ক- দিন আগে ,সবাইমিলে একটু বেড়াতে গিয়েছিলাম। কাল রাতে ফিরেছি। যথারীতি আজ ঘুম একটু দেরিতে ভেঙেছে ,আর রোজকার বাজার আসতেও আজ একটু দেরিই হয়েছে.......................
বাজারের থলি থেকে মাছ - সবজি নামাতে গিয়ে দেখি ,সবজির থলিতে রয়েছে খুবই কচি কচি ১ কেজি মতো ঝিঙে। টাটকা সবজি দেখলেই মনটা কেমন ভালো হয়ে যায় ,তাই না ? ভেবেই ফেললাম ...আজ
কচি কচি ঝিঙের কোনো মেনু তো--- রাঁধবোই।দারুন লাগবে ! কিন্তু কি রাঁধবো ?.........সব সবজি আর মাছ গোছাতে গোছাতে দেখি মাছের থলিতে রয়েছে .......পাবদা আর চিংড়ি।
পাবদা বা চিংড়ি ঝিঙে দিয়ে রান্না করলে বেশ ভালোই লাগে।কোনটা রাঁধি? কোনটা রাঁধি ? ভাবতে ভাবতে ঠিক করে
ফেললাম চিংড়িমাছ আর ঝিঙে মেখে নিয়ে রান্না করবো। রান্না তাড়াতাড়িও হবে,আর খেতে ঠিক যেন এক মজাদার আচার।
রান্নাঘরে ঢুকে ,চিংড়ি মাছ ভালো করে পরিষ্কার করে ,ধুয়ে নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখলাম। কচি ঝিঙেগুলো সম্পূর্ণ খোসা ছাড়িয়ে ডুমো ডুমো করে কেটে নিলাম। ২-টি ছোট পেঁয়াজ খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট ডুমো করে কাটলাম আর অর্ধেক করে কেটে রাখলাম কয়েকটি কাঁচালঙ্কা। ব্যাস কেটেকুটে নিয়ে রান্নার উপকরণ তৈরি........
উপকরণ :-
চিংড়িমাছ - ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মতো ( মাঝারি সাইজের)
কচি ঝিঙে - ১ কেজি
পেঁয়াজ - ২টি ( মাঝারি সাইজের )
কাঁচালঙ্কা - ৭-৮টি ( ঝাল নিজের নিজের পছন্দমতো )
হলুদ - ১-২ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - স্বাদের কথা ভেবে অল্প ,প্রয়োজনমতো কয়েকদানা
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
খুব সহজ রান্না। পরিশ্রম খুবই কম। কিন্তু এই নতুন ধরণের রান্নাটা খেতে কিন্তু খুবই মুখরোচক। রান্নার করার জন্য কড়াই নিলাম। কড়াইয়ের মধ্যে দিলাম ,জলে ধুয়ে নিয়ে ,ডুমো ডুমো করে কাটা ঝিঙের
টুকরোগুলো ,পেঁয়াজের টুকরোগুলো ,অর্ধেক করে কাটা কাঁচালংকাগুলো ,নুন, হলুদ ,স্বাদ বাড়াতে কয়েকদানা চিনি ,প্রয়োজনমতো সর্ষের তেল আর নুন - হলুদ মাখিয়ে রাখা চিংড়িমাছগুলো।
কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ হাত দিয়ে ভালো করে মেখে নিলাম। গ্যাস জ্বালিয়ে ,ঝিঙে - চিংড়ি মাখা সমেত কড়াই
বেশি আঁচে গ্যাসে চাপলাম। কড়াই গরম হতেই আঁচ কমিয়ে রান্না অল্পক্ষনের জন্য মজতে দিলাম। এবার খুন্তি দিয়ে সমস্ত উপকরণ হালকা করে নেড়ে নিয়ে আবার আঁচ বাড়িয়ে দিলাম।
ঝিঙে থেকে জল বেরিয়ে রান্না হতে লাগলো। বাব্বাঃ! কি সুন্দর মিষ্টি স্বাদের গন্ধ। মন আনন্দে ভরে গেলো। আস্তে আস্তে কড়াইতে ঝিঙের জল কমে গিয়ে ,রান্না থেকে তেল বেরোতে শুরু করলো। এবার সমস্ত উপকরণ হালকা হাতে
একটু নেড়েচেড়ে নিয়ে রান্নার স্বাদ দেখে নিলাম। যেন একটু বেশিই ভালো হয়ে গেছে মনে হচ্ছে! তবে এ - রান্না ভালো হবেই হবে। যাহোক গ্যাস বন্ধ করে রান্নায় ঢাকা চাপা দিলাম।
খাবার টেবিলে সবাই কত কত খুশি ,তা বলে বোঝাতে পারবো না । তবে চিংড়ি - ঝিঙে -মাখা রান্না টা শেষ হতেও কিন্তু খুব দেরি লাগলো না। খুব তৃপ্তি করে ,স্বাদে ভরপুর হয়ে আমরা আনন্দের সঙ্গে দুপুরের খাওয়া শেষ করলাম।
একবার এই সহজ রান্নাটা করেই ফেলুন না !!! দেখবেন কতো কতো ভালো লাগছে ।....অবশ্যই সব্বাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,থাকুন অনেক অনেক আনন্দে।
Comments