top of page
Writer's pictureKaveri Nandi

বিনস - আলু - রুইয়ের - ঝোল


ওরে বাপরে বাপ্ ! কি গরম ! কি গরম ! রাতে ঘুমিয়ে শান্তি নেই ,আবার ঘুম থেকে উঠেও না আছে শান্তি ,না আছে স্বস্তি। এটা যে ভাদ্রমাস ! ভাদ্রমাসের গরম এইরকমই। দমবন্ধ করা গরম। ভীষণ গরম ,ভীষণ গরম। হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে ঝপাঝপ বৃষ্টি। একটু স্বস্তি। বৃষ্টি থামতেই আবার যেই কে সেই।


যাইহোক দেখি বাজারে কি কি এলো। রান্নাবান্না তো করতেই হবে। আর খেতেও হবে। উচ্ছে - বেগুন - পটল -মূলো সবই রয়েছে বাজারের থলিতে। ঠিক আছে একটা তেতো চচ্চড়ি রান্না করা যেতেই পারে ,ভালো লাগবে। আর রয়েছে কিছু বিনস ,আলু , পেঁয়াজ ,কাঁচালঙ্কা ...............। আমিষে কি রাঁধবো ? মাছের থলিতে দেখি একটা খুব টাটকা রুই। কেটে কুটে পরিষ্কার করা। ভাবলাম ,তাইতো বিনস আলু দিয়ে যদি রুই মাছের ঝোল রাঁধি ,তবে এই গরমের দুপুরে একটা খুব সুন্দর হালকা মেনু হবে।


মাছপ্রিয় বাঙালি তো রুই মাছের গুনাগুন সম্বন্ধে ভালোই জানে। আর সবুজে ভরপুর বিনস যে কত উপকারী সবজি ,সেটাও আমরা সবাই জানি। রুইমাছ তো দারুন মিষ্টি মাছ। তবে বিনস ও এক অসাধারণ মিষ্টি স্বাদে আর মিষ্টি গন্ধে ভরপুর। সেই কারণে বিনস - রুইয়ের হালকা ঝোল ,হালকা হলেও স্বাদগুণে হয় অসাধারণ। আর ভীষণই টেস্টি ..টেস্টি।


যাক দুপুরের মেনু ঠিক করে ফেলে বেশ হালকাই লাগছে। এখন শুধু রান্না সারার কাজ। জল খাবারের পাট চুকে গেলে ,রান্নাঘরে ঢুকে পড়লাম দুপুরের রান্না সারতে।


উপকরণ :-


  • রুইমাছ - ১টা গোটা ,১কিলো মতো ( গোল গোল চাকা চাকা করে কেটে কুটে পরিষ্কার করা )

  • বিনস - ১৫০-২০০ গ্রামের মতো ( ২দিকে বাদ দিয়ে গোটা গোটা করে কেটে রাখা )

  • আলু - ২-৩টি মাঝারি সাইজের ( প্রতিটি খোসা ছাড়িয়ে লম্বালম্বি ৬ টুকরো করে কাটা )

  • আদা - ছোট্ট ১ টুকরো ( ভালো করে থেঁতো করে রাখা )

  • কাঁচালঙ্কা - ৫-৬টি

  • পাঁচফোড়ণ - ১ চামচ

  • লাল শুকনোলঙ্কা - ২টো ফাটানো

  • হলুদ - ২-৩ চামচ

  • জিরেগুঁড়ো - ৩-৪ চামচ

  • লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১-১.৫ চামচ

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - খুব অল্প ( স্বাদের জন্য )

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


বাজারের থলি থেকে রুই মাছের টুকরোগুলো বার করেই ভালোকরে ধুয়ে নিয়ে নুন হলুদ মাখিয়েই রেখেছিলাম। এবার গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হলে রুইমাছ গুলো তেলে ছেড়ে দিয়ে আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে বেশ কড়া কড়া করে ভেজে তুলে রাখলাম। ঝোলের মাছ কিন্তু কড়া করে ভাজলে ,খেতে একটু বেশিই ভালো লাগে। যাহোক মাছ ভাজা হয়ে যেতেই কড়াই পরিষ্কার

করে আবার গ্যাসে চাপলাম।


গ্যাসে চাপিয়ে কড়াইতে দিলাম প্রয়োজনমতো তেল। তেল গরম হতেই আঁচ কমিয়ে দিলাম ২টি ফাটানো শুকনোলঙ্কা, পাঁচফোড়ন আর জলে ধুয়ে রাখা আলুর টুকরোগুলো। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভাজতে ভাজতে দিলাম থেঁতো করা আদা। ভালো করে নাড়তে লাগলাম। আলুগুলো হালকা রাঙা রাঙা হলেই দিলাম হলুদগুঁড়ো ,নুন আর চিনি। একটু নাড়াচাড়া করে দিলাম জলে ধোয়া বিনসের টুকরো গুলো। এবার আঁচ বাড়িয়ে কিছুক্ষন নাড়তে লাগলাম। বিনস আর আলু ভাজার সুন্দর গন্ধ বেরোতেই ,আঁচ কমিয়ে দিলাম জিরেগুঁড়ো আর লাল লঙ্কাগুঁড়ো।


আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সমস্ত উপকরণ ভালোকরে কষতে লাগলাম। মশলা কষার গন্ধে চারিদিক ভরে উঠলো। ঝোলের পরিমান ঠিক করে নিয়ে ,দিলাম রান্নায় জল। ঝোল ফুটতে শুরু করলে আঁচ কমিয়ে ,হালকা করে একটা ঢাকা দিয়ে রান্নাটা একটু মজতে দিলাম। কিছুক্ষন বাদে আলু হালকা নরম হতেই ,আঁচ বাড়িয়ে ঝোলে দিলাম ভাজা মাছের টুকরো

গুলো আর সুন্দর গন্ধের জন্য কয়েকটা গোটা কাঁচালঙ্কা। ঝোল টগবগ করে ফুটছে। কি সুন্দর ঝোলের এক মিষ্টি গন্ধ ! আহা - হা -হা মনে হয় বেশ ভালোই লাগবে। ভাবতে ভাবতে ঝোলের স্বাদ চেখে দেখে নিলাম।ভালো হয়েছে মনে হতেই ,মনে যেন এক দারুন আনন্দ। এবার বেশি আঁচে ঝোলের পরিমান ঠিক করে নিয়েই গ্যাস বন্ধ করে দিলাম। রান্নায় দিলাম এক ঢাকা।


ঝোলের মিষ্টি গন্ধ তো সবাই পেয়েই গেছে। গন্ধে গন্ধে সবাই সবকিছু বুঝেই ফেলেছে। কাউকে ডাকতে হয়নি। ঠিক টাইমে সবাই খাবার টেবিলে উপস্থিত। একজন বলেই ফেললো ........ওহো- হো- হো .....রান্নার গন্ধেই তো খিদে পেয়ে যাচ্ছে ....দাও দাও ..তাড়াতাড়ি আমাদের খেতে দাও । সবার আনন্দে ,দুপুরের খাবার টেবিল ভরে উঠলো। আর সবার আনন্দে আমার যে কি আনন্দ ...তা বোধহয় ঠিক বোঝাতে পারবো না .......।


সবাই আনন্দ করে মজা করে খাওয়া দাওয়া করুন। ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,আনন্দে থাকুন।

7 views0 comments

Comments


bottom of page