অসহ্য গরম ! রাতে তো ঘুম হচ্ছেই না ,আবার বিছানাতেও বেশিক্ষন থাকতে ইচ্ছা করছে না। তাই বাড়ির সবারই তাড়াতাড়ি বিছানা ছাড়া। সব কাজ এগিয়ে যাওয়া।আর তাড়াতাড়ি বাজারও এসে যাওয়া।
দেখি দেখি কি কি এলো বাজার থেকে ! কই ? মাছ কই ? এইতো পেয়েছি ,পেয়ে গেছি মাছের থলি। ওমাঃ! কি ভালো ,কি ভালো। রয়েছে একেবারে টাটকা অনেকগুলো কই মাছ। কই মাছ আমাদের,
মানে বাঙালিদের আরো একটি খুব প্রিয় মাছ। তেল কই ,কই ভাপা ,কই-য়ের গঙ্গা -যমুনা ইত্যাদি ইত্যাদি ..রান্নাগুলো মাছপ্রিয় বাঙালিদের বড়োই প্রিয়। কিন্তু আমি আজ রাঁধছি , কই মাছের ঝোল।
বড়ি আর খোসাসুদ্ধ আলু দিয়ে গরম গরম কই মাছের ঝোল ...গরম গরম ভাতের সঙ্গে দুপুরের মেনুতে দারুন।খুবই টেস্টি টেস্টি। তবে একটা কথা , খেতে শুধু অসাধারণই নয়, এই গরমে শরীরের পক্ষেও দারুন ভালো।সহজে হজমও হবে ,স্বস্তিও থাকবে।এই অসহ্য গরমে শরীর ভালো রাখাটাও খুবই দরকার।
যাই ,এবার রান্না শুরু করি .............।
উপকরণ :-
কই মাছ - ১কেজি ( খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে কাটা ১৭টি পিস)
বড়ি - ১৭ - ১৮ টি
আলু - ৫-৬টি ,মাঝারি সাইজের ( প্রত্যেকটি খোসাসুদ্ধ লম্বালম্বি ৬ টুকরো করে কেটে নিয়ে ,জলে ভিজিয়ে রাখা )
টমেটো - ১টি মাঝারি সাইজের ( টুকরো টুকরো করে কাটা )
গোটা কাঁচালঙ্কা - ৭-৮টি
পাঁচফোড়ন - ১.৫ থেকে ২ চামচ
হলুদ গুঁড়ো - ৩-৩.৫ চামচ
জিরেগুঁড়ো - ৩-৪ চামচ বা নিজের প্রয়োজনমতো
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
গোটা শুকনোলঙ্কা - ২টি ( একটু করে ফাটানো )
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো ( সামান্য ,রং আর স্বাদের জন্য )
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
( একটা বিশেষ কথা - এই রান্নায় ২-১ চামচ ধোনে গুঁড়ো দিলেও খুব ভালো হয়। কারণ ধোনে পেটের জন্য গরমে খুবই ভালো। শরীরও ঠান্ডা রাখে। )
পদ্ধতি :-
মাছগুলো একটু নুন মাখিয়ে ,নাড়াচাড়া করে নিয়ে বার বার জল ধুয়ে নিলাম। তারপর নুন হলুদ মাখিয়ে রাখলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হলেই নুন হলুদ মাখানো কই মাছগুলো কড়া করে ভেজে নিলাম।এবার বাকি তেলের মধ্যে বড়িগুলো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিলাম।
কড়াই পরিষ্কার করে তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিলাম ২টো ফাটানো শুকনোলঙ্কা , পাঁচফোড়ন আর খোসাসুদ্ধ ধোয়া আলুগুলো। দিলাম প্রয়োজনমতো হলুদ , নুন আর কয়েকদানা চিনি। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে আলুগুলো ভালো করে ভেজে নিয়ে দিলাম কাটা টমেটোর টুকরোগুলো, জিরেগুঁড়ো ,লঙ্কাগুঁড়ো (অবশ্যই দিতে পারেন ধনেগুঁড়ো )।এবার সমস্ত উপকরণ ভালো করে কষে নিলাম। মশলার ভাজা গন্ধ বার হতেই ঝোলের পরিমান ভেবে জল দিলাম।
কিছুক্ষনের মধ্যেই বেশি আঁচে ঝোল ফুটে উঠলো। ভীষণ সুন্দর গন্ধে রান্নার জায়গাটা ভরে উঠলো। ঝোলের মধ্যে দিলাম ভাজা কইমাছগুলো আর ভাজা বড়িগুলো। আঁচ কমিয়ে রান্না একটু হতে দিলাম। কই মাছের আর বড়ির মিষ্টি স্বাদ আর গন্ধ ঝোলে ছড়িয়ে গেলো। দিলাম কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা।
আলু সেদ্ধ হয়ে যেতেই ,রান্নার স্বাদও দেখে নিলাম। এবার আঁচ বাড়িয়ে ঠিক করে নিলাম ঝোলের পরিমান।গ্যাসও বন্ধ করলাম। স্বাদ চেখে তো বুঝেই গিয়েছিলাম খুব টেস্টি হয়েছে। মনে হয় সবারই ভালো লাগবে।
দুপুরের খাওয়া দাওয়া খুব আনন্দের সঙ্গে ,খুশি খুশি মনে শেষ হলো। সবারই এক কথা। অনেকদিন বাদে কইমাছের এই ঝোলটা অসাধারণ লাগলো। নতুন স্বাদে মন ভরে গেলো। বড়োই ভালো। বড়োই ভালো।
আপনারাও খুব খুব ভালো থাকুন ,আনন্দে থাকুন ,আর অবশ্যই সুস্থ থাকুন।
Comments