top of page
Writer's pictureKaveri Nandi

শুকনোখোলায় - চিঁড়েভাজা (Chirebhaja)



বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে আসছে | তাড়াতাড়ি ঘরে ঘরে আলো জ্বালিয়ে দিয়ে , রান্নাঘরের দিকে এগোলাম, বিকালের চা তৈরি করতে | হঠাৎ...... টিংটং - টিংটং কলিংবেলের আওয়াজ | দরজা খুলে দেখি , হাসিহাসি মুখে দাঁড়িয়ে আমার তিন প্রতিবেশী | আমি কিছু বলার আগেই , ঘরে ঢুকতে ঢুকতে একজনতো হাসতে হাসতে বলেই উঠলো ..." কি ভাই ? চা করছো ? ....আমরাও কিন্তু চা - টা খেতেই চলে এলাম | "


" ওমা ! সে কি কথা !! নিশ্চয় নিশ্চয় তোমরা বোসো , আমি চা করে আনছি | আমরা সবাই আজ আনন্দ করে একসঙ্গেই বিকালের চা টা খাবো |" বলতে বলতে আমি রান্নাঘরে ঢুকে পড়লাম , চা তৈরি করতে | বাড়ির বাকি সদস্যরা ওদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে গেলো | সবাই কিন্তু চায়ের টেবিলেই |



সব তো ঠিকঠাক | কিন্তু ? কিন্তু ওদের একটা কথা আমার কানে গুন্ গুন্ করেই চলেছে ....চায়ের সঙ্গে টা | মন বলছে ,..আর আমি ও নিশ্চিত চায়ের সঙ্গে ওরা কিছু মুখরোচক চাইছে , কিন্তু সেরকম ব্যবস্থা তো নেই , তবে এতো তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি কি তৈরি করবো ? বিস্কুট তো মনে হয় ওরা খেতে চাইছে না | তবে কি পাঁপড় ভাজা ...? না কি চিঁড়েভাজা ?


চিঁড়েভাজা (Chirebhaja) ভাবতেই মনে হলো , তাইতো শুকনোখোলায় তেলছাড়া খুব মুখরোচক করে তো চিঁড়ে ভেজে চায়ের সঙ্গে দিতেই পারি | তাছাড়া খাবারটাও হবে কিন্তু " খুব খুব হেলদি আর টেস্টি |" ওরাও খাবে আর আমরা ও , বাড়ির সব্বাই ও খাবো | বাঃ ! বাঃ ! জলদি জলদি তৈরিতে বেশ খাসা চিন্তা | আর কিচ্ছু না ভেবে চা - টা তৈরিতে মন দিয়ে দিলাম |


উপকরণ :-


  • শুকনো চিঁড়ে - ২০০ - ২৫০ গ্রাম

  • কাঁচা বাদাম - ৫০ গ্রাম

  • পাঁপড় - ৫-৬টা

  • আদা - ১ থেকে ১.৫ চামচ , মিহি করে কুচানো

  • রসুন - ১থেকে ২ চামচ , মিহি করে কুচানো

  • কাঁচালঙ্কা - ১ চামচ , মিহি করে কুচানো

  • বিট নুন - প্রয়োজনমতো





পদ্ধতি :-


গ্যাসের এক ওভেনে চা তৈরি করতে লাগলাম | আর অন্য একটি ওভেন জ্বালিয়ে একটা পরিষ্কার কড়াই চাপিয়ে দিলাম | কড়াই গরম হলে আঁচ কমিয়ে , শুকনো চিঁড়েগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে শুকনোখোলায় নাড়াচাড়া করতে লাগলাম | চিঁড়ে মুচমুচে হতে হতে চা ও তৈরি হয়ে গেলো | এদিকে চিঁড়ে মুচমুচে হয়ে গেছে দেখে, শুকনো ভাজা চিঁড়ে একটা পাত্রে ঢেলে রাখলাম |



এবার খালি কড়াইতে দিয়ে দিলাম কাঁচা বাদাম গুলো | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়িয়ে চাড়িয়ে বাদামগুলো ও মুচমুচে করে ভেজে ফেললাম | ভাজা হয়ে গেছে মনে হতেই কড়াই থেকে ঢেলে নিয়ে আর একটা পাত্রে রেখে দিলাম | এবার কড়াই পরিষ্কার করে , আঁচ কমিয়ে কড়াইতে দিয়ে


দিলাম কুচানো আদা , কুচানো রসুন আর কুচানো কাঁচালঙ্কা | কুচানো আদা , রসুন আর কাঁচালংকার মধ্যে দিয়ে দিলাম প্রয়োজন মতো বিটনুন | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়তে লাগলাম |


এদিকে খালি ওভেনটাতে পাঁপড়গুলো সেঁকে রাখলাম | অন্যদিকে কড়াইতে কুচানো আদা , রসুন আর কাঁচালঙ্কা মড়মড়ে , মুচমুচে হয়ে গেলে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | এর মধ্যে বাইরে চায়ের টেবিল থেকে আওয়াজ উঠলো .....".কি হলো ? কই চা কই ? " আমিও চিৎকার করে বলে উঠলাম ...." আসছি ..আসছি |"


তাড়াতাড়ি একটা বড়ো পাত্রতে নিয়ে নিলাম , শুকনোখোলায় ভাজা চিড়ে , বাদাম সেঁকে রাখা পাঁপড় আর আন্দাজমতো ভেজে রাখা বিটনুন সমেত আদা - রসুন - কাঁচালংকার মিশ্রণটি | খুব ভালো করে হাত দিয়ে মেখে নিলাম | ভালো করে মিশিয়ে মিশিয়ে নিলাম | আর সবার জন্য বাটিতে বাটিতে তুলে নিলাম ........তেলছাড়া হেলদি - টেস্টি অথচ পুষ্টিতে ভরপুর একটা খাবার |



ট্রেতে সাজিয়ে ফেললাম শুকনোখোলায় ভাজা চিঁড়ের (Chirebhaja) বাটিগুলো আর কাপে কাপে চা | পৌঁছে গেলাম বিকালের চায়ের টেবিলে | সবার সামনে রাখলাম ভাজা চিঁড়ের বাটি সঙ্গে কাপে কাপে চা | আমার এই সামান্য ব্যবস্থাপনায় সবাই তো বেজায় খুশি | খুশি খুশি মুখে ভাজা চিঁড়ে মুখে দিতেই সবার সমবেত চিৎকার ....অপূর্ব ! অপূর্ব !! ওহো হো হো অপূ............র্ব স্বাদ ! খুব ভালো ! খুব ভালো লাগছে ! তবে কিন্তু..... .আবার হবে ....আমরা আবার খাবো........| আর আমার ?? ভালো লাগছিলো .......খু...........ব ভালো খুব ভালো খুব ভালো .........


ভালো থাকুন | ভালো খান | জমিয়ে খান | আনন্দে থাকুন | সুস্থ থাকুন |

1 view0 comments

Comments


bottom of page