মাছ প্রিয় বাঙালির কাছে ভেটকি মাছও এক ------ বড়ই প্রিয় মাছ | ভেটকি মাছের খুব সুন্দর নিজস্ব স্বাদ গন্ধ আছে | সেই জন্যও অনেক স্পেশাল মেনু ভেটকি মাছ ছাড়া তৈরী হবেই না |
এখন Fast Food এর যুগ | ছোট বড় সবাই ছুটছে মুখরোচক আর খুব টেস্টি টেস্টি Fast Food এর দিকে | ভেটকি মাছের ফিশ ফ্রাই, ফিশ ফিঙ্গার, বিরিয়ানি, প্রভৃতি মেনু গুলোর সঙ্গে অপরিচিত ---- এমন নন-ভেজ মানুষের সংখ্যা আমাদের এই শহরাঞ্চলে খুবই কম |
বাজার দরেও ভেটকি মাছ বেশ এগিয়েই | তাই ভেটকি মাছের যেকোনো মেনুই আমাদের কাছে স্পেশাল মেনু |
গ্রীষ্মের এই প্রখর গরমে ধীরে ধীরে প্রবেশ ঘটছে বর্ষার | আজ সকাল থেকেই ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি | যদিও গুমোট আছে, তবুও অসহ্য গরমটা বেশ কম | তাই সবার ইচ্ছে মতোই আমার দুপুরের মেনুতে সবার জন্য রাঁধবো আলু আর ফুলকপি দিয়ে ভেটকি মাছের ঝোল | গরম গরম ভাতে অসাধারণ | মুখের স্বাদ একেবারে অন্য স্বাদে ভরে যায় |
সকালের বাজারে ভেটকি মাছ, ফুলকপি, আলু, টমেটো, কাঁচা লঙ্কা সবই এসে গেছে | তাই জল খাবার খেয়েই দুপুরের মেনু --- আলু - কপি - ভেটকি মাছের ঝোল রান্না শুরু করলাম |
উপকরণ :-
ভেটকি মাছ - ৭০০ গ্রাম ( ৭ টুকরো করা)
ফুলকপি - ২টি মাঝারি সাইজের (বড় বড় টুকরো টুকরো করে কাটা)
আলু - ৩,৪টি একটু বড় সাইজের (খোসা ছাড়িয়ে আড়াআড়ি করে কেটে নিয়ে লম্বা লম্বি ৬ টুকরো করা)
টমেটো - ১টি মাঝারি সাইজের (লোম্বা লম্বা করে কাটা)
আদা বাটা - ২ চামচ
কাঁচা লঙ্কা বাটা - ৩ চামচ
এলাচ - ৪,৫টি
গোটা জিরে - ১/২ চামচ
গোটা শুকনো লঙ্কা - ২টি
তেজ পাতা - ২,৩টি
হলুদ - ২,৩ চামচ
জিরে গুঁড়ো - ৪,৫ চামচ (প্রয়োজন মতো)
লঙ্কা গুঁড়ো - ২,৩ চামচ (প্রয়োজন মতো)
নূন - প্রয়োজন মতো
চিনি - কয়েকদানা (স্বাদ ও রঙের জন্য)
সর্ষের তেল - প্রয়োজন মতো
পদ্ধতি :-
ভেটকি মাছ ধুয়ে নূন, হলুদ মাখিয়ে রাখলাম | ফুলকপি, আলু, টমেটো সব ভালো করে ধুয়ে তুলে রাখলাম | আদা বাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা তৈরী করে নিলাম |
গ্যাসে কড়াই গরম করে তেল দিলাম | ভেটকি মাছ গুলো কড়া করে ভেজে তুলে নিলাম | ওই তেলেই প্রয়োজন মতো তেল দিয়ে কপির টুকরো গুলো সামান্য রাঙা করে ভেজে তুলে রাখলাম |
কড়াই গরম করে ২,৩ চামচ বা প্রয়োজন মতো তেল দিলাম | তেল গরম হলে, দিলাম -- এলাচ, গোটা জিরে, শুকনো লঙ্কা, তেজ পাতা আর লম্বা লম্বা করে কাটা আলু গুলো |
আলু খুব ভালো করে ভাজতে লাগলাম | আলু রাঙা রাঙা হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে দিলাম, দিলাম আদা বাটা, কাঁচা লঙ্কা বাটা |
এবার আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কয়েকবার নেড়ে নিয়ে, দিলাম হলুদ, নূন, চিনি, টমেটো কুচি, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো আর ভাজা কপির টুকরো গুলো | সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কষতে লাগলাম |
মশলার ভাজা গন্ধ বেরোলেই, ঝোলের পরিমাণ মতো জল দিলাম | ঝোল ফুটে উঠলেই আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রানা হতে দিলাম | আলু - কপি সেদ্ধ হয়ে গেলে আর ঝোলের স্বাদও ঠিক-ঠিক মনে হলে, আঁচ বাড়িয়ে কড়া করে ভাজা ভেটকি মাছ গুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম |
টগবগ করে ফুটিয়ে ঝোলের পরিমাণ ঠিক করে নিলাম | গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | আহা....হা.....ঝোলের কি অপূর্ব গন্ধ !!! রান্না ঢাকা দিয়ে রেখে দিলাম |
দুপুরের মেনু সবার বড়ই মনঃপুত হলো | সবাই তৃপ্তি সহকারে খুশি খুশি মনে খাওয়া শেষ করলাম | মন ভোরে গেলো আনন্দে | আপনারাও আনন্দে থাকুন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন |
Comments