top of page
Writer's pictureKaveri Nandi

দুধ - চালকুমড়া


আজ দুপুরে নিরামিষ মেনুতে রাঁধবো ---- দুধ - চালকুমড়া ----। দারুন ! দারুন এক মেনু। এই পুজোর মরশুমে এই মেনু ,বোধহয় একেবারে সঠিক এক মেনু। দুধ - চালকুমড়ার ভোগ ভোগ গন্ধই যেন পুজো পুজো অনুভূতিটাকে কিছুক্ষনের জন্যে ,আমাদের খুব কাছে এনে দেয়। মনে হয় পুজো চলেই এসেছে আমাদের এই ছোট ঘরটাতে। দারুন এক আনন্দের অনুভূতি।


আজ বাজারের থলি থেকে প্রথম সবজি টাই বার করেছি সবুজ আর খুব কচি একটা চালকুমড়া। আর ঠিক তখনিই------দুধ -চালকুমড়া রান্নার চিন্তা টাও করেই ফেলেছি। আসলে রান্নায় একটু বৈচিত্র মনে হয় অনেকেই খুব উপভোগ

করে , আনন্দ পায়। রান্না শিল্প এই পৃথিবীর এক বিশাল শিল্প। আর এই পৃথিবী তো নানা শিল্পকলায় সমৃদ্ধ। প্রতি শিল্পকলার শিল্পীরা চান ,তাদের শিল্পে এক নতুন রং দিতে। আর আমরা যারা রন্ধন শিল্পী ,তারাও চাই রান্নায় মাঝে মাঝে একটু নতুন তুলির টান দিতে। তাতে বোধহয় সবচাইতে খুশি হয়ে ওঠে ,আমাদের এই সংসারগুলো আর তাদের সদস্যরা।


রান্নাকে নতুন নতুন রঙে রাঙিয়েছেন আমাদের পূর্বসূরীরা। আমরা ,বর্তমান শিল্পীরাও চাইছি আমাদের শিল্পকলায় নতুন নতুন রঙের চমক আর আমাদের উত্তরসূরিরা ? তারাও কিন্তু একই পথগামী । এটাই কিন্তু প্রকৃত শিল্প কলার বিশেষ বৈশিষ্ট্য।


সবুজ সমৃদ্ধ চালকুমড়ো এক দারুন উপকারী সবজি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর তুলনা নেই। আবার নানা মুখরোচক খাবার তৈরিতে ও এর তুলনা মেলা ভার। গরম ভাতের সঙ্গে দুধ - চালকুমড়ো ,খেতে যে কি অসাধারণ , মুখের রুচি যে কত বাড়িয়ে দেয় ,জিভে এনে দেয় এক নতুন স্বাদের মাত্রা ,সেটা বোধহয় মুখে বলে বোঝানো যাবেই না ! অবশ্যই একবার -----একবার খেয়ে দেখতেই হবে। সবচাইতে বড়ো কথা ,রান্নাটা বড়োই সহজ রান্না। চাপাও আর নামও।


ছোট বাচ্চারা এই রান্নাটা কিন্তু ভালো খায়। যারা নিরামিষ ভোজী তাদের কাছে তো খুবই প্রিয় এক মেনু।আর রান্নাটা হালকা অথচ মুখের স্বাদ বাড়াতে তুলনাহীন। তাই এই পুজো পুজো আবহাওয়ায় ,সবার স্বাদে একটু অন্য মাত্রা আনতে আমি চললুম আমার প্রিয় রান্নাঘরটিতে .................


উপকরণ :-

  • চালকুমড়ো - ১ টা মাঝারি সাইজের

  • দুধ - ছোট কাপের ১/২ কাপ মতো

  • কিশমিশ - ৫০গ্রামের মতো

  • ছোট এলাচ - ২টি

  • লবঙ্গ - ২টি

  • দারচিনি - খুব ছোট্ট এক টুকরো

  • তেজপাতা - ২টি ছোট মতন

  • গোটা শুকনোলঙ্কা - ৪টি একটু করে ফাটানো

  • ঘি - ৩-৪ চামচ

  • সাদা তেল - ১-১.৫ চামচ

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


প্রথমে চালকুমড়োটা খোসা ছাড়িয়ে ,কয়েকটা বড়ো বড়ো টুকরো করে নিয়ে জলে ধুয়ে নিলাম। এবার একটা সবজি কুড়ানিতে সমস্ত চালকুমড়োটা কুড়িয়ে ফেললাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে দিলাম। কড়াই গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিলাম ১ চামচ সাদা তেল ,১চামচ ঘি ,ছোট এলাচ ,লবঙ্গ ,দারচিনি ,গোটা শুকনোলঙ্কা ,তেজপাতা আর কিশমিশ গুলো।


আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিয়েই কড়াইতে দিলাম কুড়ানো চালকুমড়া। দিলাম প্রয়োজনমতো নুন আর চিনি। বেশি আঁচে কয়েকবার নেড়ে নিয়ে আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে চালকুমড়া মজতে দিলাম। চালকুমড়া থেকে বেরোনো জলেই ,চালকুমড়া মজতে লাগলো।


আহা - হা - হা ..........রান্না থেকে কি সুন্দর গন্ধ বেরিয়েছে ! চারিদিক মধুর গন্ধে ভরে উঠেছে। রান্নার গন্ধে মন বড়োই খুশি .......... ঘ্রানেন অর্ধনম ভোজনম ......। কড়াইয়ের ঢাকা খুলে দেখি রান্না একেবারে মজে গেছে। রান্নার স্বাদ দেখে নিয়ে ,বেশি আঁচে কড়াইতে দিলাম দুধ। দুধ - চালকুমড়া মাখো মাখো হয়ে এলেই রান্নায় ২ চামচ ঘি দিয়ে ,একটু নেড়ে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম। রান্নায় দিলাম একটা ঢাকা।


দুপুরে খাবার টেবিলে আমরা সবাই আজ খুশি খুশি। উৎসবের মেজাজ নিয়েই খাওয়া শুরু করলাম। দারুন ! দারুন লাগছিলো। খুব আনন্দ করে খাওয়া দাওয়া শেষ ও হলো। সবার মুখে হাসি ,মনে তৃপ্তি আর অনেক অনেক আনন্দ।


অনেক অনেক আনন্দে আপনারাও থাকুন। ভালো ভালো খাওয়া দাওয়ায় মন খুশিতে ভরে উঠুক। আর অবশ্যই থাকুন সুস্থ।

25 views0 comments

Comments


bottom of page