আজকাল একটা কথা খুব শোনা যায়--খবরের কাগজের কোনো এক পাতায় ,মাসিক পত্রিকার খাদ্য সংক্রান্ত লেখায় বা কোনো শারীরিক অসুখে ডাক্তারের কাছে গেলেই ---সব ধরণের খাবার তো খেতে হবেই ,সঙ্গে কিন্তু অবশ্যই প্রচুর পরিমানে সবুজ শাক সবজি। তবেই শরীরে ইমিউনিটি বাড়বে।
কথাটা একেবারে ঠিক । সবাইকে মানতেই হবে। আমরা জানি ,প্রকৃতির ন্যাচারাল গুনে সমৃদ্ধ শাক সবজি যদি আমরা খাই ,তবে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অনেক অনেক মাত্রায় বেড়ে যায়। গ্রামের
মানুষজন তো একেবারে টাটকা সবজিই খায়।সেখানে গেলেই দেখা যাবে প্রত্যেক বাড়ির পাশের জমিটাতে ফলে আছে ,উচ্ছে ,বেগুন ,পটল ,মুলো,ঢেঁড়শ ,লাউ ,কুমড়ো .......আরোও কত কিছু।যখন যেটা খেতে ইচ্ছে হয় ,তখন সেটাই রান্না করে। বাঃ ! বেশ মজা।
এই গ্রাম থেকে মানুষজন শহরেও নানা তরিতরকারি বিক্রি করতে আনে।সকালে বাজার গুলো সবুজে ভরে থাকে ,মনে হয় কোনটা ছেড়ে কোনটা নিই। আবার বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ভ্যান রিকশা গুলো যখন সবুজ শাক সবজি নিয়ে চলে যায় ,তখনও দেখতে বড়োই সুন্দর লাগে। মাঝে মাঝে যেন খুব আনন্দেই মনে হয় সবকিছু নিয়ে ফেলি।
আজ আমার রান্না ঘরে একেবারে কচি কচি সবুজ সবজি ঢেঁড়শ। পোস্ত দিয়ে রাঁধবো। সবার ভালো লাগবেই। পোস্ত এমন একটা রান্নার উপকরণ ,যা বোধহয় বেশির ভাগ বাঙালিরই অসম্ভব প্রিয়। পোস্ত দিয়ে যাই রাঁধি না কেন ,সেই রান্নাই হবে টেস্টি টেস্টি। জলখাবারের পাট যখন শেষ হয়েই গেছে ,তখন রান্নাতে আর দেরি না করাই ভালো।আমার এই রান্নাটা .........রাঁধতে যেমনি সহজ , খেতে তেমনি ভালো।
উপকরণ :-
ঢেঁড়শ - ৫০০ গ্রাম ( খুব কচি কচি ,জলে ধুয়ে নিয়ে দু দিক বাদ দিয়ে একটু করে চেরা )
পোস্ত - ৫০ গ্রাম ( জলে ভেজানো )
কাঁচালঙ্কা - ৫-৬ টি গোটা
গোটা শুকনোলঙ্কা - ২-৩টি একটু করে ফাটানো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
ভেজা পোস্ত আর ৫-৬টি গোটা লঙ্কা মিক্সিতে নিয়ে মিহি করে বেটে নিলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হলে ফাটানো শুকনোলঙ্কাগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম আর দিলাম জলে ধোয়া ,কেটে রাখা ঢেঁড়শ গুলো। বেশি আঁচে একটু নাড়াচাড়া করেই দিলাম নুন আর চিনি। আবার আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কড়াইতে ঢেঁড়শ গুলো নেড়ে নিয়ে ২ -১ বার হাত দিয়ে কড়াইতে জল ছিটিয়ে নিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রান্না একটু হতে দিলাম।
ঢেঁড়শ খুব তাড়াতাড়ি নরম হয়ে যায়। তাই ঢাকা খুলে দেখলাম ঢেঁড়শ নরম হয়েই গেছে। এবার বাটা পোস্ত একটু জলে নরম করে নিয়ে কড়াইতে দিয়ে দিলাম। বেশি আঁচে কয়েকবার নেড়েচেড়ে নিয়ে রান্নার স্বাদ দেখে নিলাম। ঢেঁড়শ - পোস্ত মাখো মাখো করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিলাম। সত্যিই কি সহজ রান্না ,আর খুব তাড়াতাড়ির রান্না। কিন্তু খেতে অতীব সুস্বাদু।
খাবার পাতে গরম গরম ভাত আর নরম নরম ঢেঁড়শ পোস্ত ,খুব জমে উঠলো। কারুর কথা বলার দিকে মন নেই।মন শুধু ....আনন্দের সঙ্গে একমনে খাওয়ার দিকে। ঢেঁড়শ পোস্ত দিয়ে ভাত খাওয়া শেষ হতেই সবাই বলে উঠলো ,অপূর্ব ! অপূর্ব !! বড়োই অপূর্ব খেলাম !!! আমিও খুশিতে ভরে গেলাম ।
এখন আপনারাও খুব খুব খুশিতে থাকুন ,ভালো থাকুন ,আ ............নন্দে থাকুন।
Comments