এই গরমের অসহ্য প্রদাহে , মানুষ খুঁজে ফেরে একটু স্বস্তি | মানসিক স্বস্তি ....শারীরিক স্বস্তি | আর এই স্বস্তি তারা খাওয়া - দাওয়া তেও খুঁজে চলে | খাওয়া একটু হালকা ....ঠান্ডা ঠান্ডা মতো হলে , পাওয়া যায় বড়োই শান্তি | এই সময়ে জলের আধিক্য বেশি পরিমানে থাকে , যে ফলমূল বা সবুজ সবজিতে , সেগুলো খেতে কিন্তু খুবই ভালো লাগে | ফলের ক্ষেত্রে যেমন তরমুজ , ফুটি ,শশা , তালশাঁস আরো আরো নানারকমের ফল .. ....সবজির ক্ষেত্রেও তেমনি লাউ , চালকুমড়া ,খেড়ো , ঝিঙে , স্কোয়াশ প্রভৃতি নানাধরণের সবজি |
আমার রান্নাঘরে আজ চালকুমড়া | রাঁধবো কটা চিংড়ি দিয়ে | চিংড়ি তো এক স্পেশাল স্বাদের মাছ | যাতে দিই না কেনো.......তাই স্বাদগুণে হয়ে উঠবে অপূর্ব | রান্নায় থাকবে কয়েকটা কাঁচালঙ্কা কাঁচালংকার - গন্ধে - ভরা - চালকুমড়ো - চিংড়ি ......( chalkumro - chingri - green chili ) খুব হালকা করে রাঁধবো | মশলার আধিক্য থাকবে না বললেই চলে , শুধুই সঙ্গে থাকবে কাঁচালঙ্কা | হালকা রান্না ...অথচ স্বাদে ভরা | গরম গরম ভাতের পাতে অল্প থাকলেই ,পাত জমে উঠবে | মনে হবেই আর একটু খাই ...আরো একটু খাই | খাবার পাতে অন্য কিছু না হলেও চলবে যদি থাকে কাঁচালংকার - গন্ধে - ভরা - চালকুমড়া - চিংড়ি ( chalkumro - chingri - greenchili )|
আগেই জানি মাছের থলিতে রয়েছে রুই মাছ আর চিংড়ি মাছ | থলি থেকে ঝটপট চিংড়ি মাছগুলো বার করে নিলাম | জলে বার বার ভালো করে ধুয়ে নিয়ে , চা চামচের ১/২ চামচ মতো হলুদ আর প্রয়োজনমতো নুন মাখিয়ে রাখলাম | এবার চালকুমড়োটা কেটে
ফেলি | চালকুমড়ো বড়ো বড়ো টুকরো করে কেটে খোসা ছাড়িয়ে জলে ভিজিয়ে দিলাম | জল থেকে এক একটা টুকরো তুলে জল ঝরিয়ে নিয়ে , মিহি করে কেটে নিয়ে একটা পাত্রে রাখলাম | ধীরে ধীরে সমস্ত চালকুমড়ার টুকরোগুলো কুচিয়ে ফেললাম |
এবার শুরু করবো রান্না | কাঁচালংকার গন্ধে ভরা চালকুমড়ো - চিংড়ি ( chalkumro - chingri ) | নিয়ে নিলাম কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা | প্রয়োজনমতো সর্ষের তেল প্রয়োজনমতো নুন ,আর অবশ্যই কিন্তু চিনি | চিনি না দিলে কিছুতেই রান্নাটা টেস্টি টেস্টি হবে না | না চাইলেও অল্প তো দিতেই হবে ,রান্নায় চমক আনতে |...... দিন না |...... একটু দিন |....... খারাপ লাগবে না কিন্তু | জোলো জোলো সবজি রান্নাতে একটু চিনি দিলেই স্বাদ অনেক অনেক বেড়ে যায় |
উপকরণ :-
চালকুমড়ো - ১টা কচি , ১ কিলো মতো ( খোসা ছাড়িয়ে জলে ধুয়ে নিয়ে ,কুচিয়ে রাখা )
চিংড়িমাছ - ৩০০ গ্রাম , কেটেকুটে পরিষ্কার করে নিয়ে ,নুন হলুদ মাখানো
কাঁচালঙ্কা - ১০-১২টা গোটা গোটা
হলুদ - চা চামচের ১/২ চামচ মতো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে রান্নার প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল ভালো মতো গরম হয়ে উঠলে , আঁচ কমিয়ে দিয়ে দিলাম , নুন - হলুদ মাখানো চিংড়িমাছগুলো আর ৪-৫টা একটু করে ফাটানো গোটা কাঁচালঙ্কা | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে অল্পক্ষন নাড়াচাড়া করে নিয়ে দিয়ে দিলাম কুচানো কচি চালকুমড়োটা | দিলাম প্রয়োজনমতো নুন আর অবশ্যই প্রয়োজনমতো চি .........নি |
আঁচ বাড়িয়ে সমস্ত কয়েকবার নেড়ে নিয়ে আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রান্না মজতে দিলাম | কচি চালকুমড়ো থেকে জল বেরিয়েই ,রান্না মজতে লাগলো | কিছুক্ষনের মধ্যেই সারা রান্নাঘরে খুব সুন্দর এক মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে লাগলো | অপূর্ব টেস্টি টেস্টি গন্ধ ! আহা ...আহা রান্নায় কি সুন্দর গন্ধ বেরিয়েছে ! মনে হচ্ছে রান্না ভালো হবেই হবে |
খানিক্ষন পরে ঢাকা খুলে মনে হলো ,রান্না মজে গিয়েছে | রান্নার স্বাদ চেখে নিলাম | বাঃ ...বাঃ.... কি সুন্দর টেস্ট হয়েছে | আবার কয়েকটা গোটা গোটা কাঁচালঙ্কা কড়াইতে রান্নার মধ্যে দিয়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে রান্না মাখো মাখো করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | চালকুমড়ো - চিংড়ি ( chalkumro - chingri- greenchili ) ঢেলে দিলাম একটা পাত্রে | দিলাম একটা ঢাকা | দুপুরে খাবার পাতের প্রথম শুরুটা জমে যাবে কিন্তু !!!
চিন্তাটা আমার সত্যিই হয়ে গেলো | রান্নার ঢাকা খুলতেই কাঁচালংকার সুন্দর গন্ধে জিভে জল এসে গেলো | চালকুমড়ো - চিংড়ি দিয়ে প্রথম পাতে গরম ভাত মেখে খেতে খেতে সবার মুখে তৃপ্তির হাসি | খাওয়াতে স্বস্তির আনন্দ | সবার মুখে একটাই কথা ....বাঃ !....বাঃ !! আর বাঃ !!!....খুব সুন্দর .......খুবই সুন্দর .............| খুব ভালো লাগছে...........|
ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন , ভালো ভালো খান আর আনন্দে ভরে থাকুন |
Comentários