top of page

ঝিঙে - দিয়ে - পাবদা - মাছের - ঝোল


'' ঝিঙে দিয়ে পাবদা মাছের ঝোল ''---এই রুক্ষ গরমে ,অসহ্য গরমে-- দারুন এক হালকা মেনু। খেয়ে-- জিভে শান্তি ,মনে শান্তি ,পেটে শান্তি। ,যে ফলে বা সবজিতে জলের পরিমান বেশি ,সেগুলো কিন্তু এই কঠিন গরমে আমাদের শরীরের জন্য বড়োই উপকারী। যেমন তরমুজ ,শশা,ফুটি.ইত্যাদি ....ফল হিসাবে আর ঝিঙে ,লাউ,চালকুমড়ো.ইত্যাদি ইত্যাদি ......সবজি হিসাবে গরমে আমাদের খেতেই হবে। ঘাম ঝরে জল কমে শরীর যখন ক্লান্ত ,তখন এই জলীয় সবজি ,ফল গুলো খেলে আমাদের শরীরের জলের পরিমানের ভারসাম্য অনেকটা বজায় থাকে।



ক-দিন এতো এতো গরম ,যে কিছুই ভালো লাগছে না। খাওয়াতেও কেমন যেন অনীহা। বাড়ির সবাই কেমন যেন চুপচাপ। গরম ক্রমশই অসহ্য হয়ে উঠছে। একটু বৃষ্টি এখন বড়োই দরকার। ভাবলাম সবার মুখে হালকা রান্না দিয়েই যদি একটু স্বাদ আনা যায় ,মনে যদি অল্পও আনন্দ আনা যায়,তবে বোধহয় আমিই সবচাইতে খুশি হবো।


ভাবতে ভাবতে মনে হলো পাবদা মাছের হালকা ঝোল তো বেশ ভালো লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই মনে হলো ঝোলের মধ্যে যদি একটু ঝিঙে সবজি হিসাবে দিই ,তবে মনে হয় আরো জমে যাবে। ঠিক আছে ! ঠিক আছে ! ভালোই ভেবেছি। একদম ঠিক ভেবেছি। সকালে বাজার থেকে আনিয়ে নিলাম ছোট ছোট ১০-১২টি পাবদা মাছ আর ৭৫০গ্রাম মতো একেবারে কচি কচি ঝিঙে। গরম ভাত আর পাবদা- মাছের- ঝিঙে- দিয়ে- ঝোল........দেখি সবার ভালো লাগে কিনা!


উপকরণ :-


  • পাবদা মাছ - ৫০০-৬০০ গ্রাম মতো ( ছোট ছোট সাইজের ১০-১২টি )

  • ঝিঙে - ৭৫০ গ্রাম মতো ( খোসা ছাড়িয়ে লম্বালম্বি কেটে নিয়ে ,টুকরো টুকরো করে কাটা )

  • পেঁয়াজ - ২টি বা ১টি ( খুব ছোট ,কুচানো )

  • কাঁচালঙ্কা - ৩-৪ টি ( অর্ধেক করে চেরা ,ফোড়নের জন্য) আর গোটা ৩-৪টি

  • কালোজিরে - ১-১.৫ চামচ

  • হলুদগুঁড়ো - ২-২.৫ চামচ

  • জিরেগুঁড়ো - ২-৪ চামচ

  • ধনেগুঁড়ো -২-২.৫ চামচ

  • লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১.৫-২ চামচ

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে নিয়ে নুন হলুদ মাখালাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হতেই , পাবদা মাছগুলো কড়া করে ভেজে নিলাম। কড়াইয়ের ভাজা তেলের মধ্যেই আর একটু তেল দিয়ে দিলাম। তেলের মধ্যে দিলাম কালোজিরে আর কয়েকটি চেরা কাঁচালঙ্কা। দিলাম কুচানো

পেঁয়াজ। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ নরম করে ভেজে নিয়ে দিলাম ঝিঙের কাটা টুকরো গুলো ,কয়েকদানা চিনি আর হলুদগুঁড়ো।


সমস্ত উপকরণ বেশি আঁচে ভালো করে নাড়তে লাগলাম। কিছুক্ষন নাড়াচাড়া করে নিয়ে দিলাম জিরেগুঁড়ো,ধনেগুঁড়ো ,লাল লঙ্কাগুঁড়ো আর প্রয়োজনমতো নুন। বেশি আঁচে নাড়াচাড়া করতে করতে মশলা ভাজার সুন্দর গন্ধ বের হতেই দিলাম ,ঝোলের পরিমান ভেবে জল। বেশি আঁচে ঝোল ফুটতে শুরু করলেই আঁচ কমিয়ে ঝোল একটু হালকা করে ফুটতে দিলাম।


হালকা করে ঝোল কিছুক্ষন ফুটিয়ে নিয়ে ,বেশি আঁচে দিলাম ভাজা পাবদা মাছগুলো। ঝোল টগবগ করে ফুটতে লাগলো।কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা ঝোলের মধ্যে দিয়ে দিলাম। পাবদা মাছের কি সুন্দর মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ ঝোল থেকে বেরোতে লাগলো। ঝোলের

স্বাদ দেখে নিয়ে ,ঝোলের পরিমান ঠিকঠাক করে নিলাম।বার বার মনে হচ্ছে ঝোলের কি দারুন মিষ্টি গন্ধ। গ্যাস বন্ধ করে রান্না ঢাকা দিলাম।


দুপুরে খাবার টেবিলে খাওয়া শুরু হলো। এতো গরমের মধ্যেও 'পাবদা ঝিঙের ঝোল'-- মনে হলো সবার ভালোই লেগেছে।কারণ সবাই হাসি হাসি মুখে আমার দিকেই তাকিয়ে। বলে উঠলো আঃ!কি দারুন !বড়োই ভালো লাগলো। অপূর্ব ! জিভ আর মন দুটোই স্বাদে ভরে গেলো। একজন বলে উঠলো ,আজ আমাদের দিন ভালো।প্রথম কারণ - ভালো খাওয়া দাওয়া। আর দ্বিতীয়ত - মেঘে ঢাকা কালো আকাশ --দেখে মনে হচ্ছে ঝেপে... বৃষ্টি হবে। শরীরও স্বস্তিতে ভরে যাবে .........।

সবাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,অনেক অনেক আনন্দে থাকুন।

3 views0 comments

Comments


bottom of page