কাল সবাই আলোচনা করছিলো ,আজ দুপুরে মেনুতে শাকভাজা থাকলে ভালো হবে ,অনেকদিন শাকভাজা খাওয়া হয়নি মনে হচ্ছে ! সবার কথা শুনছিলাম আর ভাবছিলাম ,কথাটা কিন্তু একেবারেই ঠিক। আর এইসব আলোচনা শুনতে শুনতে আমারও শাকভাজা খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছিলো।লাল শাক আবার বাড়ির সব্বাইয়ের খুবই প্রিয়। চিন্তা ভাবনা না করেই , সবাইকে বলেই দিলাম ,কাল সবাইকে লাল শাক ভাজা খাওয়াবো।সবাই খুব খুশি।
ভাবছিলাম ,সবার যখন খুবই ইচ্ছে ,তখন একটু মুখরোচক করেই শাক ভাজবো। ছোলা দিয়ে লাল শাক ভাজা।গরম ভাতে খেতে দারুন লাগে। খুব টেস্টি টেস্টি। ভাবতে ভাবতে ,রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ হতেই অল্প কিছু ছোলা জলে ভিজিয়ে রাখলাম।
সকাল হলো। বাজার এলো। আর অবশ্যই লাল শাক তো এলোই। টাটকা ! দেখেই মনটা ভরেই গেলো। একটা কথা ভেবে দেখবেন ,টাটকা প্রতিটি শাক সবজির কিন্তু অপূর্ব একটা রূপ থাকে ,যা দেখে সত্যিই মন ভরে ওঠে। আমারও খুব ভালো লাগছিলো। দুপুরে অনেক রান্নাবান্না আছে ,ছোলা দিয়ে লাল শাক তো আছেই। তাই আর দেরি নয়। সকালের সব কাজকর্ম সেরে ,দুপুরের রান্নায় মন দিলাম। আর অবশ্যই প্রথম রান্নাটি .........ছোলা দিয়ে লাল শাক।
উপকরণ :-
লাল শাক - ২ আঁটি
ভেজা ছোলা - ১/২ কাপ থেকে ১ কাপ মতো ( যেমন ইচ্ছে )
কাঁচালঙ্কা - ৩-৪টি ( একটু করে চেরা )
গোটা শুকনো লঙ্কা - ২টি (অর্ধেক করে ফাটানো )
পাঁচফোড়ন - ১ থেকে ১.৫ চামচ
হলুদ - প্রয়োজনমতো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল -প্রয়োজনমতো
( গরম ভাতে ছোলা দিয়ে লাল শাক খাওয়ার সময় ,ইচ্ছে করলে সঙ্গে ১-২ চামচ কাসুন্দি বা একটু আচার রাখলে,কি অসাধারণ লাগে! .........সেটা কিন্তু কেবলমাত্র খাওয়ার পরেই বোঝা যায়। )
পদ্ধতি :-
প্রথমেই শাক ভালো করে বেছে নিয়ে কুচিয়ে নিলাম। শাকে মাটি ,বালি একটু থেকেই যায়। তাই কুচানো শাক জলে ভিজিয়ে রাখলাম।কিছুক্ষন বাদে ভেজানো জল ফেলে দিলাম।কিন্তু তারপরেও শাক বার বার ধুয়ে নিলাম। জল ঝরিয়ে নিলাম।
গ্যাসে কড়াই চাপলাম। প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হলে দিলাম ,ফাটানো শুকনো লঙ্কা ,পাঁচফোড়ন ,ভেজানো ছোলাগুলো। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ছোলা ভালো করে ভাজতে লাগলাম। দিলাম প্রয়োজনমতো নুন ,চিনি আর হলুদ। আবারো কয়েকবার নাড়াচাড়া করেই দিলাম জলে ধোয়া কুচানো শাক। বেশি
আঁচে কয়েকবার নাড়াচাড়া করে ,আঁচ কমিয়ে একটা হালকা ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিলাম।
কিছুক্ষন বাদে ঢাকা খুলে দেখি শাক থেকে বেশ খানিকটা জল বেরিয়েছে ,আর ছোলাগুলোও বেশ সেদ্ধ হয়ে এসেছে। জল শুকানোর জন্য ঢাকা খুলে আঁচ বাড়িয়ে দিলাম ,দিলাম কাটা কাঁচালঙ্কা গুলো। জল শুকিয়ে গেলে ,রান্নার স্বাদ দেখে নিয়ে ,শাক ভাজা ভাজা করে নিলাম। ছোলা আর শাক গায়ে গায়ে মাখো মাখো হয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম।
অন্যান্য রান্নাবান্নার সঙ্গে ছোলা দিয়ে লাল শাক ভাজাও চলে এলো দুপুরের খাবার টেবিলে। দুপুরের খাবার সময় হয়েই গেছে। সবাইকে খাবার টেবিলে ডেকে নিলাম। খাওয়া শুরু হলো গরম গরম ভাত আর ছোলা দিয়ে লাল শাক সঙ্গে করে। কতদিন বাদে ! ক .....তদিন বাদে ! ওঃ! দারুন! দারুন !
দারুন রান্না হয়েছে। সত্যি মন ভরে গেলো। সবার এতো আনন্দ ! আনন্দে আমার মনও ভরে উঠলো।
আনন্দে থাকুন ,খুব আনন্দে থাকুন। আনন্দে থাকলেই ,থাকবেন সুস্থ আর ভালো।
ความคิดเห็น