অফিসে বসে কাজ করছি | টিফিন আওয়ার্স | হঠাৎ দেখি আমার পাশের কলিগ তার টিফিন বক্সের ঢাকা খুলতেই এক সুন্দর গন্ধে জায়গাটা ভরে গেলো | গন্ধেই জিভে জল এসে গেলো |
খাওয়া শেষ হতেই বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম, "আজকে ছাতুর পরোটা এনেছিলিস ? গন্ধেই বুঝতে পারলাম !" বন্ধু বললো, "একেবারে ঠিক |" বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই মনে মনে ঠিক করে নিলাম রবিবারের সকালে বাড়ির সবার জন্য বানাবো আমিও ছাতুর পরোটা আর হিং দিয়ে আলু চচ্চড়ি.......দারুন লাগবে | অনেকদিন এই মেনুটা করাই হয়নি |
রবিবার এলো | জলখাবারের সব উপকরণ আগেই জোগাড় করেই রেখেছিলাম | সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেয়েই ছাতুর পরোটা তৈরিতে মন দিলাম |
উপকরণ :-
ময়দা - ২৫০ গ্রাম
আটা - ২৫০ গ্রাম
ছাতু - ২০০ গ্রাম
আদা বাটা - ২ চামচ
রসুন বাটা - ২ থেকে ৩ চামচ
কাঁচা লঙ্কা বাটা - ৩,৪ চামচ
হিং - এক চামচ
নূন - প্রয়োজন মতো
চিনি - প্রয়োজন মতো (অবশ্যই লাগবে স্বাদের জন্য)
সাদা তেল - প্রয়োজন মতো
পদ্ধতি :-
ময়দা আর আটা একটা পাত্রে নিলাম | দিলাম প্রয়োজন মতো নূন আর কয়েকদানা চিনি | ভালো করে নেড়ে নেড়ে মিশিয়ে নিলাম | দিলাম ময়েমের জন্য কিছু পরিমাণ সাদা তেল | আবারো সমস্ত উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিলাম | দিলাম প্রয়োজন মতো জল | ময়দা - আটা মেখে একটা মোলায়েম মন্ড তৈরী করে, ১/২ চামচ তেল মাখিয়ে, একটা ঢাকা দিয়ে রেখে দিলাম |
এবার ২০০ গ্রাম ছাতু একটা পাত্রে নিয়ে, তার মধ্যে দিলাম --- আদা বাটা, রসুন বাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা, নূন আর প্রয়োজন মতো চিনি আর এক চামচ হিং | সমস্ত উপকরণ খুব ভালো করে চেপে চেপে মেখে নিলাম | প্রয়োজন মতো একটু জল ছিটিয়েও নিলাম, আর খুব ভালো করে মেখে ছাতুর পুরটা তৈরী করে রাখলাম |
এবার ময়দা আটার মন্ড থেকে কয়েকটা লেচি তৈরী করে নিলাম | লেচি বাটির মতো গড়ে নিয়ে, তার মধ্যে দিলাম ছাতুর পুর | পুর ভরা ছাতুর বাটি আবার লেচির আকারে তৈরী করে নিলাম | এইভাবে সমস্ত লেচি গুলো কে পুর ভরা করে নিলাম |
এর পর পুর ভরা লেচি, চাকি-বেলনিতে বেলে গোল পরোটার আকারে গড়ে নিলাম | গ্যাসে তাওয়া (ফ্রাইং প্যান) চাপালাম | তাওয়া গরম হলে আঁচ কমিয়ে বাড়িয়ে প্রত্যেকটা পরোটা এপিঠ ওপিঠ করে ভালো করে সেঁকে নিলাম |
সেঁকা ঠিকঠাক হয়েছে মনে হলেই, ১ থেকে ১.৫ চামচ তেল তাওয়ার ওপরে পরোটার চারপাশে ছড়িয়ে দিলাম, আর পরোটা আবারো আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভালো করে ভেজে নিয়ে একটা পাত্রে তুলে রাখলাম |
জলখাবারের ছাতুর পরোটা তৈরি | ছাতুর পরোটার সুন্দর গন্ধে আমার রান্নাঘরও ভরে গেলো | হিং দিয়ে আলু চচ্চড়ি তো আগেই করে ফেলেছিলাম | সবার পাতে পাতে গেলো হিং দিয়ে আলু চচ্চড়ি, একটু টমেটো সস, একটু আচার আর..........ছাতুর পুরের পরোটা | খেতে যেন একটু বেশিই ভালো লাগলো! আর সবচেয়ে বড় কথা, এতো মুখরোচক আর এতো সুন্দর একটা জলখাবারের মেনুতে সবাই বেশ খুশি |
খুশি থাকবেন, ভালো থাকবেন, আনন্দে থাকবেন |
Comentarios