বেগুন ....বে--গুন...কোনো গুন নেই .....উহু - হু - হু - হু ....এই চিন্তা কিন্তু কেউ মনেও আনবেন না। অনেক গুনে ভরপুর এক স্পেশাল রঙে রাঙা এই সবজি । বাজারের নানা সবুজ সবজির মাঝে ..বেগুনি রঙের বেগুন আগেই চোখে পড়ে যায়। স্বাদও কিন্তু স্পেশাল। বেগুন ভাজা ,গরম গরম
বেগুনি....... কি দারুন টেস্টি টেস্টি বলুন তো !!। সুগার রোগীদের তো অনেক বড়ো বন্ধু এই বেগুন। খাদ্য তালিকায় রোজ বেগুনের নানা রকম রান্না ...যেমন বেগুন ভাতে ,বেগুন ভাপা ,বেগুন ভর্তা ,বেগুন পোড়া বেগুনের চচ্চড়ি প্রভৃতি.....সুগার নিয়ন্ত্রণে খুবই সাহায্য করে। তাছাড়া বেগুন সহজে কিন্তু হজমও হয়ে যায়।মোটকথা সহজপাচ্য। আর চিংড়ি ? কি ভাবে -কি বলবো ! চিংড়ি প্রিয় মানুষজনই জানেন ,চিংড়ি মাছ ...রান্নাঘরের কি অসাধারণ স্বাদের এক আমিষের উপকরণ।
চিংড়ি - বেগুন .........দারুন দারুন স্বাদের এক রান্না ! যারা চিংড়ি আর বেগুন দুই খুব পছন্দ করেন ,তাদের খুবই পছন্দের এক মেনু। গরম গরম ভাত ,পেঁয়াজ ফোরণে মুসুরির ডাল, চিংড়ি-বেগুন আর ? আর সঙ্গে
এক টুকরো কাগজী -গন্ধরাজ বা পাতি লেবু ....ভাবলেই জিভে জল!!!.... খাওয়া তো জমে উঠবেই ,সঙ্গে সঙ্গে দারুন স্বাদে - গন্ধে মন -প্রাণ ও ভরে উঠবে।
এই গুমোট গরমে একটু হালকা করে রান্না করা মেনু খুবই ভালো লাগে। আর তা যদি টেস্টি টেস্টি হয় ,তবে তো কোনো কথাই হবে না। সবারই হবে তৃপ্তির আহার। আর তাই আজ আমার দুপুরের মেনুতে রেখেছি ...চিংড়ি-বেগুন ....গরম গরম ভাত ,গরম গরম ডাল ,আলু ভাজা আর সঙ্গে একটুকরো গন্ধরাজ লেবু। আমারও পছন্দ ...আর বাড়ির সবারও পছন্দ।
মনে মনে মেনু তো ঠিক করেই ফেলেছিলাম.......সকালে রান্নার সব উপকরণ জোগাড় করেও ফেললাম। সবাইকে চা - জলখাবার খাইয়ে ,নিশ্চিন্ত মনে রান্নাঘরে ঢুকলাম ,দুপুরের রান্নার প্রথম মেনু ....চিংড়ি-বেগুন রাঁধতে ......................। এই রান্নার এক স্পেশাল উপকরণ --ধনেপাতা ।
উপকরণ :-
চিংড়ি মাছ - ৪০০ গ্রামের মতো ছোট ছোট সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করা )
বেগুন - ৫-৬টি মাঝারি সাইজের ( একটু সরু সরু লম্বা লম্বা করে কাটা )
পেঁয়াজ - ১০-১২টি ছোট ছোট সাইজের (খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচানো )
রসুন - ১১ - ১২ কোয়া ( খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচানো )
কাঁচালঙ্কা - ৫ -৬ টি অর্ধেক করে চেরা ,৫-৬ টি গোটা
ধনেপাতা - ১ কাপ মতো ( কুচানো )
পাঁচফোড়ন - ১-১.৫ চামচ
হলুদগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
পরিষ্কার করে ছাড়ানো চিংড়িমাছ ভালো করে বার বার জলে ধুয়ে নিয়ে ,নুন হলুদ মাখিয়ে রেখে দিলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে ফোরণে দিলাম পাঁচফোড়ন আর ৪-৫ টুকরো অর্ধেক করে চেরা কাঁচালঙ্ক। সঙ্গে দিলাম কুচানো
পেঁয়াজ,কুচানো রসুন । আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কাটা পেঁয়াজ,রসুন ভাজতে লাগলাম। পেঁয়াজ, রসুন ভাজার সুন্দর গন্ধ ! ভাজা বেশ নরম হয়ে যেতেই দিলাম হলুদ ,নুন ,চাহিদা মতো অল্প চিনি আর কুচানো ধনেপাতা। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ ভালো করে নাড়তে লাগলাম।
এইবার কড়াইতে দিলাম ,নুন - হলুদ মাখানো চিংড়িমাছ গুলো। আঁচ বাড়িয়ে কয়েকবার নেড়ে নিয়ে দিলাম জলে ধোয়া কেটে রাখা বেগুনের টুকরো গুলো। বেশি আঁচেই খানিক্ষন নাড়াচাড়া
করে নিয়ে ,আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে অল্প সময়ের জন্য রান্না হতে দিলাম।
একটু পরেই ঢাকা খুলে বেগুন নরম হয়ে গেছে দেখেই ,আঁচ বাড়িয়ে হালকা হাতে নাড়াচাড়া করে ,চিংড়ি আর বেগুন মজিয়ে নিলাম।রান্নার সুন্দর গন্ধে আমার রান্নাঘর ভরে উঠলো। আঁচ কমিয়ে রান্নার স্বাদ দেখে নিলাম। রান্না মজে গেছে মনে হতেই আঁচ বাড়িয়ে ১-২ বার নেড়ে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে রান্না ঢাকা দিয়ে রাখলাম।
দুপুরে খাবার টেবিলে সবাইকে বললাম ,আজ কিন্তু আমার ফেভারিট মেনু। বলতে না
বলতেই সব্বাই একসঙ্গেই বলে উঠলো আমারও ... আমারও .....। বললাম ঠিক আছে ঠিক আছে ,সব্বার ,আমাদের সবার ...........।তারপর খুব তৃপ্তি করে ,আনন্দ করে আর মজা করতে করতে আমরা আমাদের মধ্যাহ্ন ভোজনপর্ব শেষ করলাম ।
খাওয়া খেতে হবে তৃপ্তি করে ,আনন্দ করে। তাতে শরীর থাকবে সুস্থ আর ভালো। ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,আর থাকুন আনন্দে।
Comments