আজ ছুটির দিন। সবাই আজ বাড়িতে। সবাই একটু দেরি করেই বিছানা ছেড়েছে। আমিও একটু দেরিতেই উঠেছি। উফঃ ! ভীষণ ভীষণ গরম। সারা রাত দু চোখের পাতা এক করা যাচ্ছে না ! সবাই ক্লান্ত। কিন্তু ভোরের একটু ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া গায়ে লাগতেই ,সবারই দু চোখের পাতা এক হয়ে যায়। দেরিতে ঘুম আসা ,তাই একটু দেরিতে ওঠা।
চা -জলখাবার খেয়ে সবাই বললো ,আজ বড্ডো গরম। ঠিক স্বস্তি পাচ্ছি না। দুপুরে কি খাবো গো ?বললাম - পাতলা করে রুই মাছের ঝোল আর ভাত। সবাই কি আর বলবে ? চুপচাপ মেনে নিয়ে নিজের নিজের কাজে মন দিলো। সত্যিই তো ,এই গরমে যত হালকা খাওয়া যাবে ,শরীরও তত ভালো থাকবে। তাই মনে হলো সবারই আমার কথায় মত আছে।
বাজার থেকে রুই মাছ এসেও গেলো। মাছ ধোয়ার সময় দেখি ,সঙ্গে রয়েছে বেশ খানিকটা একেবারে টাটকা মাছের ডিম্। আনন্দে আমার মন ভরে উঠলো। বলতে লজ্জা নেই ,মাছের ডিম্ দেখলেই খুব ভালো লাগে। আহাহা ! গরম ভাতে গরম গরম মুচমুচে মাছের ডিমের বড়া।
অসাধারণ ! অসাধারণ !! নাঃ আজ সবাইকে প্রথম পাতে গরম গরম মাছের ডিমের বড়া খাইয়ে অবাক করে দেব। এখন কিছু বলবো না। সব কিছু প্রকাশ পাবে খাবার সময়।
দুপুরে মাছের ঝোল রান্নার সাথে সাথে নিঃশব্দে মুচমুচে মাছের ডিমের বড়া ভাজার প্রস্তুতিও করে রাখলাম। সবাই খাবার টেবিলে বসার আগেই গরম গরম ভেজে নেবো।
উপকরণ :-
মাছের ডিম্ - ১০০গ্রাম থেকে ১৫০গ্রাম মতো
পেঁয়াজ - ২টি ছোট সাইজের, একেবারে মিহি করে কুচানো
কাঁচালঙ্কা - ৫-৬টি ,মিহি করে কুচানো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - ২-১ দানা ,অবশ্যই স্বাদের জন্য
সর্ষের তেল - ভাজার জন্য।
হলুদ - খুব সামান্য
পদ্ধতি :-
মাছ ধোয়ার পর মাছের ডিম্ আলতো করে জলে ধুয়ে নিয়ে ,নুন আর সামান্য হলুদ মাখিয়ে রাখলাম। সব রান্না শেষ হয়ে গেলো। খাবার সময়ও হয়ে এসেছে। এবার মাছের ডিমের বড়া ভাজতে পারি।প্রথমে নুন হলুদ মাখানো মাছের ডিমের পাত্রের মধ্যে দিলাম ,মিহি করে কুচানো পেঁয়াজ ,মিহি করে কুচানো কাঁচালঙ্কা ,কয়েকদানা চিনি। খুব ভালো করে হাত দিয়ে সমস্ত উপকরণ মেখে নিলাম। ডিম্ মাখার স্বাদ ঠিকঠাক আছে কিনা ,সেটা অবশ্যই চেখে দেখে নিলাম।
হ্যাঁ ,একদম ঠিকঠাক হয়েছে। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল ভালোমতো গরম হতেই ,আঁচ কমিয়ে ডিম্ মাখা থেকে কয়েকটা ছোট ছোট বড়ার মতো করে কড়াইতে দিলাম। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে একেবারে মুচমুচে করে ভেজে নিলাম। এইভাবে সমস্ত মাছের ডিম্ মাখা থেকে বড়া ভেজে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলাম
ডাক পড়তেই সবাই খাবার টেবিলে উপস্থিত। তার মধ্যে একজন হঠাৎ বলে উঠলো ,কেমন সুন্দর একটা ভাজা ভাজা গন্ধ বেরোচ্ছে না ? কোনো কথা না বলে ,চুপচাপ সবার সামনে এগিয়ে দিলাম ২-৩টি মুচমুচে মাছের ডিমের বড়ার সঙ্গে গরম গরম ভাত। সবাই তো খুশিতে একেবারে আত্মহারা। একসঙ্গে বলে উঠলো ,এইরকমই তো চাইছিলাম। খেয়েই বলে উঠলো ,অপূর্ব ! অপূর্ব ! কি মুচমুচে ,আর কি টেস্টি ! টেস্টি। মাঝে মাঝেই করে তো ! খুব ভালো লাগে। ভালো তো লাগেই।
বানানো যত সহজ , খেতে তত মজা ! আপনারাও আনন্দ করুন মজা করুন। আর সুস্থ থাকুন ,ভালো থাকুন।
Comments