আজ আমার বাড়ির সবাই যেন একটু বেশিই খুশি | কারণ ? কারণ হলো আজ দুপুরের মেনুতে আমি রেখেছি ডিমের এক স্পেশাল মেনু | মাছের মেনু তো প্রতিদিনই ভাতের পাতে থাকে , মাঝে মাঝে থাকে চিকেন বা মটন ও | তবে ডিম্ বোধহয় আমরা বড়োরা বা ছোটরা সব্বাই একটু বেশিই পছন্দ করি তাই না ?? ডিম্ আমাদের সবার কাছে সব সময়েই স্পেশাল , কারণ ডিমের স্পেশাল স্বাদ |
তাছাড়া প্রোটিনে ভরা এমন একটি সহজপাচ্য স্বাদেভরা উপকরণ ,খুব কমই দেখা যায় যা আবার খুব সহজেই পাওয়াও যায় | ছোটদের সবল শক্তিশালী শরীর তৈরিতে এর ভূমিকা যেমন অসীম , তেমনি বড়োদের সবল শক্তিশালী রাখতেও এর প্রয়োজনীয়তা অসীম | সহজে ইমিউনিটি বাড়াতে মাঝে মাঝে ডিম্ আমাদের সক্কলের পাতে কিন্তু রাখতেই হবে | তবে ছোটদের অবশ্য অবশ্যই রোজ একটা করে ডিম্ খাওয়াই উচিত | আর দুর্বল রুগীদের সুস্থ করে তুলতে তো , এমন সহজ সুন্দর উপাদান সত্যিই আর হয় না |
আমি আজ রান্না করছি ডিমের ওমলেটের কষা কষা ঝাল (egg omelet curry) | খেতে খুব খুব ভালো লাগে | গরম ভাতের পাতে খাওয়ার ইচ্ছেটা যেমন অনেক অনেক বাড়িয়ে দেয় তেমনি খেয়ে দেয়ে মনের সুখটাও অনেক বেড়ে যায় | আর সত্যি বলতে কি একটুকরো কষা ওমলেট দিয়ে সব ভাত খেয়ে ও ফেলা যায় | আর কিচ্ছু লাগে না | কিচ্ছু না |
আজ বাড়ির সবার খুশি খুশি মুখ আমার খুবই ভালো লাগছে | সবার খুশি যে আমারই খুশি | তাছাড়া আমি ও তো ডিম্ খেতে বড্ডো ভালোবাসি | ভীষণ ভালোবাসি | আর তাই খুশি খুশি মনে সকালের কাজগুলো ও সুন্দর ভাবে গুছিয়ে গুছিয়ে সেরে ফেলতে লাগলাম | চটকদার টিফিন ও তৈরি করে নিলাম | আর সবাইকে খাইয়ে , সকালেই সকলকে খুশিও করে দিলাম | নিজে ও খুশি মনে দুপুরের মেনু তৈরি করতে রান্নাঘরে আবার প্রবেশ করলাম |
উপকরণ :-
ডিম্ - ১৪ পিস্
টমেটো - ১টা বড়ো সাইজের , বেটে রাখা
রসুন - খুব ছোট সাইজের একটা , কোয়াগুলো খোসা ছাড়িয়ে রাখা , বেটে ১ চামচ মতো
আদা - বাটা ২ চামচ মতো
পেঁয়াজ - ছোট - বড়ো মিলিয়ে ৫টি , বেটে নেওয়া
কাঁচালঙ্কা - ১৩-১৪ পিস্ , বেটে নেওয়া
ছোট এলাচ - ৪-৫ পিস্
লবঙ্গ - ৪-৫ পিস্
দারচিনি - ছোট সাইজের ২ টুকরো
হলুদগুঁড়ো - ১-২ চামচ
জিরেগুঁড়ো - ২ - ৩ চামচ
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২ থেকে ১ চামচের মতো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
ঘি - ২-৩ চামচ
পদ্ধতি :-
রান্নাঘরে ঢুকেই একে একে পেঁয়াজ , রসুন ,আদা, কাঁচালঙ্কা আর টমেটো বেটে পাত্রে পাত্রে তুলে রাখলাম | গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে অল্প তেল দিলাম | একটা পাত্রে ২টো ডিম্ একসঙ্গে ফাটিয়ে নিয়ে অল্প নুন দিয়ে নেড়ে নিলাম | তেল গরম হয়ে উঠলে , আঁচ কমিয়ে নিয়ে , ফেটিয়ে রাখা ২টো ডিমের মিশ্রণ কড়াইতে ঢেলে দিলাম | ওমলেটের রোলের মতো তৈরি করে , ২টো টুকরোতে ভাগ করে ফেললাম | ভাজা ওমলেটের টুকরোগুলো একটা পাত্রে তুলে রাখলাম | এইভাবে বাকি ডিমগুলো থেকেও অমলেটের টুকরো তৈরি করে নিলাম | ১৪ টা টুকরো |
এবার গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল গরম হয়ে উঠলে , আঁচ কমিয়ে কড়াইতে দিলাম পেঁয়াজ বাটা , ফাটানো ছোট এলাচ , দারচিনি আর লবঙ্গের টুকরোগুলো | আঁচ বাড়িয়ে সমস্ত নাড়তে লাগলাম | পেঁয়াজ ভাজার হালকা বাদামি রং হয়ে আসতেই দিলাম আদা বাটা আর রসুন বাটা | আবার আঁচ বাড়িয়ে সমস্ত ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম | এলাচ লবঙ্গ সমেত পেঁয়াজ ,রসুন ,আদা ভাজার সুন্দর ভাজা ভাজা গন্ধ বার হতে শুরু করলেই , আঁচ বাড়িয়ে কড়াইতে দিলাম টমেটো বাটা |
বেশি আঁচে কড়াইয়ের উপকরণ গুলো নাড়তে নাড়তে দিলাম হলুদগুঁড়ো , জিরেগুঁড়ো , অল্প লাল লঙ্কাগুঁড়ো আর প্রয়োজনমতো নুন | একটু নেড়ে নিয়ে রান্নায় স্বাদে চমক আনতে দিলাম কয়েকদানা চিনি | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কড়াইয়ের উপকরণগুলো সুন্দর করে নাড়তে লাগলাম | জিভে জল আনা সুন্দর গন্ধ বেরিয়েছে !! এখন নাড়াচাড়া করতে করতে কড়াইয়ের মিশ্রণ থেকে পুঞ্চ পুঞ্চ করে তেল বেরোতে শুরু করতেই , রসার পরিমান আন্দাজ করে নিয়ে , আঁচ বাড়িয়ে কড়াইতে দিলাম প্রয়োজনমতো জল |
বেশি আঁচে ঝোল টগবগ করে ফুটতে শুরু করলেই কড়াইতে ছেড়ে দিলাম ১৪টা অমলেটের টুকরো | ২-১বার বেশি আঁচে সমস্ত ফুটে যেতেই , আঁচ কমিয়ে রান্না মজতে দিলাম | রসা মাখো মাখো হয়ে আসতেই , রান্না চেখে দেখে নিলাম | আহা হা হা গো !! খেতে ...অপূর্ব ! অপূর্ব লাগছে | আর দেখে তো মনে হচ্ছে অমলেটগুলো ঝোলের রসে একেবারে টইটুম্বর !!
আনন্দে মন যেনো নাচানাচিই শুরু করে দিয়েছে | মন তো বলছে শুধু এই রান্নাটা দিয়েই দুপুরের একথালা করে ভাত আমরা সব্বাই খেয়েই ফেলবো | রান্না ঠিকঠাক হয়ে গেছে | এবার রান্নায় চটক বাড়াতে দিলাম অল্প গরম মশলাগুঁড়ো আর ২ চামচ ঘি | ২-১বার নেড়ে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করলাম | সুন্দর গন্ধে চারিদিক মো মো করতে লাগলো | বাহঃ বাহঃ খুব ভালো খুব ভালো !!!
সবাই পৌঁছে গেলাম আমাদের খাবার টেবিলে | টেস্টি টেস্টি ওমলেট কষা দিয়ে সবাই গরম গরম ভাত খাওয়া শুরু করলাম (egg omelet curry) | আর জমিয়ে জমিয়ে দুপুরের মেনু এনজয় করলাম | আর তাইতো , এখন আমরা সবাই খাওয়ার খুশিতে ভীষণই খুশি | তৃপ্তিতে একেবারে ভ...........................রপুর !!!
আপনারাও আনন্দে থাকুন | খুশিতে থাকুন |ভালো খান | আর অনেক অনেক সুস্থ থাকুন |
Comments