ,আমিও যেন এরকমই ধৈর্য্য নিয়ে হাসি মুখে আমার সব কাজ করতে পারি।


যাহোক ,আজ প্রায় দু কিলো মতন একটা রুইমাছ ওর দোকান থেকেই আমার রান্নাঘরে ঢুকেছে। কেটে পরিষ্কার করা ,সঙ্গে বেশ খানিকটা একেবারে টাটকা মাছের ডিম্। সঙ্গে সঙ্গে ঠিকই করে ফেললাম ,না --না --আজ মাছ নয় ,আমিষে থাকবে মাছের ডিমের একটা খুব মুখরোচক পদ। এই ওয়েদারে খেতে ভালোই লাগবে,খেয়ে শান্তিও লাগবে। মুখরোচক পদটি .............সর্ষে দিয়ে মাছের ডিমের বড়ার ঝাল। গরম গরম ভাতের সঙ্গে দারুন খেতে লাগে। দারুন স্বাদের রান্না। খুবই টেস্টি টেস্টি ।


উপকরণ :-


  • মাছের ডিম্ - ২৫০গ্রামের মতন

  • বেসন - ৪-৫ চামচ ( প্রয়োজনমতো )

  • গোটা সর্ষে -২৫ গ্রাম ( জলে ভেজানো )

  • কাঁচালঙ্কা - ২-৩টি গোটা আর ৩-৪টি কুচানো

  • পেঁয়াজ - ৪টি ছোট সাইজের ( একটু মিহি করে কুচানো )

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো

  • লাল লঙ্কাগুঁড়ো - প্রয়োজনমতো ( ইচ্ছে হলেই দেবেন ,নতুবা নয় )


পদ্ধতি :-



প্রথমেই ভেজা সর্ষে জল থেকে ছেঁকে নিয়ে মিক্সিতে দিলাম। দিলাম ২-৩টি কাঁচালঙ্কা। মিহি করে বেটে নিলাম। এবার মাছের ডিম্ হালকা করে ধুয়ে নিয়ে একটা পাত্রে নিলাম। দিলাম পেঁয়াজকুচি,কাঁচালঙ্কাকুচি ,প্রয়োজনমতো নুন,চিনি আর বেসন। ভালো করে হাত দিয়ে মেখে নিলাম। স্বাদও দেখে নিলাম।


গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে ডিম্ মাখা থেকে বড়ার আকারে কড়াইতে কয়েকটা দিলাম। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভালো করে ভেজে তুলে নিলাম। এইভাবে সমস্ত মাছের ডিম্ মাখা থেকে বড়া ভেজে নিলাম।



এবার কড়াই পরিষ্কার করে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে সর্ষে বাটা তেলের মধ্যে দিলাম। দিলাম হলুদ ,নুন,কয়েকদানা চিনি ,লাল লঙ্কাগুঁড়ো। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সমস্ত মিশ্রণ নাড়তে লাগলাম। মিশ্রনের জল শুকিয়ে তেল বেরিয়ে এলে ,রসার পরিমান ভেবে জল দিলাম। ঝোল ফুটে উঠতেই বড়াগুলো ঝোলের মধ্যে দিয়ে দিলাম। বড়া সমেত বেশি আঁচে ঝোল টগবগ করে ফুটতে লাগলো। জল কমে সর্ষে আর বড়া মাখো মাখো হয়ে এলে ,রান্নার স্বাদ দেখে গ্যাস বন্ধ করলাম। সর্ষে বাটা দিয়ে মাছের ডিমের বড়ার ঝাল তৈরি। এবার শুধুই খাওয়ার পালা।


দুপুরে সবার খাওয়ার শুরু নিরামিষ পদটি খুবই পছন্দের ছিল। এবার আমিষ পদ খেয়ে তো সবাই অবাক ! আজ সব রান্নাই অসাধারণ! মনে হচ্ছে এই সুন্দর ওয়েদারে তোমার মনটাও খুশিতে ভরপুর। সত্যিই তাই। বাবাঃ !ক - দিন কি ভীষণ কঠিন গরম। আর আজ ? ঠিক উল্টো। খুব সুন্দর আরামদায়ক পরিবেশ।মনতো ভালো থাকবেই ।


সবাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন,আনন্দে থাকুন।


4 views0 comments

Comments


bottom of page