top of page

চাপিলা - মাছের - সর্ষে - ঝাল


মাছ -প্রিয় ,ভাত - প্রিয় বাঙালি আজ যুগ যুগ ধরে নানা রকম মাছের সঙ্গে নিজেদের পরিচয় ঘটিয়েছে। তারপর তাদের রান্নাঘরেই আবিষ্কার ঘটেছে সেই সব মাছের নতুন নতুন ,মুখরোচক - অসাধারণ সব পদের। সেই ট্রেডিশন মনে হয় আজ ও বাঙালির ঘরে ঘরে বয়েই চলেছে। তাদের রান্নাঘরে তৈরি হয়েই চলেছে নতুন নতুন টেস্টি টেস্টি সব অপূর্ব মেনুর । হয়েই চলেছে পুরাতন - নতুনের মেলবন্ধন। আর ঘটে চলা এই মেলবন্ধন বাঙালির যেন এক বিশাল গর্ব আর আনন্দ।



আজ রান্না করছি চাপিলা মাছের সর্ষে ঝাল। অনেক অনেক বাঙালির এই মাছ যেমন প্রিয় ,অনেকের হয়তো এই মাছের সঙ্গে তেমন পরিচয় ঘটে নি। কিন্তু সত্যি এটি দারুন মিষ্টি এক ছোট মাছ যা স্বাদে গুনে সত্যিই অসাধারণ। আসলে চাপিলা মাছ এক প্রকারের খয়রা মাছ।বাজারে এই মাছ চাপিলা - খয়রা নামেই পরিচিত। রুপোর মতো চকচকে খয়রা মাছ তো আমরা প্রায়ই রান্না করি। খয়রা মাছ যে ভাবে আমরা রান্না করি ,চাপিলা খয়রাও সেই একই ভাবে রান্না করবো।


গরম গরম ভাতে চাপিলা মাছের সর্ষে ঝাল যে কি অসাধারণ লাগে ,তা একবার খেলেই বোঝা যাবে । আর একবার খেলেই মনে হবে বার বার খাই ! বার বার খাই ! বার বার .................। সব চাইতে বড়ো কথা যারা সর্ষে মাছ পছন্দ করেন তাদের কাছে এই রান্না বড়োই লোভনীয় !


রান্নাঘরে এই সুন্দর মাছগুলো দেখেই মন আজ ভরে গেছে। এই মাছ আমি তো খুবই পছন্দ করি আর আমার বাড়ির সবাই ও এই মাছ খুব ভালোবাসে। তাই আজকের দুপুরে '' চাপিলা মাছের সর্ষে ঝাল ''....... খাওয়া দাওয়াটা মনে হয় জমিয়েই তুলবে। নাঃ! নাঃ ! আর চিন্তা ভাবনা না করে ,এবার রান্নায় মন দিই .........


উপকরণ :-


  • চাপিলা খয়রা - ৬০০ গ্রাম

  • গোটা সর্ষে - ৩-৪ চামচ ( জলে ভিজিয়ে রাখা )

  • হলুদ গুঁড়ো - ২-৩ চামচ

  • পাঁচফোড়ন - ১-২ চামচ

  • লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১-১.৫ চামচ

  • কাঁচালঙ্কা - ২-৩টি অর্ধেক করে চেরা আর ৩-৪ টি গোটা

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


চাপিলা খয়রা ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ,আবার খানিকটা নুন মাখিয়ে নাড়াচাড়া করে নিয়ে জলে ধুয়ে , নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখলাম।এবার জলে ভিজিয়ে রাখা সর্ষে ,জল ঝরিয়ে মিক্সিতে নিয়ে তার মধ্যে ২টি গোটা কাঁচালঙ্কা দিয়ে মিহি করে বেটে নিলাম।



গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে মাছ ভাজার মতো তেল দিলাম। তেল ভালোমতো গরম হতেই আঁচ কমিয়ে কড়াইতে কয়েকটা চাপিলা মাছ দিয়ে দিলাম। তারপর আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে মাছ কড়া করে ভেজে তুলে রাখলাম। এইভাবে সমস্ত মাছ ভেজে ফেললাম।


মাছ ভাজা হয়ে যেতেই কড়াই পরিষ্কার করে নিয়ে আবার গ্যাসে চাপলাম। দিলাম প্রয়োজনমতো তেল। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিলাম -পাঁচফোড়ন আর ২-৩টি অর্ধেক চেরা কাঁচালঙ্কা ,বাটা সর্ষে ,হলুদ ,নুন ,২-১ দানা চিনি ( রান্নায় সুন্দর স্বাদের জন্য ),১ চামচ মতো লাল লংকার গুঁড়ো ( রান্নার সুন্দর রঙের জন্য )।এবার কড়াইতে দিলাম ১/২ কাপ মতো জল। আঁচ বাড়িয়ে জল সমেত কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ নাড়তে লাগলাম। নাড়তে নাড়তে ,জল শুকিয়ে মশলা থেকে তেল বেরিয়ে এলেই ,রসার পরিমান ভেবে নিয়ে কড়াইতে জল দিলাম।



সর্ষের মিশ্রণ ফুটে উঠতেই ভাজা চাপিলা মাছগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম। বেশি আঁচে রসা কিছুক্ষন ফোটার পর আঁচ কমিয়ে রান্না মজতে দিলাম। দিলাম কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা। দেখে নিলাম রান্নার স্বাদ। বাহঃ স্বাদে তো দারুন হয়েছে ! আঁচ বাড়িয়ে কড়াইতে ১ চামচ মতো কাঁচাতেল ছড়িয়ে দিয়ে ,রসার পরিমান মাখো মাখো হয়ে আসতেই গ্যাস বন্ধ করলাম। সুন্দর গন্ধ ! রান্নার সুন্দর গন্ধ ! দুপুরের খাবার টেবিল জমবেই .......


সেই সময়টা এসেই গেলো। দুপুরে খাবার টেবিলে সবার উপস্থিতি। সবাই খুশি খুশি মুখেই খাওয়া শুরু করে দিলো।কিন্তু চাপিলা সর্ষে মুখে দিতেই সবার মুখই তৃপ্তি আর আনন্দে ভরে উঠলো। বাহঃ ! কি রান্না হয়েছে ! তাক তাক আর অসাধারণ ! দারুন লাগছে ! দারুন ! তবে একটা কথা ...... আমার জিভেরও আনন্দ তো আছেই ...উপরন্তু সঙ্গে আছে মনের অনেক অনেক আনন্দ .........


সবাই আনন্দে থাকুন ,সুস্থ থাকুন,ভালো থাকুন।



24 views0 comments

Comments


bottom of page