top of page

গোলমরিচ - দইতে - মাখা - চিকেন ( GOLMORICH CHICKEN )


ক - দিন ধরেই প্রচন্ড গরম !! না ঝড় ...না বৃষ্টি | তাপমাত্রা হু হু করে বেড়েই চলেছে | আর যেনো পারা যাচ্ছে না | তবে আজকে সকালে ঘুম ভাঙা থেকেই শুরু হয়েছে অসম্ভব অসম .......ভব গুমোট গুমোট ভাব | মেঘলা আকাশ | চাপা চাপা গরমে শরীর হাঁসফাঁস হাঁসফাঁস করছে | দুপুরের মেনুতে খুবই হালকা হালকা রান্না | তবে আমার কেমন যেনো মনে হলো আজ বিকালে ঝড় - বৃষ্টি হবেই হবে | ফ্রিজে কিছুটা চিকেন আনাই ছিলো | তাড়াতাড়ি বের করে নিলাম |

নরম্যাল তাপমাত্রায় নিয়ে এসে একটু দই ,গোটাগোলমরিচ ,অল্প নুন আর খানিকটা সর্ষের তেল দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়ে আবার ফ্রিজে তুলে রাখলাম | রাতে ওয়েদার নরম হয়ে এলেই চিকেন এক চটপটা স্বাদে রেঁধে ফেলবো ....আর সবাই মজা করে ডিনার টেবিল জমিয়ে দেবো | গরম গরম রুটির সঙ্গে তো ভালো লাগবেই ....গরম ভাতের সঙ্গেও জমে যাবে | যার যেমন ইচ্ছে ...তেমনিই খাবে | মনের কথা মনেই থাকলো | কাউকে কিচ্ছু জানালাম না | অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা | দুপুরের খাওয়া সেরে সবাই বিছানায় একটু গড়িয়ে নিতে গেলাম |

হঠাৎ মনে হলো খুব জোর ঝড় উঠেছে | তাড়াতাড়ি উঠে ....খুলে রাখা জানলা গুলো বন্ধ করতে করতেই , বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো | হঠাৎই বৃষ্টি ......!!! কি ভালোই যে লাগছিলো .....তা মুখে বলে বোঝাতে পারবো না | অব.....শেষে বৃষ্টি হচ্ছে | আহা ..হা ..হা খুব..... খু .....উব ভালো লাগছে | মুহূর্তেই যেনো গুমোট গরম অনেক অনেক দূরে চলে গেছে | বৃষ্টির ঠান্ডা ঠান্ডা ঝাপটা | তৈরি হয়ে গেলো এক দারুণ স্বস্তির পরিবেশ | মনে তো হচ্ছে চিকেন ম্যারিনেট করে


রাখা , আমার সার্থক হবে | বিকালের চা ..টা সবাইকে খাইয়েই , শুরু করে দেবো রাতের রান্না ........গোলমরিচ - দই - দিয়ে - চিকেন ( golmorich chicken ) | স্পেশাল স্বাদের - স্পেশাল চিকেন |


মনে মনে আমিতো বেজায় খুশি | সকালে আমার চিন্তা - ভাবনাটা ঠিকই ছিল | এদিকে বিকালের ঠান্ডা ঠান্ডা আমেজে .......... হাসি - মজা আর গল্প গুজবে চায়ের টেবিল যখন জমে উঠলো ........ঠিক তখনি চায়ের কাপ হাতে আমি ধীরে ধীরে রান্নাঘরে ঢুকে পড়লাম | ম্যারিনেট করা চিকেনের পাত্রটা ফ্রিজ থেকে বার করে রাখলাম , নরম্যাল তাপমাত্রায় আনার জন্য | রান্নার অন্য সব উপকরণেরও জোগাড় করে রাখলাম | ম্যারিনেট করা চিকেন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এসে গেলেই , রান্না শুরু করে দেবো ............


উপকরণ :-

  • চিকেন - ১.৫ কেজির মতো , টুকরো টুকরো কেটে নিয়ে দই - নুন - গোটা গোলমরিচ আর প্রয়োজন মতো সর্ষের তেল দিয়ে .....ম্যারিনেট করা

  • দই - ২০০ গ্রামের মতো

  • গোটা গোলমরিচ - চা চামচের ৪-৫ চামচ

  • কাঁচালঙ্কা - গোটা ১০ - ১২টা

  • রসুন - মাঝারি সাইজের ১টা গোটা , কোয়া খোসা ছাড়িয়ে রাখা

  • আদা - ইঞ্চি দুয়েক , খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে রাখা

  • পেঁয়াজ - মাঝারি সাইজের , ৫০০ - ৬০০ গ্রামের মতো , মিহি করে কুচানো

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো , এই রান্নাটা কিন্তু সর্ষের তেলেই বেশি জমে ওঠে


পদ্ধতি :-


রান্না শুরুর প্রথমেই কাঁচালঙ্কা ,রসুনের কোয়া আর আদা কুচিগুলো ভালো করে ধুয়ে নিয়ে মিক্সিতে নিলাম | মিহি করে বেটে রাখলাম | গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল ভালোমতো গরম হয়ে উঠলেই , কুচানো পেঁয়াজ তেলে ছেড়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ ভাজতে লাগলাম | রান্নায় নুন - ঝাল - মিষ্টির ব্যালান্স রাখতে দিলাম কয়েকদানা চিনি আর দিলাম টমেটোর টুকরোগুলো | আবার আঁচ বাড়িয়ে পেঁয়াজকুঁচিগুলো আর টমেটোকুচিগুলো ভাজতে লাগলাম |

পেঁয়াজ হালকা বাদামি রংয়ের আর নরম হয়ে আসতেই , আঁচ কমিয়ে মিক্সিতে রাখা আদা - রসুনেকোয়া - কাঁচালঙ্কা বাটাটা কড়াইতে দিয়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সমস্ত ভালো করে কষতে লাগলাম | মশলা কষার সুন্দর গন্ধ বের হতে শুরু হতেই ম্যারিনেট করে রাখা চিকেন কড়াইতে দিয়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে ভালো করে নাড়তে লাগলাম | দিয়ে দিলাম আরো একটু নুন | আবার ভালো করে কষতে লাগলাম | বেশি আঁচে কষতে কষতে চিকেন থেকে জল বার হতে শুরু করলেই , আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে চিকেন মজতে দিলাম |

ওহো হো হো .....কি অপূর্ব গন্ধ বেরিয়েছে !!! জিভে জল এসে যাচ্ছে যে !!! ঢাকা খুলে আঁচ বাড়িয়ে কয়েকবার নেড়েচেড়ে নিয়ে , আবার ঢাকা দিয়ে চিকেন আরো কিছুক্ষন মজতে দিলাম | চিকেন হয়ে এসেছে মনে হতেই ঢাকা খুলে একটু চেখে দেখলাম | আহা.....আহা মন যে ভরে যাচ্ছে | এদিকে বাড়ির লোকজন তো অনেক্ষনই ব্যাপারটা বুঝে ফেলেছে | সবাই

আনন্দে একেবারে আহ্লাদিত | আমার উপরে সব্বাই বেজায় খুশি | শত শত প্রশংসায় একেবারে পঞ্চমুখ | আমিও তো এটাই চাইছিলাম | সবার খুশি তো আমার ও অনেক অনেক খুশি | এদিকে তো ,খুশি মনে নানা ভাবনা চিন্তার মাঝেই তৈরি হয়ে গেলো আমার অপূর্ব স্বাদের গোলমরিচ - দইতে - মাখা - চিকেন ( golmorich - chicken )| গ্যাস বন্ধ করে রান্নায় আবার দিলাম ঢাকা | খুলবো ....আমাদের ডিনার টেবিলে |

ওয়েদারটা যে .....এত্তো সুন্দর আর বেশ আরামদায়ক হয়ে উঠবে , তা কিন্তু প্রথমে বুঝতেই পারিনি | এখন ভীষণই ভালো লাগছে | সবাই খুব খুব উপভোগ করে ,আনন্দ করে রাতের খাওয়া শেষ করলাম | আজকে খাওয়ার চমকটা সব্বার খুবই ভালো লেগেছে | সবাই খুশি খুশি মনে যে যার বিছানায় পৌঁছে গেছে |


জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি বৃষ্টি ভেজা পিচের রাস্তায় আলো পরে কেমন চিকচিক করছে | রাস্তাঘাট বলতে গেলে ফাঁকাই | মাটি ভেজার সোঁদা সোঁদা গন্ধে .....আর গায়ে এসে লাগা বৃষ্টি ভেজা হাওয়াতে ......মনটা কেমন যেন এক অনাবিল আনন্দে ভরে উঠলো | এখন আনন্দ ..... শুধুই প্রাকৃতিক স্পর্শের আনন্দ .......| আমার মুগ্ধ চোখ জানলার বাইরে ....বেশ খানিক্ষন তাকিয়ে রইলো ....তাকিয়েই রইলো .........


সব্বাই খুব খুব আনন্দে থাকুন | মজা করে ,উপভোগ করে খুশি খুশি মনে খাওয়া দাওয়া করুন | অবশ্যই সুস্থ থাকুন |
















Comments


bottom of page