গ্রীষ্মের শেষ আর বর্ষার শুরু ------- এখন বাজারে গেলেই দেখা যাবে, যারা মাছ বিক্রি করেন, তাদের কাছে বড়ো বড়ো কাটা রুই কাতলা রয়েছে | আর সঙ্গে রয়েছে বেশ টাটকা টাটকা মাছের ডিম | বড়োই টেস্টি টেস্টি !!!
আপনারা যারা মাছ ভালোবাসেন, তারা প্রায় সবাই জানেন গরম গরম মাছের ডিমের বড়া কতখানি মুখরোচক |
বাজারের থলি থেকে মাছ সবজি বার করতে গিয়ে দেখলাম ১ কেজি মতো টাটকা একটা রুই মাছ, খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো কাটা আর সঙ্গে রয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম মতো মাছের ডিম | বেশ ভালোই লাগলো |
ভাবলাম মাছের ডিম দিয়ে দুপুরে একটা সুন্দর মেনু ----- মাছের ডিমের বড়ার ডালনা বানিয়েই ফেলি | একটু নতুনত্ব হবে | অনেক অনেক উৎসাহ আর আনন্দ নিয়ে সবাইকে খুশি করতে তৈরী করতে শুরু করলাম মাছের ডিমের বড়ার ডালনা |
উপকরণ :-
মাছের ডিম্ - ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম
বেসন - প্রয়োজন মতো
কাঁচা লঙ্কা কুচানো - ২টি থেকে ৩টি
আলু - ৩টি মাঝারি সাইজের (খোসা ছাড়িয়ে ৪ টুকরো করে কাটা)
পেঁয়াজ - ২টি থেকে ৩টি ছোট সাইজের (মিহি করে কুচানো)
টমেটো - ১টি খুব ছোট (কুচানো)
আদা বাটা - ১ চামচ
রসুন বাটা - ১/২ চামচ
কাঁচা লঙ্কা বাটা - ২ চামচ
ছোট এলাচ - 4,৫টি
হলুদ - ১/২ থেকে ১ চামচ
জিরে গুঁড়ো - ২ থেকে ৩ চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো - ১ থেকে ১.৫ চামচ
নূন - প্রয়োজন মতো
চিনি - প্রয়োজন মতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজন মতো
গরম মশলা - ১/২ চামচ
ঘি - ১/২ চামচ
পদ্ধতি :-
মাছের ডিম খুব পরিষ্কার করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখলাম | একটা পাত্রে ১/২ কাপ বেসন নিয়ে, দিলাম নূন, কয়েকদানা চিনি, কুচানো কাঁচা লঙ্কা | খুব ভালো করে ফেটিয়ে একটা লেইএর মতো করলাম | এর মধ্যে দিয়ে দিলাম মাছের ডিম | ভালো করে মেখে মেখে বেসন আর মাছের ডিম মিশিয়ে নিলাম | মিশ্রনের স্বাদ দেখে নিলাম |
গ্যাসে কড়াই গরম করে তেল দিলাম | তেল গরম হলে ডিমের মিশ্রণ থেকে বড়ার আকারে কড়াইতে দিয়ে ভালো করে ভেজে তুলে রাখলাম | এই ভাবেই সমস্ত মিশ্রণ থেকে বড়া তৈরী করে নিলাম |
কড়াইয়ের বাকি তেলের মধ্যে আলু গুলো ছেড়ে দিলাম | দিলাম এক চিমটে হলুদ ও এক চিমটে নূন | রাঙা করে ভেজে নিয়ে আলু তুলে রাখলাম |
এবার এই কড়াইতেই প্রয়োজন মতো তেল দিয়ে ছেড়ে দিলাম ৪,৫ ছোট এলাচ আর পেঁয়াজ কুচি | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ নরম আর বাদামি করে ভেজে নিয়ে, দিলাম আদা বাটা, রসুন বাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা |
দু একবার নাড়াচাড়া করে, দিলাম ভাজা আলুর টুকরো গুলো, টমেটোর টুকরো গুলো, হলুদ, নূন, চিনি, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো (ঝাল অবশ্যই নিজের নিজের মতো) | খুব ভালো করে কষে নিলাম | মশলার সুন্দর গন্ধ বেরোলেই ২ কাপ মতো, অর্থাৎ রসার পরিমাণ ভেবে জল দিলাম |
ঝোল একটু ফুটে উঠলেই ভাজা বড়া গুলো ঝোলের মধ্যে দিয়ে দিলাম | ঝোল কিছুক্ষন টগবগ করে ফুটলে আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রান্নাটা হতে দিলাম |
আলু সুস্বিদ্ধ হয়ে গেলে, আঁচ বাড়িয়ে রসার পরিমাণ ঠিক করে নিলাম | ঝোলের স্বাদ দেখে নিলাম | দিলাম গরম মশলা ও ঘি | নেড়েচেড়ে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | রান্নাটা একটা ঢাকা দিয়ে রেখে দিলাম |
রান্না করেই বুঝতে পারলাম রান্না বেশ স্বাদের হয়েছে | আর ঝোলের মধ্যে ডিমের বড়া গুলো বেশ নরম নরম আর ঝোলে ভরপুর | আজ দুপুরে খাবার টেবিলে মনে হচ্ছে আমি জমিয়েই দেবো আমার রান্না করা ------- মাছের ডিমের বড়ার ডালনা ------- দিয়ে |
মনের আনন্দে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এগিয়ে গেলাম খাবার টেবিলের দিকে খাবার পরিবেশন করতে......
ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আনন্দে থাকবেন |
Comments