top of page
Writer's pictureKaveri Nandi

মুচমুচে - বেগুনী


ঝম - ঝম ....ঝম - ঝম ...বৃষ্টি পড়েই চলেছে ...পড়েই চলেছে। কাল মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে দেখি ,মুষলধারে বৃষ্টি পড়ার আওয়াজ। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সেই একই ধারায় বৃষ্টি পড়ার আওয়াজ। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ব্যালকনিতে গিয়ে দেখি রাস্তার দু - পাশ জলে থৈ থৈ করছে। চারিদিক টা কেমন যেন খুব পরিষ্কার পরিষ্কার। মনে হচ্ছে কেউ যেন নিজের হাতে প্রতিটি গাছের পাতা ,প্রতিটি বাড়ির ছাদ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে ফেলেছে। খুব ভালো লাগছে ! কিন্তু ....


কিন্তু যাদের প্রতিদিনের রুজি - রোজগারের জন্য বাইরে বেরোতে হয় ,তারা তো সব , সেই কখন .....রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েছে ...নিজেদের জন্য তো বটেই ,অবশ্যই আমাদের সবার জন্যও। রিকশাওয়ালা ,অটোওয়ালা,সবজিওয়ালা ,মাছওয়ালা কাক - ভেজা হয়ে নিজেদের কাজ করেই চলেছে।আর তাদের বাড়ানো সাহায্যের হাতের জন্যই আমরা যারা ছাদের

তলায় বাড়িতে ,তারা কেউ কেউ চিন্তা করেই ফেলেছি দুপুরের মেনু গরম গরম মাংসের ঝোল আর ভাত বা কেউ ভেবে ফেলেছি গরম গরম খিচুড়ি - পাঁপড় ভাজা - ডিমভাজা।


আমি কিন্তু দুপুরের মেনু একটু অন্যভাবে ভেবেছি। গরম গরম ভাত ,গরম গরম ডাল ,ছোট্ট একটা লেবুর টুকরো আর সঙ্গে মুচমুচে করে ভাজা বেগুনী।আর আমিষে মাছের একটা মেনু। মনে হচ্ছে সবার ভালো লাগবেই। আজ বাজারে না গেলেও চলে যাবে। বাজারের ঝুড়িতে রয়েছে ,৩-৪টি মাঝারি সাইজের বেগুন। আর ডাল ,বেসন ইত্যাদি ইত্যাদি তো রান্নাঘরে মজুতই রয়েছে। দরজায় মাছওয়ালার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছি কিছু রুই মাছের পোনা। ব্যাস তাহলে দুপুরের মেনু ঠিক হয়েই গেলো। আর আজকের দুপুরের সবচাইতে মুখরোচক মেনু ...গরম গরম বেগুনী।


সকালের সব কাজ শেষ করে দুপুরের রান্নাতে মন দিলাম। বেগুনী তৈরির জন্য প্রথমেই ২ কাপ মতো বেসন জলে ভিজিয়ে দিলাম। ভেজানো বেসনে দিলাম নুন ,প্রয়োজনমতো চিনি আর ২-৩টি কাঁচালঙ্কা মিহি করে বাটা। গরম ভাত ডালের সঙ্গে নুন ,ঝাল ,মিষ্টিতে ভরপুর মুখরোচক - বেগুনী। তবে না চাইলে ঝাল না দিতেই পারেন।


উপকরণ :-


  • বেগুন - ২-৩টি একটু ছোট সাইজের

  • বেসন - ২ কাপ মতো

  • কাঁচালঙ্কা - ২-৩টি ( মিহি করে বাটা )

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো

  • সর্ষের তেল - ভাজার জন্য


পদ্ধতি :-


২-৩ টি বেগুন জলে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ,বেগুনের বোঁটা বাদ দিয়ে লম্বালম্বি পাতলা পাতলা করে কয়েকটা টুকরো করে রাখলাম। এবার জলে ভেজানো বেসনের মিশ্রণ ঘন ঘন করে নিয়ে খুব ভালো

করে বেশ কিছুক্ষন ফেটিয়ে নিলাম। বেসনের মিশ্রনের নুন - ঝাল - মিষ্টির তাক চেখে নিয়ে ,ঘনত্ব ঠিক করে ফেললাম।


দুপুরে খাবার টেবিলে সবাই বসার ঠিক আগেই গরম গরম মুখরোচক -বেগুনি ভাজা শুরু করে দিলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে বেগুনী ভাজার মতো তেল কড়াইতে দিয়ে দিলাম। তেল ভালোমতো গরম হতেই

,আঁচ কমিয়ে এক একটি পাতলা বেগুনের টুকরো বেসনের মিশ্রনে ডুবিয়ে নিয়ে কড়াইতে দিলাম। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে বেগুনী মুচমুচে করে ভেজে তুলে নিলাম।


এইভাবে সমস্ত বেগুনী ভেজে নিয়ে সবাইকে ডেকে নিলাম খাবার টেবিলে। সবার পাতে পৌঁছে গেলো গরম ভাত ,গরম ডাল আর গরম গরম বেগুনী। সবাই যেন আনন্দে আত্মহারা ! আহা-হা কি দারুন আজকের মেনু! --সবার মুখে একই কথা । এই বৃষ্টি ভেজা দিনে বড়োই ভালো ! খুব ভালো। খুবই ভালো। নুন - ঝাল - মিষ্টির ঠিক ঠিক স্বাদে , মুচমুচে বেগুনী কিন্তু ভাতের পাতে অসাধারণ। সত্যি বলতে কি ,মাঝে মাঝে খাবার মেনুতে বৈচিত্র কিন্তু ,সবার বেশ ......শ ভালোই লাগে।


তবে বৃষ্টি ভেজা বিকালে চা - য়ের টেবিলে এই মুখরোচক গরম গরম বেগুনীর চাহিদা কিন্তু অনেকটাই বেশি। তাই বিকালের চায়ের টেবিল জমিয়ে ফেলুন গরম গরম চা ...আর ..গরম গরম বেগুনী দিয়ে।


সবাই আনন্দ করে ,মজা করে অবশ্যই উপভোগ করে খাওয়া দাওয়া করুন। থাকুন ভালো আর অনেক অনেক সুস্থ।

4 views0 comments

Comments


bottom of page