ক - দিন ধরে বৃষ্টি ভেজা ওয়েদার। সারাদিনে কখনো একটু গুমোট গুমোট ভাব ,কখনো হালকা রোদের দেখা ,আবার কখনো সখনো মুষলধারে বৃষ্টি। অসহ্য গরমের ভাবটা অনেকটা কেটে গেছে। তাই রাতের ঘুমও স্বস্তিতেই হচ্ছে।
কাল রাতে বৃষ্টি দেখছিলাম , খুব ভালো লাগছিলো। বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। ভাবতে ভাবতে ভেবে ফেললাম ,আজ দুপুরের আমিষে রাঁধবো ডিমের কোনো মেনু। বৃষ্টি ভেজা দিনে ভালোই লাগবে। সবাই রাজি ,কিন্তু ! সবার একটা কিন্তু রয়েছে।সবার ইচ্ছা ,আজ ডিমের ঝোল বা ঝাল না রান্না হয়ে যদি ডিমের অন্য কোনো রকম রান্না হয় ,তো বড়োই ভালো হয়। আরামদায়ক ওয়েদারে খুব জমে উঠবে ।
জমে তো উঠবে ,কিন্তু কি রাঁধবো ? কি রাঁধবো ?...........ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে হলো 'ডিমের মালাইকারি 'যদি রাঁধি? অনেকদিন রান্নাটা করা হয়নি। মনে হয় সবার ভালোই লাগবে । ওরে বাবাঃ ,ভালো লাগা তো দূরের কথা ,মুখের কথাটা বলতে না বলতেই ,সবাই আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। বলে উঠলো ,চমৎকার! চমৎকার! এই রকমটাই সব্বাই চাইছিলাম। যাক ,আমি নিশ্চিন্ত। খুবই সোজা রান্না। উপকরণ তো সব ঘরেই রয়েছে, সুতরাং রান্না শুরু করা যেতেই পারে।
উপকরণ :-
ডিম্ - ৮টি
নারকেলের দুধ - ২ কাপ মতো ( খুব কচি নারকেল মিক্সিতে পিষে নিয়ে ,সেই মিশ্রণ থেকে চেপে চেপে নারকোলের দুধ তৈরি করে নিতে হবে। তবে এখন বাজারেও নারকোলের দুধ কিনতে পাওয়া যায়। )
পেঁয়াজ - ২টি মাঝারি সাইজের ( মিহি করে কুচানো ,মিক্সিতে বেটে ও করা যায় )
রসুন - ৫-৬ কোয়া
আদা - ১/২ ইঞ্চি খানেক ( ছাড়িয়ে টুকরো করা )
কাঁচালঙ্কা - ৫-৬ টি গোটা
টমেটো - ১টি মাঝারি সাইজের ( টুকরো করে কাটা )
ছোট এলাচ - ৫-৬টি
লবঙ্গ - ৫-৬টি
দারচিনি -১.৫ ইঞ্চি মতো ( ভেঙে টুকরো টুকরো করা )
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ২-৩ চামচ ( ঝাল নিজের ইচ্ছা মতো )
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো ( অবশ্যই লাগবে )
সর্ষের তেল বা সাদা তেল - প্রয়োজনমতো ( সাদা তেল অবশ্যই ভালো )
পদ্ধতি :-
ডিমগুলো সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিলাম। মিক্সিতে রসুন ,আদা ২টি কাঁচালঙ্কা দিয়ে মিহি করে বেটে রাখলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে ১-১.৫ চামচ তেল দিলাম। তেল গরম হতেই দিলাম ছাড়ানো ডিমগুলো ,এক চিমটে লাল লঙ্কাগুঁড়ো ,এক চিমটে নুন ,কয়েকদানা চিনি। বেশি আঁচে ডিমগুলো খু ....উব হালকা করে ভেজে তুলে রাখলাম।
এখন কড়াইতে পরিমিত তেল দিলাম। দিলাম ছোট এলাচ ,লবঙ্গ ,দারচিনি আর কুচানো পেঁয়াজ। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ নরম করে ভেজে নিয়ে দিলাম ,মিক্সিতে বাটা রসুন ,আদা আর কাঁচালঙ্কা । ভালো করে কষতে লাগলাম। মিশ্রনের একটু ভাজা ভাজা গন্ধ বের হতেই দিলাম ,টমেটোর কাটা টুকরোগুলো ,নুন,চিনি আর প্রয়োজনমতো লাল লঙ্কাগুঁড়ো। ভালো করে কিছুক্ষন নেড়ে নিয়ে দিলাম নারকোলের দুধ।
কড়াইয়ের সমস্ত মিশ্রণ ফুটে উঠতেই ,দিলাম হালকা করে ভাজা ডিম্ গুলো আর গোটা কয়েকটা কাঁচালঙ্কা ।রসা বেশি আঁচে ফুটে কমে আসতেই ,রান্নার স্বাদ দেখে নিলাম। রান্না একেবারে তাক তাক হতে হবে। একদম ঠিক হয়েছে মনে হতেই ,রসার পরিমান একটু মাখো মাখো করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম। কি অপূর্ব গন্ধ ! রান্নার গন্ধেই মন ভরে গেলো। নিজেই বুঝতে পারলাম আজ সবারই ভালো লাগবেই।
সবাইকে ডাক দিয়ে খাবার টেবিলে গিয়ে দেখি ,ও বাবা ! সবাই আগে থেকেই চুপচাপ বসে আছে। দুপুরের খাওয়া শুরু হলো। ডিমের মালাইকারি খেয়ে সবাই অভিভূত। বললো অসাধারণ ! অপূর্ব ! খুব তাড়াতাড়ি আর একদিন রাঁধতেই হবে কিন্তু । বড্ডো ভালো হয়েছে।শুনে আমি খুব নিশ্চিন্ত।
আপনারাও রাঁধুন। আনন্দ করে খান। সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন।
Comentarios