গরম পড়তে না পড়তেই চারিদিকে অসহ্য গরম। তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। খুব বেশি গরম সহ্য করা ,প্রত্যেকের কাছেই ,বিশেষ করে যাদের পথে ঘাটে কাজ ,তাদের কাছে তো খুবই ভীতিকর। কিন্তু আজ সকাল থেকেই আকাশ ছিলো মেঘলা ,একদম রোদ ছিলই না। একটু স্বস্তি। বিকালের দিকে ২-১ ফোঁটা বৃষ্টি পড়লো। আবহাওয়াটা বেশ আরামদায়ক হয়ে গেলো। মনটা খুশি খুশি হয়ে গেলো।
হঠাৎ খেয়াল করলাম ,বাড়ির সবাই ফিস ফিস করে কি সব বলাবলি করছে। আমাকে দেখেই সবাই চুপ করে গেলো। কি হলো ? সবাই আমাকে দেখে চুপ করে গেলে কেনো?.....সবার মধ্যে একজন আস্তে করে বলে উঠলো ,ওয়েদারটা কি সুন্দর না ! আমি বলেই ফেললাম ,কেনো ?....রাতে খাওয়ার পাতে নতুন কোনো মেনু চাই ,তাইতো ? এবার সবাই একসঙ্গে জোর গলায় বলে উঠলো ,বুঝলে কি করে ?
বললাম আমাকে একটু চিকেন আর টকদই এনে দাও। চটজলদি একটা মুখরোচক মেনু তৈরি করে দিচ্ছি। যা গরম ভাতের সঙ্গেও ভালো লাগবে ,আবার গরম গরম রুটির সঙ্গেও ভালো লাগবে। সবাই আমার কথাতে খুব অবাক ,আবার খুব খুশিও বটে।মুহূর্তের মধ্যে চিকেন আর টকদই জোগাড় হয়ে গেলো ,রান্নাঘরে পৌঁছেও গেলো। বাঃ!!! সবাই দেখছি একনিষ্ঠ কর্মী। বেশ ভালো। মনে মনে হাসতে হাসতে রান্নাঘরে ঢুকে গেলাম। রান্নার বাকি সব উপকরণ ঘরেই ছিলো। সব এক জায়গায় জোগাড় করে নিয়ে রান্না শুরু করলাম।
উপকরণ :-
চিকেন - ১কেজি ১০০ গ্রাম ( টুকরো টুকরো করে কাটা )
টকদই - ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম ( যার যেমন ইচ্ছা ,সেইমতো ব্যবহার করবেন )
পেঁয়াজ - ৬-৮টি ( খোসা ছাড়িয়ে বড়ো বড়ো টুকরো করে কাটা )
রসুন - ৮-১০ কোয়া ( খোসা ছাড়িয়ে কুচানো )
আদা - ইঞ্চি খানেক ( খোসা ছাড়িয়ে কুচানো )
টমেটো - ২-৩টি ( বড়ো বড়ো টুকরো করে কাটা)
কাঁচালঙ্কা - প্রয়োজনমতো ( অর্ধেক করে ফাটানো )
হলুদ - ২-৩ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - কয়েকদানা ( স্বাদের জন্য )
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
চিকেন হালকা করে ধুয়ে নিয়ে কড়াইতে নিলাম। কড়াইয়ের মধ্যে দিলাম টকদই। চিকেনের সঙ্গে ভালো করে মেখে নিলাম। এবার দিলাম হলুদ ,নুন ,চিনি ,কাটা পেঁয়াজের টুকরো ,কুচানো রসুন ,কুচানো আদা ,বড়ো বড়ো টুকরো করে কাটা টমেটো ,প্রয়োজনমতো অর্ধেক করে কাটা কাঁচালঙ্কা আর প্রয়োজনমতো সর্ষের তেল। সমস্ত উপকরণ হাত দিয়ে খুব ভালো করে মেখে নিলাম।
গ্যাসে বেশি আঁচে উপকরণ সমেত কড়াই চাপলাম। কড়াই ভালোমতো গরম হতেই ,হালকা করে একটু নাড়াচাড়া করে নিলাম। এবার আঁচ কমিয়ে ,একটা ঢাকা দিয়ে চিকেন হতে দিলাম। কিছুক্ষন বাদে ঢাকা খুলে দেখি ,দই চিকেন থেকে বেশ জল বেরিয়েছে। কি সুন্দর গন্ধ ! ভালো লাগলো। দেখলাম চিকেনও নরম হয়ে এসেছে। রান্নার স্বাদও দেখে নিলাম। অপূর্ব লাগছে। আজকে রাতের খাবার জমে যাবেই। আঁচ বাড়িয়ে রসার পরিমান আমার ইচ্ছামতো করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করলাম।
খাবার টেবিলে সবার খুশিতে ভরা মুখ।দই চিকেন কেউ খেলো গরম ভাতের সঙ্গে ,কেউ খেলো গরম রুটির সঙ্গে।সবার একই কথা , কি অপূর্ব ! সুন্দর স্বাদে ভরা।রোজ খেলে হয় না ?.......না ,না মাঝে মাঝে। সত্যিই রান্নাটা খুব সহজ ,খুব তাড়াতাড়ি হয় ,অসম্ভব স্বাদে ভরা ,অথচ তেল মশলা খুব খুব কম। চিকেনের রসা যেন টেস্টি টেস্টি স্যুপ। যারা রসা খেতে চাইবেন না। চিকেন রান্না মাখো মাখো করে নিতে পারেন। খুব খুব ভালো লাগবে।
ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন ,আর ? অবশ্যই আনন্দে থাকবেন।
Comments