কাল থেকে ভালো বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ তো সারাটাদিন বৃষ্টি আর বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে তো কখনো ঝিরঝিরে। গরম নেই বললেই চলে। আমি এখন ,রাতে খাওয়া দাওয়ার পর ড্রইং রুমের জানলার কাছে বসে আছি। এখন বৃষ্টি নেই। বাইরেটা দেখতে কি সুন্দর লাগছে। জানলা দিয়ে বৃষ্টি ভেজা ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া। শরীর -মন দুটোই যেন স্বস্তিতে ভরে যাচ্ছে। বড়োই ভালো লাগছে।
দুপুরে সবারই খিচুড়ি আর ডিমভাজা খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল। বললো এই ওয়েদারে খুব ভালো লাগবে। সেকি !! আমি তো দুপুরের রান্না অনেকটা এগিয়ে এনেছি। ঠিক আছে ,রাতে ঠিক খিচুড়ি নয় ,ডালে - চালে একটু মুখরোচক করে রান্না করবো। সঙ্গে গরম গরম ডিমের ওমলেট। মুখের কথা শেষ হতে না হতেই সব্বাই বলে উঠলো ,ঠিক আছে -ঠিক আছে। সেটা মনে হয় বেশিই ভালো হবে।
আসলে চালে- ডালে প্রিপারেশন টা ভীষণ সহজ ,কিন্তু প্রচুর প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরা। শুধু গোবিন্দভোগ চাল, ডাল ,নুন আর একটু ঘি বা মাখন .....বাচ্চা - বড়ো সবার জন্য খুব ভালো ,খুব উপকারী। অনেকদিন কেউ অসুখে ভোগার পর ,মুখের স্বাদটা হারিয়ে ফেলে। তখন এই রকম ভাবে রেঁধে দিলে কিন্তু সত্যিই মুখে স্বাদ যেন একটু হলেও ফিরে আসে। আমি এই রান্নাটাকেই বাড়ির সবার জন্য একটু মুখরোচক করার চেষ্টা করছি। সন্ধ্যে বেলায় সবাইকে চা - টা খাইয়ে ,আমার চালে - ডালে রান্নায় মন দিলাম।
উপকরণ :-
গোবিন্দভোগ চাল - ২ কাপ
মুসুরির ডাল - ১ কাপ
মুগের ডাল - ১ কাপ
আলু - ৩টি মাঝারি সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে ডুমো ডুমো করে কেটে জলে ভেজানো (
গোটা কাঁচালঙ্কা ৭-৮টি ( একটু করে ফাটানো)
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - কয়েকদানা ( স্বাদের জন্য )
সাদা তেল - ২-৩ চামচ(চায়ের চামচের মাপে )
ঘি - ৩-৪ চামচ ( চায়ের চামচের মাপে )
পদ্ধতি :-
গোবিন্দভোগ চাল ,মুসুরডাল,মুগডাল ভালো করে ধুয়ে হাঁড়িতে নিলাম। দিলাম পরিমান মতো জল। গ্যাস জ্বালিয়ে হাঁড়ি গ্যাসে বসিয়ে দিলাম। বেশি আঁচে চাল ডালের মিশ্রণ ফুটে উঠলে ,আঁচ কমিয়ে দিলাম। গ্যাসের দ্বিতিয় ওভেন জ্বালিয়ে একটা কড়াই বসলাম। কড়াইতে ২-৩ চামচ সাদা তেল দিলাম।
তেল গরম হলে ,জলে ধোয়া ডুমো ডুমো করে কাটা আলুগুলো কড়াইতে দিলাম। দিলাম কয়েকদানা চিনি আর প্রয়োজনমতো নুন। বেশি আঁচে নাড়াচাড়া করে নিয়ে দিলাম ৭-৮টি ফাটানো কাঁচালঙ্কা। আবার নাড়াচাড়া করে নিয়ে আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে আলু সেদ্ব হতে দিলাম। মাঝে মাখে ঢাকা খুলে ভালো করে নেড়ে দিতে লাগলাম। জল দিইনি কিন্তু।
এদিকে হাঁড়িতে রাখা চাল ডালের মিশ্রণও মাখে মাঝেই নাড়তে লাগলাম। দিলাম প্রয়োজনমতো নুন। নেড়েচেড়ে আবার একটু হতে দিলাম। ধীরে ধীরে আলু কম আঁচে নরমও হয়ে গেলো আর একটু ভাজা ভাজাও হয়ে গেলো। আলুর স্বাদ দেখে গ্যাস বন্ধ করলাম। এদিকে খেয়াল করলাম
চালে - ডালেও হয়ে এসেছে। এবার কড়াইতে রাখা নরম নরম অল্প অল্প ভাজা আলুগুলো
হাঁড়িতে দিয়ে ,দিলাম ৩-৪ চামচ ঘি। হাঁড়ির সমস্ত মিশ্রণ ভালো করে নেড়েচেড়ে নিয়ে ,স্বাদ দেখে নিলাম। আহাহা ! বড়োই সুন্দর হয়েছে। হালকা অথচ অসম্ভব স্বাদে ভরপুর। গ্যাস বন্ধ করে রান্না ঢাকা দিয়ে রাখলাম।
নৈশ-ভোজে সবার পাতে গরম গরম চালে - ডালে আর সঙ্গে গরম গরম ডিমের ওমলেট। খাওয়াটা যে কি ভালো হলো ,আর কতো মুখরোচক হলো ,তা বোধহয় সবাইকে মানে আপনাদের বুঝিয়ে বলতে হবে না। নিজে নিজেই বুঝে গিয়েছেন।
সবাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন,আনন্দে থাকুন আর অবশ্যই খুব আনন্দ নিয়ে খাওয়া দাওয়া করুন। তাহলে দেখবেন মনও ভালো আছে।
Comments